দুর্ভোগ: আটকে অ্যাম্বুল্যান্সও। সোমবার, শিয়ালদহে। ছবি: শৌভিক দে
সভা-সমাবেশ হলে রাস্তায় গাড়ির গতি স্বাভাবিক রাখাই তাঁদের কাজ। কিন্তু সোমবার বামেদের নবান্ন অভিযান বা জমায়েত শুরু হওয়ার আগে থেকেই শহরের প্রাণকেন্দ্রের একাধিক রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করে গাড়ির গতি স্তব্ধ করার অভিযোগ উঠল লালবাজারের বিরুদ্ধে। যার জেরে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই শহরের একটি বড় অংশ অবরুদ্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ।
লালবাজার সূত্রের খবর, দু’দিন আগেই ট্র্যাফিকের কর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, নবান্ন অভিযানের জন্য যানজট হতে পারে। কিন্তু তা কমিয়ে গাড়ির গতি স্বাভাবিক রাখার কোনও চেষ্টা তাঁরা করেননি বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে শাসকের হয়ে কাজ করতে গিয়ে পুলিশ যে ঠুঁটো হয়ে গিয়েছে, এ দিনের যানজট তার প্রমাণ বলে দাবি একাধিক পুলিশকর্তারই। হেস্টিংসে অবরোধের জেরে খিদিরপুরের কাছে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স দীর্ঘক্ষণ আটকে ছিল।
কলকাতার মিছিল যাতে নবান্নের কাছে যেতে না পারে, তার জন্য এ দিন বেলা ১২টার পরেই দশটি জায়গায় বসানো হয়েছিল অস্থায়ী ব্যারিকেড। ডাফরিন রোড, মেয়ো রোড, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, হেস্টিংস মোড়, খিদিরপুর রোড, বিদ্যাসাগর সেতুতে ব্যারিকে়ড থাকায় ওই সব রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে মিছিল আসে নবান্ন অভিযানের জন্য জমায়েতের তিনটি জায়গায়। একে রাস্তা বন্ধ, অন্য দিকে মিছিল— দুইয়ের জেরে এস এন ব্যানার্জি রোড, লেনিন সরণি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, পার্ক স্ট্রিট, জওহরলাল নেহরু রোড, মেয়ো রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, ব্রেবোর্ন রোডে প্রবল যানজট তৈরি হয়। আন্দোলনকারীরা মিছিল করে পিটিএস ও হেস্টিংসে পৌঁছনোর পরে দুপুর একটা থেকে বন্ধ হয়ে যায় আলিপুর রোড, খিদিরপুর রোড, এ জে সি বসু রোড। ফলে এক্সাইড, আলিপুর, হেস্টিংস, খিদিরপুর, তারাতলা স্তব্ধ হয়ে যায়। যানজট ছড়ায় দক্ষিণেও। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, ডাফরিন রোড, মেয়ো রোড বন্ধ থাকায় হাওড়া বা দক্ষিণের বিভিন্ন গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় বেলা ১২টার পরে। বিদ্যাসাগর সেতু বন্ধ থাকায় হাওড়ামুখী সব গাড়িকে হাওড়া ব্রিজ দিয়ে পাঠানো হয়।
হাওড়া যেতে বেলা ১১টা নাগাদ বাসে ওঠেন গড়িয়ার বিদ্যুৎ দাস। রাস্তা বন্ধ থাকায় তাঁর বাস ঘুরপথে যখন হাওড়া পৌঁছয়, তখন দুটো বেজে গিয়েছে। পুলিশ জানায়, এ দিনের ওই ব্যারিকেড এবং রাস্তা বন্ধ থাকার ফলে প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশ অবরুদ্ধ ছিল। সন্ধ্যার পরে অবস্থা স্বাভাবিক হয়।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, কয়েকটি রাস্তা ছাড়া সব জায়গায় যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy