ছবি: সংগৃহীত।
সরাসরি কলকাতা টার্গেট নয়। টার্গেট কলকাতায় আসা ব্রিটিশ, রুশ এবং মার্কিন পর্যটকরা। সেই লক্ষ্যেই ইসলামিক স্টেট (আইএস) বেছে নিয়েছিল কলকাতার মাদার হাউসকে। কষেছিল নাশকতার ছক। এমনই দাবি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র পেশ করা চার্জশিটে।
এনআইএ-র পেশ করা চার্জশিট অনুযায়ী, কয়েক মাস আগে ধৃত সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি মহম্মদ মসিউদ্দিন ওরফে আবু মুসা (২৫)-কে জেরা করে উঠে এসেছে এই তথ্য। মুসা নিজেও এই ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল। ছক হয়েছিল কলকাতায় মিশনারি অফ চ্যারিটির হেডকোয়ার্টারে ব্রিটিশ, মার্কিন এবং রুশ পর্যটকদের উপর বড়সড় নাশকতার। চার্জশিটের বক্তব্য অনুযায়ী, সিরিয়া ও লিবিয়ায় আইএস ঘাঁটিতে ওই তিন দেশের যে সামরিক হামলা চলছে, তার অন্যতম বদলা হিসেবেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছিল।
আরও খবর: ওপারের হুকুমেই ৩ খুনের ছক ছিল মুসার
গত ১ জুলাই বাংলাদেশের ঢাকায়, অভিজাত গুলশন এলাকায়, যে রক্তাক্ত জঙ্গি নাশকতা চলেছিল তার সঙ্গেও মুসার যোগ ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার তিন দিন পর, ৪ জুলাই বর্ধমান স্টেশন থেকে ধরা পড়ে সে। গুলশন সন্ত্রাসে যোগসূত্র মেলায় মুসাকে জেরা করেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারাও। এমনকী আমেরিকার ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর আধিকারিকরাও তাকে পাঁচ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে যান কলকাতায় এসে। মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে খবর, সিরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া অন্যতম আইএস চাঁই সুলতান আবদুল কাদির আরমার-ই ছিল মুসার নেতা। এই আরমার বিশ্ব জুড়ে মার্কিন নাগরিক এবং মার্কিন সম্পত্তির উপর হামলার ছক নিয়েছিল।
বছর চল্লিশের আরমারের বাড়ি কর্নাটকের ভাটকলে। দীর্ঘ দিন ছিল পাকিস্তানে। ২০১৪ সালে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন ভেঙে আইএস পন্থী আনসার আল-তৌহিদ সংগঠন তৈরির ক্ষেত্রেও তার বড় ভূমিকা ছিল। মার্কিন তরুণদের আইএস-এ টেনে আনার বড় দায়িত্ব পালন করে সে। এই আরমার সম্পর্কে তথ্য পেতেই মুসাকে জেরা করতে আসে এফবিআই। পরে সেই জিজ্ঞাসাবাদের রিপোর্ট পাঠায় এনআইে-কেও।
মুসার বাড়ি বীরভূমের লাভপুরে হলেও, দীর্ঘ দিন স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে থাকত তামিলনাড়ুতে। খাগরাগড় বিস্ফোরণের পর ধৃতদের জেরা করতে গিয়েই এনআইএ-র হাতে আসে মুসার নাম। শুরু হয় সন্ধান। শেষ পর্যন্ত ছ’বছর পর এ রাজ্যে ঢুকেই গত জুলাই মাসে ধরা পড়ে যায় মুসা। বর্ধমান স্টেশনে বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার থেকে মুসাকে যৌথ অপারেশন চালিয়ে গ্রেফতার করে এনআইএ এবং সিআইডি।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সেলফোন অ্যাপের মাধ্যমে নাশকতার ছক সাজাত মুসা। এর মাধ্যমেই যোগাযোগ রাখত আইএস-এর সঙ্গে। যোগাযোগ রাখত বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) সঙ্গেও। মুসা-র সঙ্গে পাওয়া মোবাইল পরীক্ষা করে গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন- সিরিয়া, ইরাক এবং বাংলাদেশ এই তিন দেশের সন্ত্রাসবাদী শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy