বিপত্তি: হাওড়া ব্রিজ ও বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রাস্তার ধার ঘেঁষে এ ভাবেই বসেন বিক্রেতারা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
প্রতি বর্ষায় রাস্তা ভেঙে গিয়ে, পিচের আস্তরণ উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হত। জমা জলে সেই গর্ত হয়ে উঠত সাক্ষাৎ মৃত্যুফাঁদ। বর্ষা কেটে গেলেই ফের লাখ লাখ টাকা খরচ করে নতুন রাস্তা তৈরি হত। পরের বর্ষাতেই ফের পিচের চাদর উঠে গিয়ে গর্তে ভরে যেত রাস্তা।
দীর্ঘ তিন-চার দশক ধরে এমনই চলছিল। প্রতি বছর হাওড়া ব্রিজ ও বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন রাস্তার এমনই হাল দেখে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। পাছে আবার সেই পুরনো ছবি ফিরে আসে, তাই এ বার বর্ষার আগেই হাওড়ার দিকে কলকাতা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সমস্ত রাস্তা ও হাওড়া ব্রিজ অ্যাপ্রোচ রোডকে ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট দিয়ে মুড়ে দিচ্ছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা কেএমডিএ। খরচ হচ্ছে দুই কোটি টাকা।
কিন্তু এত টাকা খরচ করে রাস্তা তৈরি হলেও কলকাতা বাসস্ট্যান্ড জুড়ে থাকা, জবরদখল করা বাজার ও হকারদের সরানোর ব্যাপারে হাওড়া পুরসভা বা কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ নেই। ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট দিয়ে তৈরি সেই রাস্তার প্রায় পুরোটাই এখন চলে গিয়েছে হকারদের দখলে। রাস্তার অর্ধেক জায়গা জুড়ে বসছে নিত্যদিনের আনাজের বাজার। শুধু তাই নয়, হাওড়া সাবওয়ের যে সিঁড়ি কলকাতা বাস স্ট্যান্ডের দিকে উঠেছে, সেই
সিঁড়ি থেকে বাস স্ট্যান্ডে যাত্রী প্রতীক্ষালয় পর্যন্ত পুরো জায়গাটাই হকারদের দখলে চলে যাওয়ায় এখন কলকাতা বাসস্ট্যান্ডে হাঁটাচলার জায়গা নেই। এত টাকা খরচ করে রাস্তা করার পরও হকার না সরানোয় ক্ষুব্ধ কেএমডিএর কর্তারা।
হাওড়ার দায়িত্বে থাকা কেএমডিএ-এর এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘কেএমডিএ রাস্তা করে দিচ্ছে ঠিকই। কিন্তু হকার না সরলে রাস্তা করে লাভ নেই। মানুষকে তো হাঁটাচলার জায়গা দিতে হবে। হকার তো কেএমডি-এ তুলবে না। এ সব পুরসভার দায়িত্ব।’’
ওই পদস্থ কর্তার বক্তব্য, গত চার বছর ধরে সদর দফতরে প্রচুর দৌড়াদৌড়ির পর শেষ পর্যন্ত পিচের বদলে ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট দিয়ে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। হকার না উঠলে এত টাকা খরচ করে রাস্তা করাটা বিফলে যাবে। কেএমডিএ-র ওই কর্তার দাবি, যাতে একটা বর্ষার পরেই রাস্তা না ভেঙে যায় তাই পিচের সাধারণ রাস্তা না করে দু’কোটি টাকা খরচ করে ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি বাস স্ট্যান্ডে যে সমস্ত যাত্রী প্রতীক্ষালয় দীর্ঘ দিন ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়েছিল সেগুলিও সারানো হচ্ছে। একই সঙ্গে বদলে ফেলা হচ্ছে বাস চ্যানেলের সমস্ত পেভার ব্লক।
কিন্তু কলকাতা বাসস্ট্যান্ড থেকে হকার তোলা যাচ্ছে না কেন?
হাওড়া পুরসভার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাওড়ার ডিআরএম-এর সঙ্গে পুরসভার যৌথ ভাবে হাওড়া বাসস্ট্যান্ডের সৌন্দর্যায়ন ও পরিকাঠামো নিয়ে একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে। ডিআরএম আমাকে নকশা জমা দিতে বলেছেন। আমিও চাই হাওড়া স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড চত্বর সাজাতে। এ সব কাজ শুরু হলে হকাররা এমনিতেই চলে যাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy