ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিবারণে পুরসভার প্রচারাভিযান তো আছেই। এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে যক্ষ্মা রোগও। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কলকাতায় বছরে কমপক্ষে ১০ হাজার জন আক্রান্ত হচ্ছেন যক্ষ্মায়। এই রোগের জীবাণু এতই ছোঁয়াচে যে সামান্য হাঁচি, কাশির মাধ্যমে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে অন্যের শরীরে। তাই যক্ষ্মা প্রতিরোধে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। রিভাইজ্ড ন্যাশনাল টিবি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (আরএনটিসিপি)-এর রাজ্য শাখা এ ব্যাপারে কলকাতা পুর-প্রশাসনকে সদর্থক পদক্ষেপ করতে বলেছে।
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের উপদেষ্টা তপনকুমার মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানান, যক্ষ্মা চিকিৎসায় কলকাতা পুরসভার অধীনে রয়েছে ১০টি কেন্দ্র। সেখানে শুধু যক্ষ্মা আক্রান্তদেরই চিকিৎসা হয়। তবে এই রোগ সম্পর্কে শহরবাসী এখনও ততটা সচেতন নন। এ বার সেই সচেতনতা প্রসারের কাজই হাতে নিচ্ছে পুর স্বাস্থ্য দফতর। পুরসভার যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞদের কথায়, ‘‘খুশখুশে কাশির সঙ্গে জ্বর হলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। রক্ত পরীক্ষাও করা দরকার। এই উপসর্গ থাকলেও অনেকেই তা অগ্রাহ্য করেন। সময়ে চিকিৎসা না হওয়ায় পরে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন, এমন উদাহরণ অনেক আছে।’’ তপনবাবু জানান, এক জন যক্ষ্মা রোগীর হাঁচি, কাশি থেকে আশপাশে থাকা কমপক্ষে ১০ জনের শরীরে এর জীবাণু ঢুকতে পারে। যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে একটি এলাকায়। তাই যক্ষ্মা প্রতিরোধ খুব জরুরি।
শহরের কোথায় কোথায় যক্ষ্মার সংক্রমণ বেশি? পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক অফিসার জানান, মূলত বস্তি এলাকাতেই যক্ষ্মায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তাই প্রথম পর্যায়ে পুরসভার দল শহরের বিভিন্ন বস্তিতে ঘুরছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে যক্ষ্মা সম্পর্কে সচেতন করার কাজ করছেন পুরকর্মীরা। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ রাজ্যে পৌঁছেছে। সরকারও পুর-প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। সেই মতো ইতিমধ্যেই ১৬ জানুয়ারি থেকে উত্তর কলকাতার একাধিক বস্তি থেকে ওই কাজ শুরু হয়েছে। প্রতি দলে রয়েছেন তিন জন করে পুর স্বাস্থ্যকর্মী। এ রকম বেশ কয়েকটি দল ঘুরছে বস্তিতে বস্তিতে।
কী করছেন পুরকর্মীরা? পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে বস্তির সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি। প্রথম পর্যায়ে ২৫০ বস্তিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের শারীরিক অবস্থার বিবরণ নিচ্ছেন পুরকর্মীরা। কারও জ্বর হয়েছে কি না, কাশি থাকলে কত দিন ধরে রয়েছে, সেই খোঁজও নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, এই সব উপসর্গ থাকা বাসিন্দাদের কফ ধরে রাখার জন্য পাত্র দেওয়া হচ্ছে। নিকটবর্তী পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের কফ পরীক্ষার কথাও বলা হচ্ছে। আর এ সবটাই পুরসভার চিকিৎসা কেন্দ্রে বিনামূল্যে করা যাবে বলেও বাসিন্দাদের জানানো হচ্ছে। বর্তমানে পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৪৬টি রোগ নির্ণয় কেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকেই কফ পরীক্ষা করা যাবে বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy