Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘আমি জানলে ও ভাবে যেতেই দিতাম না’

ঘটনার আকস্মিক আঘাত এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি বাপিবাবু। তবু তার মধ্যে এ দিন সামান্য কথাবার্তা বলেছেন তিনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৭
Share: Save:

আগের থেকে সামান্য উন্নতি হয়েছে উলুবেড়িয়ার পথ দুর্ঘটনায় আহতদের। মঙ্গলবার হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপি ঘোষের স্ত্রী মধুমিতার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। মেয়ে নবনীতা সাহার অস্ত্রোপচারের ব্যাপারে এত দিন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা। তাঁরও এ দিন একটি অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়েছে। যদিও চিকিৎসকেরা এখনই কিছু বলতে নারাজ।

ঘটনার আকস্মিক আঘাত এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি বাপিবাবু। তবু তার মধ্যে এ দিন সামান্য কথাবার্তা বলেছেন তিনি। বাপিবাবুর একটাই আফশোস, স্ত্রী মধুমিতা যদি তাঁকে এক বার বলে যেতেন, তা হলে ও ভাবে কখনওই ছাড়তেন না তিনি। কারণ, জামাই প্রীতম সাহা সদ্য গাড়ি চালানো শিখেছিলেন। ফলে গভীর রাতে কোনও ভাবেই তাঁকে গাড়ি চালাতে দিতেন না বাপিবাবু। তিনি জানান, প্রায় ছ’বছর হল মেয়ের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু মধুমিতা কখনও মেয়ের বাড়িতে গিয়ে রাতে থাকেননি। বাপিবাবু বলেন, ‘‘এত দিন এক বারও মেয়ের বাড়িতে গিয়ে রাতে থাকেনি। সে দিন মেয়ে অনেক বার করে বলল যে, মাকে নিয়ে যাবে। আমি জানতাম, মেয়ের বাড়িতেই যাচ্ছে।’’ বাপিবাবু আরও বলেন, ‘‘এক বার যদি জানতাম যে, ওরা কোলাঘাটে যাচ্ছে, তা হলে ও ভাবে ছাড়তামই না। নিজের গাড়ি আর চালককেও দিয়ে দিতাম। জামাই তো সবে গাড়ি চালানো শিখেছিল। হাত পাকা হয়নি। ও ভাবে ছাড়তাম না ওদের!’’ বাপিবাবুর অনুমান, কোলাঘাটে খেতে যাওয়ার পরিকল্পনা হঠাৎই হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, রবিবার শেষ রাতে কোলাঘাটের একটি ধাবা থেকে ফেরার পথে উলুবেড়িয়ার মনসাতলায় ছ’নম্বর জাতীয় সড়কে এক পথ দুর্ঘটনায় বাপিবাবুর জামাই প্রীতম সাহা ও একমাত্র নাতি শিবম সাহার মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হন বাপির স্ত্রী মধুমিতা, প্রীতমের স্ত্রী নবনীতা এবং প্রীতমের এক বন্ধু। তাঁদের প্রথমে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানান্তরিত করানো হয় কলকাতার ইএম বাইপাস লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে। মধুমিতা ও নবনীতা, দু’জনেই চিকিৎসাধীন।

সোমবার এক বারই হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। আর হাসপাতালে যেতে রাজি নন বাপিবাবু। রুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বলছেন, ‘‘আমি আর যাব না হাসপাতালে। ওদের এ ভাবে দেখতে পারব না। ওরা শুধু বাড়ি ফিরে আসুক। এটুকুই চাইছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uluberia Road Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE