বিপত্তি: ঝড়-ঝঞ্ঝাট। পুলিশের গাড়ির উপরে ভেঙে পড়েছে গাছ। নিজস্ব চিত্র
ফের ঝড়ে গাছহারা হল কলকাতা!
শুক্রবার সকাল থেকেই ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল ছিল মহানগর। বিকেলের জোরালো ঝড়বৃষ্টি তা থেকে স্বস্তি দিলেও নানা প্রান্তে ভেঙে প়়ড়েছে বহু গাছ। আহত তিন জন। কলকাতা পুরসভার কাছে অন্তত ২৯টি গাছ ভেঙে পড়ার খবর রয়েছে। লালবাজার ২৫ জায়গায় গাছ ভেঙে প়ড়ার খবর জানিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক গাড়ি। ঝড়ের দাপটে ব্যাহত হয়েছে বিমান চলাচল। হাওড়াতেও গাছ ও বাড়ি ভেঙে পড়়েছে। তবে হতাহতের খবর মেলেনি।
এ বছর জোরালো ঝড় হলেই গাছ ভেঙে পড়ছে। এমনিতেই কলকাতায় বায়ুদূষণ মাত্রাতিরিক্ত। গাছের সংখ্যাও কম। এই পরিস্থিতিতে এ ভাবে গাছ ভেঙে পড়লে মহানগরের পরিবেশ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁদের মতে, শহরে বৃক্ষরোপণ এবং গাছের পরিচর্যার খামতিতেই এমনটা ঘটছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এ দিন দু’দফার ঝড়ে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫৬ ও ৯২ কিলোমিটার। দু’টি ঝড়েরই স্থায়িত্ব ছিল এক মিনিট।
পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিধান সরণি, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, দরগা রোড, গার্ডেনরিচ, হাজরা-সহ শহরের নানা প্রান্ত থেকে গাছ ভেঙে পড়ার খবর আসতে থাকে। যান চলাচলও আটকে যায়। গাছ কাটার জন্য পুরকর্মীদের দেখা না মেলায় কন্ট্রোল রুমে ঘন ঘন ফোন আসতে থাকে। কিছু জায়গায় বাতিস্তম্ভের উপরে ভেঙে প়়ড়ে গাছ। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও খবর যায়। মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার জানান, কোথায় কোথায় গাছ পড়েছে, তার খবর নিয়েই পুরসভার বিশেষ দল এলাকায় যাচ্ছে।
লালবাজার জানিয়েছে, জোড়াবাগানে একটি গাড়ির উপরে গাছ ভেঙে প়ড়লে নিরঞ্জন নায়েক নামে বৃদ্ধ চালক ভিতরে আটকে পড়েন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হেস্টিংসের কাছে গাছের ডাল ভেঙে পায়ে চোট পান কৌশিক সিংহ নামে এক যুবক। শখেরবাজারে সিগন্যাল পোস্ট ভেঙে পড়ে শৌভিক সাহা নামে এক যুবক হাতে চোট পেয়েছেন।
'ঘনঘটা: ঝড়ের আগে। শুক্রবার বিকেলে, ইএম বাইপাসে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
ঝড়ের পরে হাওড়া পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাবে বহু জায়গাতেই গাছ কেটে রাস্তা সাফ করতে রাত গড়িয়ে গিয়েছে। মধ্য হাওড়ার নিধিরাম মাঝি লেনে বড় অশ্বত্থ গাছ উপড়ে পড়ায় একটি বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। বাসিন্দারা আগেই বেরিয়ে এসেছিলেন। লক্ষ্মীনারায়ণতলার কাছে গাছ পড়ে আন্দুল আটকে যায়। গাছে চাপা প়়ড়ে একটি লরি-সহ তিনটি গাড়ি। বাঁশতলা শ্মশানের কাছেও পাঁচিল ধসে রাস্তা আটকে যায়। পুরকর্মীরা দেরিতে এসেছেন বলেও অভিযোগ।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুবনেশ্বর থেকে আসা একটি বিমান বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ রানওয়ের কাছাকাছি এসেও হাওয়ার দাপটে আবার উড়ে যেতে বাধ্য হয়। আকাশে চক্কর কেটে বিরাটির দিক থেকে ৩টে ৫০ নাগাদ সেটি নামে। এর মধ্যে শহরে নামতে এসে প্রায় আটটি বিমানকে আকাশে অপেক্ষা করতে হয়। বিকেল চারটের পরে সেগুলি নেমেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy