Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সাফাই-শর্ত লাইসেন্সে, থাকছেই প্রশ্ন

শহরের রেস্তরাঁ-হোটেল, গেস্ট হাউস থেকে শুরু করে সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এমনই নিয়ম চালু করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।

রাস্তার এমন খাবারের দোকান নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। ফাইল চিত্র

রাস্তার এমন খাবারের দোকান নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। ফাইল চিত্র

দেবাশিস ঘড়াই
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫৪
Share: Save:

নিয়ম হল। অথচ তাতে বড়সড় ফাঁক থেকে গেল! ফলে নিয়ম আদতে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই।

জঞ্জাল সাফাই করতে হবে। না হলে ট্রেড লাইসেন্সের পুনর্নবীকরণ করা হবে না। শহরের রেস্তরাঁ-হোটেল, গেস্ট হাউস থেকে শুরু করে সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এমনই নিয়ম চালু করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। ইতিমধ্যেই মেয়র পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাশ হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। কিন্তু নতুন নিয়মে শুধুমাত্র ৫০১ বর্গফুটের উপরে হোটেল-রেস্তরাঁ, গেস্ট হাউস, পানশালা-সহ নানা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাস্তার দু’ধারের খাবারের দোকানগুলিকে তাতে ধরা হয়নি। কিন্তু বাস্তবে রাস্তার দু’ধারের খাবারের দোকানের আশপাশই সবচেয়ে বেশি নোংরা থাকে। ফলে জঞ্জাল সাফাইয়ের নিয়ম চালু হলেও তা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়েই থাকছে প্রশ্ন।

পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এত দিন হোটেল-রেস্তরাঁগুলির জঞ্জাল সাফাই নিয়ে তেমন কোনও কড়াকড়ি ছিল না। ফলে শহরের অজস্র হোটেল-রেস্তরাঁর আশপাশে যথেচ্ছ নোংরা পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু এ বার সেই চেনা চিত্রেই পরিবর্তন আনতে চাইছে পুরসভা। নতুন নিয়মে সংশ্লিষ্ট হোটেল-রেস্তরাঁর পুরসভাকে পরিষ্কার জানাতে হবে, জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য কত সংখ্যক লরি পাঠাতে হবে। সেই অনুযায়ী লরি পাঠিয়ে জঞ্জাল পরিষ্কার করবে পুরসভা। জঞ্জাল সাফাই দফতর সেইমতো ফি-ও আদায় করবে। তার পরে একটি ছাড়পত্র দেবে ওই দফতর। সেই ছাড়পত্রটি লাইসেন্স দফতরে জমা করতে হবে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে। তবেই ট্রেড লাইসেন্সের পুনর্নবীকরণ করা হবে। ছাড়পত্র জমা না দিলে মিলবে না লাইসেন্স।

আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শহরের অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁর জঞ্জাল সাফাই করে দেয় পুরসভা। কিন্তু দেখা যায় যে, সংশ্লিষ্ট হোটেল মালিক ট্রেড লাইসেন্সের পুনর্নবীকরণই করেননি। কিন্তু এই ব্যবস্থার ফলে সাফ হয়ে যাবে, কারা কারা জঞ্জাল সাফাই করছে। সেইমতোই লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হবে। ফলে লাইসেন্স দফতরেরও আয় বাড়বে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘জঞ্জাল সাফাই দফতরের ছাড়পত্র না পেলে লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হবে না। কারণ, আমরা লক্ষ্য করছিলাম যে অনেক হোটেল-রেস্তরাঁরই আশপাশ অপরিষ্কার, নোংরা। তা পরিষ্কার করার জন্য আমাদের কিছু জানানোও হয় না। কিন্তু এই ব্যবস্থায় তেমনটা হবে না বলেই আমরা আশা করছি।’’

তবে নতুন ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পুর প্রশাসনের একাংশে। কারণ, শহরেরই এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে নোংরার জন্য পথচলতি মানুষেরা ঠিক ভাবে হাঁটতেও পারেন না। অথচ সেগুলোর জন্য কোনও ব্যবস্থা চালু করা হয়নি। ফলে নতুন নিয়মে শহর কতটা পরিচ্ছন্ন হবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘মাঝারি হোটেল-রেস্তরাঁর জন্য না হয় এই নিয়ম চালু করা হল। কিন্তু রাস্তার দু’ধারে যে সব খাবারের দোকান রয়েছে, সেগুলো দেখবে কে! সেগুলোতেই তো বেশি নোংরা হয়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Food Stall Trade Licence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE