Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সিভিক ভলান্টিয়ার খুনে কি পরিচিতেরা

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগপত্রে মিলনবাবু লিখেছেন, বিয়ের পর থেকে শম্পার উপরে মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার চালাতেন স্বামী সুপ্রতিম এবং শাশুড়ি মীরা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৮ ০২:২৩
Share: Save:

পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া কৈখালির চিড়িয়াবাগানে মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের এই পরিণতি সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিধাননগর কমিশনারেটের তদন্তকারীরা। সেই খুনের পরিকল্পনায় শাশুড়ি এবং স্বামী প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত বলেও দাবি মৃতা শম্পা দাসের দাদা মিলন বিশ্বাসের। রবিবার যার তদন্ত চেয়ে বিমানবন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন জ্যাংড়ার উদয়নপল্লির ওই বাসিন্দা।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগপত্রে মিলনবাবু লিখেছেন, বিয়ের পর থেকে শম্পার উপরে মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার চালাতেন স্বামী সুপ্রতিম এবং শাশুড়ি মীরা দাস। ছেলে হওয়ার পরে শাশুড়ি শম্পাকে বাড়ি থেকে বার করে দেন বলেও অভিযোগ। সুপ্রতিমের মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচারের জন্য শাশুড়ি দু’লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন মৃতার দাদা। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘স্বামী এবং শাশুড়ি পরিকল্পনা করে বোনকে খুন করেছে।’’ মিলনের দাবি, রাজারহাটে শম্পার একটা জমি রয়েছে। সেটা বিক্রি করে আমেরিকায় চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন শম্পার শাশুড়ি ও স্বামী। তাই তা বিক্রির জন্য শম্পাকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। মৃতার শাশুড়ি অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।

গত দু’দিনে দফায় দফায় প্রতিবেশীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, পারিবারিক অশান্তির কথা পাড়ার কারও অজানা ছিল না। ঘটনাটি যে পূর্ব পরিকল্পিত, তার ব্যাখ্যায় পুলিশ সূত্রে একাধিক যুক্তি মিলেছে। তদন্তকারীদের একাংশের বক্তব্য, একতলার সিঁড়ির দেওয়ালে ঠেস দেওয়া অবস্থায় শম্পার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তকারীদের অনুমান, মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের পরে বালিশ দিয়ে শম্পার মুখ চেপে ধরা হয়েছিল। দেওয়ালে শম্পার মাথার চুল পেয়েছে পুলিশ। সিভিক ভলান্টিয়ার হলেও পুলিশকর্মী হিসেবে আত্মরক্ষার কিছু কৌশল শম্পা নিশ্চয় জানতেন। সুপ্রতিমের যা শারীরিক পরিস্থিতি তাতে তাঁর পক্ষে শম্পাকে কাবু করা মুশকিল। ফলে ঘরে আরও কয়েক জনের উপস্থিতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সুপ্রতিম নিজেও জানিয়েছেন, চার জন আততায়ী এসেছিল।

সে দিন সন্ধ্যায় পেয়ারাবাগানে অপরিচিত মুখের খোঁজে ১৩৭/৯ নম্বর বাড়ি থেকে বেরোনোর সব ক’টি রাস্তায় এ দিন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন গোয়েন্দারা। সুপ্রতিমকে একা ছেড়ে বাড়ির অন্য সদস্যদের নিয়ে মীরাদেবী কেন সে দিন বাগুইআটি গেলেন, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই সন্ধ্যায় মাংস রান্না করার জন্য শম্পাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি আসতে বলেছিলেন সুপ্রতিম। ঘটনার পর থেকে ১৩৭/৯ নম্বর বাড়ির উল্টো দিকে বাপের বাড়িতে আছেন মীরাদেবী। পুলিশ সূত্রের খবর, সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সুপ্রতিম এবং ওই বাড়ির পরিচারিকাকে এখনও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Shampa Das Kaikhali Murder Case suspect
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE