ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন সুরজিৎবাবু ও মৌসুমীদেবী। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
ক্লাব দখলকে ঘিরে গুলি ও একটি বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠল। শনিবার রাতে, কসবার রুবি পার্কের (পূর্ব) ঘটনা। যাদের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, সেই বিধান সরকার ও মুন্না পাণ্ডেকে রাতে দিঘা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, তৃণমূল মন্ত্রী জাভেদ খান ও তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের মধ্যে গোলমালে ওই এলাকা আগেও অশান্ত হয়েছে। গত এপ্রিলে কসবার খালপাড়ায় মোটর ভেহিক্যাল্সের কাজের দখল নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। অক্টোবরে অভিযোগ ওঠে বোমাবাজির। স্থানীয়দের দাবি, শনিবার রাতে যোগেন্দ্র গার্ডেনের কাছে ক্লাব দখল ঘিরে ঝামেলাও তারই বহিঃপ্রকাশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রাতে সা়ড়ে ১২টা নাগাদ রাজডাঙা মেন রোডের ব্যবসায়ী সুরজিৎ রায়ের বাড়ির সামনে ৪-৫টি মোটরবাইক এসে দাঁড়ায়। সিঁড়ি বেয়ে দু’জন উপরে উঠতেই চিৎকার জুড়ে দেয় সুরজিৎবাবুদের পোষা কুকুর। চিৎকার শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন সুরজিৎবাবুর মা শীলা রায়। তিনি বলেন, ‘‘সিঁড়ির দিকে যেতেই বিধান সরকার নামে এক দুষ্কৃতী আমাকে ঘিরে ধরে। আমি চিৎকার করায় কুকুরটি বিধানকে আক্রমণ করে। বিধান সরে যেতেই আমি ঘরে ঢুকে পড়ি। সেই মুহূর্তে বিধান আমাকে লক্ষ্য করে দু’টি গুলি ছুড়লেও কুকুরটি তাকে আক্রমণ করায় আমি বেঁচে যাই।’’
শীলাদেবীর পাশের ঘরেই দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ছিলেন সুরজিৎবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘গুলির আওয়াজের পরেই শুনি, মুন্না পাণ্ডে নামে স্থানীয় দুষ্কৃতী ঘরের দরজায় পেট্রোল ঢালতে বলছে।’’ সুরজিৎবাবুর স্ত্রী মৌসুমীদেবী বলেন, ‘‘দরজা তখন জ্বলছে। ঘর ভরে গিয়েছে ধোঁয়ায়। পিছনের দরজা ঠেলে কোনও ভাবে বেরোই।’’
রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ এসে দু’টি গুলি ও পুড়ে যাওয়া জিনিস উদ্ধার করে। পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে গোটা প্রক্রিয়াটি চালিয়েছে।
সুরজিৎবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমরা কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের দীর্ঘ দিনের সমর্থক। কালীপুজোর পর থেকেই জাভেদ খানের অনুগামী মুন্না পাণ্ডে একটি ক্লাব দখলের চেষ্টা করছে। তার সামনে চার কাঠা ফাঁকা জমিতে প্রোমোটিংয়ের চেষ্টাও করছে। তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয় ১৭ ডিসেম্বর ক্লাবের সম্পাদক-সহ আমাকে ও আমার ভাইকে মারধর করে মুন্না।’’
সুশান্তবাবুর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘মুন্না ও সুরজিৎ জাভেদ খানের ঘনিষ্ঠ। মুন্নার সঙ্গে ঝামেলা হওয়ার পরে সুরজিৎ আমার কাছে এসেছিল। ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে ওর সঙ্গে পরিচয়।’’ যদিও এই মন্তব্য প্রসঙ্গে সুরজিৎবাবু বলেন, ‘‘সুশান্তদা কসবা নিউ মার্কেটে আমাদের একটি দোকানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমি প্রায়ই সুশান্তদা-র গাড়িও চালাই। উনি ঠিক বলছেন না।’’
সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক জাভেদ খান। তিনি বলেন, ‘‘মুন্না পাণ্ডে, বিধান সরকারের নাম শুনেছি মাত্র। ওদের চিনি না। যারা বলছে সবাই আমার লোক, তারা মিথ্যা বলছে। আমি চাইব পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy