চলছে রাস্তা খুঁড়ে নিকাশি লাইন পাতার কাজ। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
কোথায়, কখন, কারা মাটির নীচে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করছে, অনেক সময়েই কলকাতা পুরসভা তা নিয়ে অন্ধকারে থাকে। শুধু বাইরের সংস্থাই নয়, পুরসভার বিভিন্ন দফতরও পুর পরিষেবা সংক্রান্ত নানা কাজে রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি করে। কিন্তু সেই তথ্য সব সময়ে জানতে পারেন না পুরকর্তারা। এ বার সেই ‘বিভ্রান্তি’ দূর করতেই উঠেপড়ে লেগেছে পুর প্রশাসন।
বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে তথ্যের লেনদেন যাতে ঠিক ভাবে হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে পুরসভা। সেই কারণে কো-অর্ডিনেশন বৈঠকের উপরে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুর আধিকারিকদের একাংশ। প্রসঙ্গত যাদবপুর, বাঘা যতীন, নোনাডাঙা-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আন্ত্রিক ছড়িয়ে পড়ার পরে পুর ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ আশঙ্কা করেছিলেন, পুরসভারই কোনও পাইপলাইনে ছিদ্র দেখা দিয়েছে। আর খোঁড়াখুঁড়ির ফলেই সেই ছিদ্র হয়েছে।
কলকাতার বিভিন্ন ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনে প্রায়ই ছিদ্র ধরা পড়ে। সেগুলি সঙ্গে সঙ্গে মেরামতিও করে ফেলে পুরসভা। এ বারও তেমনই কোনও ছিদ্রের মাধ্যমে জলে দূষণ ছড়িয়েছে বলে আশঙ্কা করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। কয়েক দিন আগে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষও সে দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, কলকাতা অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি প্রাচীন শহর। মাটির নীচ দিয়ে পানীয় জল, ও নিকাশি ছাড়াও অন্য অনেক লাইন গিয়েছে। মাটি খুঁড়ে কাজ করার সময়ে বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা অনেক সময়ে নিকাশি বা পানীয় জলের পাইপে ফাটল ধরিয়ে ফেলেন। যা থেকে ছড়াতে পারে সংক্রমণ।
কিন্তু পুর ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ জানাচ্ছেন, শুধু বেসরকারি সংস্থাই নয়, পুরসভার বিভিন্ন দফতরও যখন মাটি খুঁড়ে কাজ করবে, তখন সেই তথ্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। না হলে কোনও দফতর হয়তো মাটি খুঁড়ে কাজ করে আবার মাটি চাপা দিয়ে দিল, অথচ জল সরবরাহ বা নিকাশি দফতর তা জানতে পারল না। ফলে সেখানে যদি কোনও সমস্যা হয়ে থাকে, তা হলে তা চিহ্নিতকরণে সমস্যা হবে। তা আটকাতেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে তথ্য আদানপ্রদানে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জল সরবরাহ দফতরের এক পদস্থ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘পুরসভার বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় বৈঠক হয়ই। কিন্তু ভবিষ্যতে কোনও রকম সমস্যা এড়াতে এ বার সেই বৈঠকের উপরেই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন দফতরের মধ্যে তথ্যের আদানপ্রদানে গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা।’’
প্রসঙ্গত, শুধু কেন্দ্রীয় ভাবে নয়, বরো স্তরেও যাতে ওই বৈঠক নিয়মিত ভাবে হয়, তার উপরেও এ বার জোর দিচ্ছে পুর প্রশাসন। এমনিতে বেসরকারি কোনও সংস্থা যদি এলাকায় মাটি খুঁড়ে কাজ করতে চায়, তা হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারকে আগে থেকে তা জানাতে হয়। যাতে কোথায় কাজ করা হচ্ছে, সে সম্পর্কে অবগত থাকতে পারে পুরসভা। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বরো স্তরেও তথ্যের লেনদেনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy