Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাতে জখম যুবক আধ ঘণ্টা পড়ে জিটি রোডে

পুলিশ সূত্রের খবর, বেলুড়ের ঠাকুর দাস ঘোষ স্ট্রিটের বাসিন্দা বিজয়কুমার শর্মা (২২) নামে ওই যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত বিজয়কুমার শর্মাকে টোটোয় তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

আহত বিজয়কুমার শর্মাকে টোটোয় তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৬
Share: Save:

রাতের জিটি রোডে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছেন এক যুবক। সারা মুখ রক্তে ভর্তি। কিছুটা দূরে মোটরবাইকটি পড়ে থাকলেও নেই কোনও হেলমেট। যানবাহন, পথচারী থেকে টোটো চালকেরা দেখলেও, সকলেই তাঁকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন। কয়েক জন আবার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বটুকু পালনের কথা ভাবেননি। বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে এমনই অমানবিক মুখ দেখল বালি।

যদিও পরে রাস্তার মাঝে ওই ভাবে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন এক টোটো চালক। টোটো থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে ওই যুবককে তুলে নিয়ে পৌঁছন কয়েক মিটার দূরের হাসপাতালে। ওই চালককে দেখে এগিয়ে আসেন আরও কয়েক জন টোটো চালক এবং এক ট্র্যাফিক পুলিশও। তাঁদের কাছে খবর পেয়ে পৌঁছয় বালি থানার পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, বেলুড়ের ঠাকুর দাস ঘোষ স্ট্রিটের বাসিন্দা বিজয়কুমার শর্মা (২২) নামে ওই যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর বাবা সুরেন্দ্রনাথ শর্মা বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে সন্ধ্যায় বেরিয়েছিল। কোথায় যাচ্ছিল তা ঠিক জানি না। পরে পুলিশের কাছে দুর্ঘটনার খবর পাই।’’ সঞ্জীব মান্না নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকে জানিয়েছেন, রাত সওয়া দশটা নাগাদ বেলুড় বাজারের দিক থেকে তীব্র গতিতে একটি লরি বালির দিকে যাচ্ছিল। তা দেখে উল্টো দিক থেকে আসা একটি টোটো আচমকাই মুখ ঘুরিয়ে নেয়। আর তাতেই একেবারে পিছনে থাকা ওই মোটরবাইক আরোহী সজোরে টোটোতে ধাক্কা মেরে ছিটকে পড়ে যান। নিয়মানুযায়ী রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ জিটি রোডে লরির জন্য ‘নো এন্ট্রি’ উঠে যায়। অন্য গাড়ি ও পথচারীর সংখ্যাও খুব বেশি থাকে না।

উদ্ধারকারী টোটো চালক অজয়কুমার যাদব জানান, তিনি যাত্রী নিয়ে বালির দিকে যাচ্ছিলেন। আচমকাই দেখেন হেমপাল লেন স্টপেজের কাছে এক যুবক পড়ে রয়েছেন। তাঁকে ঘিরে ধরে কয়েক জন জল ঢালছেন। অজয় বলেন, ‘‘শুনলাম রক্তাক্ত অবস্থায় অনেকক্ষণ ধরে ওই যুবক পড়ে রয়েছেন। কিন্তু অবাক লাগলো মেরেকেটে দুশো মিটার দূরের হাসপাতালে কেউ নিয়ে যাননি।’’

তিনি জানান, এর পরে যাত্রীদের নেমে যেতে অনুরোধ করে নিজের টোটোতেই ওই যুবককে তুলে নেন তিনি। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাটি দেখে দাঁড়িয়ে যান বালি ট্র্যাফিক গার্ডের এক অফিসার এবং আরও কয়েক জন টোটো চালক। সকলে মিলে ওই যুবককে সামনেই শ্রমজীবী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা শুরু করা হলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় বিজয়কে হাওড়া সিটি পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

GT Road Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE