Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
school

দুঃস্থ শিশুদের পাশে দাঁড়াতে শেখাচ্ছে স্কুল

নিজেরাই চাষ করে এবং বাড়ি থেকে চাল ও ডাল সংগ্রহ করে পড়ুয়ারা তা পাঠাচ্ছে অন্য স্কুলের বন্ধুদের কাছে। এ কাজে এগিয়ে এসেছে শ্রীশিক্ষায়তন, মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লস এবং রামমোহন মিশন হাইস্কুল।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ১২:৫৬
Share: Save:

শুধুমাত্র পঠনপাঠনের জায়গাই নয়, চরিত্র গঠনেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে স্কুলের। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সেই পাঠ দিতে এ বার এগিয়ে এল শহরের কয়েকটি বেসরকারি স্কুল।

নিজেরাই চাষ করে এবং বাড়ি থেকে চাল ও ডাল সংগ্রহ করে পড়ুয়ারা তা পাঠাচ্ছে অন্য স্কুলের বন্ধুদের কাছে। এ কাজে এগিয়ে এসেছে শ্রীশিক্ষায়তন, মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লস এবং রামমোহন মিশন হাইস্কুল। কর্তৃপক্ষের আশা, এ ভাবে অন্যকে সাহায্য করার মানসিকতা তৈরি হলে এগিয়ে যাবে সমাজ।

কী ভাবে পাশে থাকছে পড়ুয়ারা? শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানান, স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে দু’হাজার পড়ুয়া রয়েছে। প্রতিটি ক্লাস ঘরের সামনে একটি বড় পাত্র রাখা থাকে। প্রতিদিন পড়ুয়ারা বাড়ি থেকে তাদের ছোট্ট হাতে ভরে এক মুঠো করে চাল ও ডাল এনে ওই পাত্রে জমা করে। সপ্তাহান্তে সেই সংগৃহীত চাল ও ডাল পাঠিয়ে দেওয়া হয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। কাঁকুলিয়া রোডে বস্তির শিশুদের নিয়ে একটি স্কুল চালায় ওই সংস্থা। সেখানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক পর্যন্ত ৯২ জন পড়ুয়ার মিড-ডে মিলের চাল-ডাল সংগ্রহ হয় এ ভাবেই।

মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লসের কর্তৃপক্ষ জানান, স্কুল চত্বরের ভিতরের জমিতে পড়ুয়ারা বিভিন্ন আনাজ চাষ করে। বেগুন, ফুলকপি, পালংশাক, কুমড়ো-সহ নানা ধরনের আনাজ রয়েছে সেই তালিকায়। পরে সেই আনাজ পাঠিয়ে দেওয়া হয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে। পিছিয়ে পড়া শিশুদের নিয়ে কয়েকটি স্কুল চালায় ওই সংস্থা।

পিছিয়ে নেই রামমোহন মিশন হাইস্কুলও। প্রিন্সিপাল সুজয় বিশ্বাস জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে তো অবশ্যই, অন্য সময়েও বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সাহায্য করে পড়ুয়ারা| এমনকী, প্রতি জানুয়ারিতে রামমোহন মেলায় নিজেদের হাতে তৈরি জিনিস বিক্রি করে তারা। সেই টাকা সরাসরি দেওয়া হয় বস্তিবাসীদের।

কাঁকুলিয়ার ওই স্কুলের তরফে বিজয়া নাহা জানান, শ্রীশিক্ষায়তনের পড়ুয়ারা কয়েক মাস ধরে চাল ও ডাল দেওয়ায় পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দেওয়া যাচ্ছে। ব্রততীদেবী বলেন, ‘‘সামান্য এক মুঠো চাল-ডাল দিয়ে খুদে পড়ুয়াদের সমাজের অনেক কাছে নিয়ে আসা সম্ভব বলে বিশ্বাস করি।’’

মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লসের অধিকর্তা দেবী করের মতে, “পাশাপাশি হাতে-কলমে চাষ করে নতুন জিনিস শিখছে পড়ুয়ারা।”

এ ভাবে শৈশব থেকে মানবিকতার পাঠ পেলে ভবিষ্যৎ সমাজ নিরাপদ ও সুস্থ হবে, মনে করছেন মনোরোগ চিকিৎসকেরা। আর অভিভাবকদের আশা, পিছিয়ে পড়া বন্ধুদের পাশে দাঁড়ানোর এই মানসিকতা থেকেই ধীরে ধীরে জন্ম নেবে সামাজিক দায়িত্ব-কর্তব্যের| এতে লাভবান হবে পরিবারই। তাই স্কুলের পাশাপাশি সন্তানকে এমন কাজে উৎসাহ দেওয়ার কথা বলছেন অভিভাবকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

school student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE