প্রতীকী ছবি।
হাওড়া স্টেশনে দৃষ্টিহীন ছাত্রকে মারধর করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় অবশেষে ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত। তদন্তে নেমে এক সপ্তাহের মাথায় রেলরক্ষী বাহিনীর সহায়তায় শিবদত্ত প্রসাদ নামে ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল হাওড়া সিটি পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তি আদতে উত্তরপ্রদেশের বালিয়ার বাসিন্দা। শনিবার তাকে হাওড়া আদালতে তোলা হয়।
গত ৩১ মার্চ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ হাওড়া স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে বাসে উঠতে যাওয়ার সময়ে এক দুষ্কৃতীর খপ্পরে পড়েন জীবন রক্ষিত নামে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দৃষ্টিহীন ছাত্র। অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতী জীবনকে পিটিয়ে সংজ্ঞাহীন করে দেওয়ার পরে তাঁর হাত-পা বেঁধে রেখে টাকাপয়সা, মোবাইল ও বিভিন্ন পরীক্ষার শংসাপত্র নিয়ে নেয়। ওই ঘটনার পরে রেলপুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সে দিন বিকেলেই রবীন্দ্রভারতীর আরও কয়েক জন দৃষ্টিহীন পড়ুয়া বিক্ষোভ দেখান হাওড়ার জিআরপি থানার সামনে। কিন্তু ঘটনাটি স্টেশনের ভিতরে ঘটেনি, এই দাবি তুলে জিআরপি প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। শুধু তা-ই নয়, ওই রাতে কোনও অভিযোগ না নিয়ে জিআরপি থেকে বিক্ষোভকারী ছাত্রদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাওড়া সিটি পুলিশের গোলাবাড়ি থানায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরেই গোলাবাড়ি থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে প্রথমেই সিসি ক্যামেরা থেকে পাওয়া ছবি নিয়ে আরপিএফের সাহায্য চান তদন্তকারীরা। আরপিএফ হাওড়া স্টেশন চত্বরে থাকা ওই দুষ্কৃতীকে শনাক্তও করে ফেলে। এর পরে তাদের সাহায্য নিয়েই গোলাবাড়ি থানার পুলিশ শুক্রবার রাতে ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরার মুখে ওই দুষ্কৃতী নিজের অপরাধ কবুল করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ছিনতাই হওয়া মোবাইল, টাকাপয়সা ও পরীক্ষার শংসাপত্রের কোনও সন্ধান মেলেনি। সেই কারণে ওই দুষ্কৃতীকে তিন দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখতে চাওয়া হয়েছে।
গোলাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার তথাগত পাণ্ডে বলেন, “ওই দুষ্কৃতীকে হাওড়া স্টেশনের ভিতর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সে অপরাধের কথা স্বীকারও করেছে। অভিযোগকারী ওই দৃষ্টিহীন ছাত্রকে ডেকে পাঠানো হয়েছে দুষ্কৃতীকে শনাক্ত করার জন্য।’’ পুলিশের বক্তব্য, যে হেতু ওই ছাত্রের হাত ধরে ওই দুষ্কৃতী স্টেশনের বাইরে নিয়ে গিয়েছিল, তাই তার হাত স্পর্শ করেই অভিযুক্তকে শনাক্ত করার চেষ্টা করবেন অভিযোগকারী ছাত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy