উদ্ধার হওয়া বরফ। নিজস্ব চিত্র
শবদেহ এবং মাছ-মাংস সংরক্ষণে ব্যবহৃত বরফ দিয়ে শরবত তৈরি হচ্ছিল কিড স্ট্রিটে। রাজ্যের বিধায়ক আবাসে (এমএলএ হস্টেল) ঢোকার গেটের ধারেই। এক দিকে শরবত ও জল বিক্রির দোকান। অন্য দিকে আখের রস। শনিবার দুপুরে পুরসভার ফুড সেফটি অফিসারেরা আচমকাই হানা দেন দোকান দু’টিতে। শিল্পে ব্যবহৃত কয়েক টন বরফ উদ্ধার হয় সেখান থেকে। রাস্তায় ফেলে তা নষ্ট করেন পুর কর্মীরা। হুঁশিয়ারি দিয়ে যান, ভবিষ্যতে ওই বরফ ক্রেতাকে খাওয়ালে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে। বিক্রেতারা কবুল করেন, এত দিন বিধায়কেরাও ওই বরফ মেশানো শরবত খেতেন।
শহর জুড়ে খাবারে ভেজাল বন্ধ করতে জোর অভিযান শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। শুক্রবারই ধর্মতলা, ডেকার্স লেন, নিউ মার্কেট এলাকার গোটা কুড়ি দোকানের রান্নাঘরে হানা দিয়ে একশোরও বেশি রান্না করা পদের নমুনা পরীক্ষার জন্য পুরসভার ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য ও ভেজাল প্রতিরোধ) অতীন ঘোষ জানান, রান্নাঘর খুবই অপরিষ্কার ও অস্বাস্থ্যকর থাকায় ২০টি রেস্তোরাঁকে সতর্ক করা হয়েছে। আরও জানান, ধর্মতলা এলাকার খাবারের দোকানে শিল্পে ব্যবহৃত বরফের ব্যবহার কমলেও শহরের অন্যত্র তা বন্ধে সজাগ হতে হবে জনগণকে।
প্রশ্ন উঠছে, কিড স্ট্রিটের বিধায়ক আবাস এলাকায় কড়া পুলিশি নজরদারি সত্ত্বেও কী ভাবে দিনের পর দিন শিল্পে ব্যবহৃত বরফ মিশিয়ে শরবত বিক্রি হয়? পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শহর জুড়ে যে এত ভেজাল খাবার বিক্রি হচ্ছে, পুলিশ সচেতন থাকলে অনেক আগেই এ সব বন্ধ করা যেত।’’ এ দিন পুলিশের সামনেই ওই দু’টি দোকানে অভিযান চালিয়ে শিল্পে ব্যবহৃত বরফ বাজেয়াপ্ত করেন পুর অফিসারেরা।
ভেজাল খাবারের বিরুদ্ধে সচেতন করতে প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিকে উদ্যোগী হতে হবে বলে মনে করছেন পুর প্রশাসকেরা। ভেজাল খাবার এবং শিল্পে ব্যবহৃত বরফ খাবারে দিলে পুরসভাকে জানাতে বলা হয়েছে। অতীনবাবু জানান, খাবারের কিউব বরফ এবং শিল্পে ব্যবহৃত বরফের চাঙড় একই রঙের হওয়ায় মানুষের বুঝতে অসুবিধা হয়। এ বার তাই শিল্পে ব্যবহৃত বরফ রং-বেরঙের করতে উদ্যোগী হচ্ছে পুরসভা। আগামী মঙ্গলবার, ৩০ মে শহরের বরফ তৈরির কারখানাগুলিতে পরিদর্শনে যাবে পুরসভার একটি দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy