Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

নিরাপত্তা আরও কড়া কাশীপুরের অস্ত্র কারখানায়

অন্তর্ঘাত রুখতে নিরাপত্তা জোরদার করা হল কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিতে।

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৮ ০৩:২৩
Share: Save:

এক বছরের মধ্যে দু’বার ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি থেকে অস্ত্র পাচারের অভিযোগ সামনে এসেছে। এর পরেই অন্তর্ঘাত রুখতে নিরাপত্তা জোরদার করা হল কাশীপুর গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিতে। বুধবার লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের ফাঁকে এ কথা জানিয়েছেন কারখানার সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার রাজীব চক্রবর্তী। অনেকেই মনে করছেন, ইছাপুরের ওই অস্ত্র পাচারের ঘটনার প্রেক্ষিতে কাশীপুরের অস্ত্র কারখানার নিরাপত্তা বৃদ্ধি তাৎপর্যপূর্ণ।

রাজীব অবশ্য বলছেন, ‘‘জঙ্গি এবং বিভিন্ন সংগঠিত দুষ্কৃতী-দলের দিক থেকে হামলার কথা ভেবে নিরাপত্তা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া আগে থেকেই শুরু হয়েছিল।’’ কারখানা সূত্রের খবর, আগে থেকে শুরু হলেও গত বছর ইছাপুরের ঘটনা সামনে আসার পরে নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। কয়েক জন সন্দেহভাজন ঠিকাকর্মীকে মাসখানেক আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গেটে বসানো হয়েছে ব্যাগেজ স্ক্যানার, মেটাল ডিটেক্টর ফ্রেম। বিভিন্ন ওয়ার্কশপে সিসি ক্যামেরা ও রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। সম্প্রতি ফের ইছাপুরের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পরে কারখানার ভিতরে টহলদারি ও নজরদারি আরও
বা়ড়ানো হয়েছে।

ইছাপুরে মূলত ওয়েবলি স্কট রিভলভার এবং ইনস্যাস রাইফেল তৈরি হয়। সেই অস্ত্র যায় পুলিশ, আধাসেনা ও সামরিক বাহিনীর হাতে। সম্প্রতি লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ইনস্যাস ও ওয়েবলি স্কটের যন্ত্রাংশ বাতিল দেখিয়ে সেগুলি অস্ত্র কারবারিদের হাতে পাচার করা হত। সেই অভিযোগে ইছাপুর রাইফেল কারখানার দুই অফিসার-সহ একাধিক অস্ত্র কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন কারখানার ঠিকাদারও। প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরেও ইছাপুরের এক অফিসার ও এক ঠিকাদার একই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন।

গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির কর্তারা বলছেন, তাঁদের কারখানায় সামরিক বাহিনীর জন্য উন্নত প্রযুক্তির রকেট লঞ্চার তৈরি করা হয়। এর পাশাপাশি, অসামরিক পিস্তলও তৈরি করা হচ্ছে। কারখানার এক শীর্ষ কর্তার মতে, ‘‘রকেট লঞ্চার দুষ্কৃতীদের হাতে গেলে তা দেশের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক বিপদ তৈরি করতে পারে। এর বাইরে অসামরিক পিস্তল পাচার হয়ে গেলে তা ধরা মুশকিল।’’ ওই কর্তার ব্যাখ্যা, পুলিশ বা সেনার অস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হলে তা তদন্তে ধরা পড়বে। কিন্তু, অসামরিক পিস্তল লাইসেন্স ছাড়া বিক্রি হয় না। ফলে দুষ্কৃতীরা ওই অস্ত্র ব্যবহার করলে তদন্তকারীরা বিভ্রান্ত হবেন। সমস্যায় পড়বেন লাইসেন্সধারীরা।

বস্তুত, অসামরিক পিস্তলের ক্ষেত্রে কাশীপুরের তৈরি ‘অশনি মার্ক ২’ ইতিমধ্যেই বৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়েছে। এ দিন বৈঠকে উপস্থিত রাজ্য এবং ভিন্‌ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা জানান, সেই পিস্তলের চাহিদা ও বিক্রি যথেষ্ট। কারখানা সূত্রের খবর, আগামী দিনে আরও একটি অসামরিক পিস্তল আনতে চলেছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ভবিষ্যতে আরও আঁটোসাঁটো করা হবে বলে জানিয়েছেন গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kashipur Gun Factory Surveillance Security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE