Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মমতার হুঁশিয়ারি উড়িয়ে ফের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ নিউ টাউনে

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্ক করে দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার ফের হিংসার ঘটনা নিউ টাউনে। অভিযোগ, বুধবার নির্বাচিত বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে মমতা দলের যে দুই নেতা-নেত্রীকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, এ দিনের ঘটনাটি ঘটেছে তাঁদেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে।

আহত মনোজ । নিজস্ব চিত্র

আহত মনোজ । নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০১:৩৯
Share: Save:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্ক করে দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বৃহস্পতিবার ফের হিংসার ঘটনা নিউ টাউনে। অভিযোগ, বুধবার নির্বাচিত বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে মমতা দলের যে দুই নেতা-নেত্রীকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, এ দিনের ঘটনাটি ঘটেছে তাঁদেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে।

সূত্রের খবর, নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত এবং বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘো‌ষদস্তিদারের নিত্যদিনের বিবাদ যে নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়ছে, তা বিলক্ষণ জানেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণে বৈঠকে দু’জনকে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বন্ধ করার নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু বার্তাই সার, কাজের কাজ হয়নি।

অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে তৃণমূলেরই এক কর্মীর বাড়ি লক্ষ করে গুলি চলে। সে কথা মুখ্যমন্ত্রীর কানে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। তার পরে এ দিন ২ নম্বর জ্যাংরা হাতিয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্বাস্তু কলোনিতে সাংসদ কাকলির অনুগামী মনোজ বিশ্বাস এবং স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব মজুমদারকে সব্যসাচীর অনুগামীরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও গোষ্ঠীকোন্দলের প্রশ্ন এড়িয়ে কাকলি এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের একটাই দল, সেটা তৃণমূল। এখানে গোষ্ঠী সংঘর্ষের কোনও জায়গা নেই। তৃণমূল আক্রান্ত হচ্ছে এটুকু বলতে পারি।’’ কিন্তু কারা মারছে তৃণমূল কর্মীদের? সাংসদের কথায়, ‘‘সেটা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’

আক্রান্তেরা জানান, তাঁরা হিডকোর একটি পাম্প হাউসে অস্থায়ী ভিত্তিতে পাম্প অপারেটরের কাজ করেন। এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ কয়েক জন পাম্প হাউসে ঢুকে তাঁদের মারধর করেন বলে অভিযোগ। মনোজদের দাবি, দুষ্কৃতীরা তাঁদের হুমকি দেয়, কাজ ছেড়ে চলে যেতে হবে। এ দিন দুপুরে নিউ টাউন থানায় রতন তালুকদার, দীপু হালদার এবং বাবলু শিকদার বলে তিন যুবকের বিরুদ্ধে তাঁরা মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন।

তাঁরা কাকলির ঘনিষ্ঠ, সে কথা স্বীকার করে নিয়ে মনোজ বলেন, ‘‘আমরা এলাকার পুরনো তৃণমূল কর্মী। তা সত্ত্বেও ভোটে আমাদের কাজ করতে দেওয়া হয়নি। এ বার আমাদের চাকরিটুকুও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’ তাঁর দাবি, হামলাকারীরা সকলেই বিধায়ক সব্যসাচীর অনুগামী। মনোজেরা যাঁর ঘনিষ্ঠ, সেই আফতাবউদ্দিনও এ দিন বলেন, ‘‘ওই এলাকায় বিধায়কের লোকজনের ভয়ে কেউ সত্যি কথা বলতে পারছে না।’’

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সব্যসাচী-ঘনিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দা সুমন হালদার জানান, এই বিবাদের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পাম্প হাউসে কারা কাজ করবে, তা নিয়ে পাড়ার ছেলেদের মধ্যেই বেশ কিছু দিন ধরেই গোলমাল চলছে। সুমনের কথায়, ‘‘এখন যারা অভিযোগ করছে, ভোটের আগে তারাই আমাদের মারধর করে পাম্প হাউসের কাজ থেকে তাড়ায়।’’ এ দিন আক্রান্ত অন্য যুবক জয়দেববাবুর দাবি, তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন।

সাংসদ না বললেও তাঁর অনুগামীরা পরপর হিংসার ঘটনায় অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের অনুগামীদের বিরুদ্ধেই। অভিযোগ অস্বীকার করে সব্যসাচী দত্তের ঘনিষ্ঠ ২ নম্বর জ্যাংরা হাতিয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিবু গায়েনের দাবি, ‘‘পাড়ার ঝামেলাকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চেহারা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’ বস্তুত তাঁদের দাবি, বিধায়কের ভাবমূর্তিতে কালি লাগানোর চেষ্টা চলছে।

বিধায়কের ফোন রাত পর্যন্ত বন্ধ ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Firin New-Town
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE