Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সোশ্যাল মিডিয়াও নজরে রাখছে কলকাতা পুলিশ

সিআইডি-র পথ অনুসরণ করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও নজরদারি শুরু করেছে কলকাতা পুলিশও। লালবাজারের খবর, এ বছরের গোড়ায় গোপনে শহরের এক বাড়িতে বসে এই শাখা কাজও শুরু করেছে।

শিবাজী দে সরকার ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩২
Share: Save:

সিআইডি-র পথ অনুসরণ করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও নজরদারি শুরু করেছে কলকাতা পুলিশও। লালবাজারের খবর, এ বছরের গোড়ায় গোপনে শহরের এক বাড়িতে বসে এই শাখা কাজও শুরু করেছে। ফেসবুকের মতো সাইটে কে বা কারা উস্কানিমূলক বার্তা চালাচালি করছে বা জঙ্গিপনাকে মদত দিচ্ছে, সে সবের উপরে নজর রাখা হচ্ছে।

সারদা কেলেঙ্কারির পরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে প্রচার আটকাতে ‘সাইবার পেট্রল’ নামে শাখা খুলেছিল সিআইডি। পুলিশের খবর, এখন ফেসবুকের নানা উস্কানিমূলক কথাবার্তার উপরে তারাও নজর রাখছে।

কিন্তু হঠাৎ এমন নজরদারির প্রয়োজন পড়ল কেন?

গোয়েন্দাদের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে উস্কানিমূলক বার্তা চালাচালি করে এ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গোষ্ঠী সংঘর্ষ বাধিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বুধবার মুর্শিদাবাদের ডোমকলের প্রশাসনিক সভায় এ ধরনের উস্কানিমূলক বার্তা চালাচালি নিয়ে মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বলেছেন, ‘‘কিছু কিছু সোশ্যাল নেটওয়ার্কে অপপ্রচার চলছে। ওই দেখে দুই গোষ্ঠী মারামারিতে লিপ্ত হবেন না।’’

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, গত বছরের মাঝামাঝি থেকেই এ রাজ্যে একাধিক গোলমাল হয়েছে। সে সময়ে ফেসবুকে নানা ধরনের উস্কানিমূলক কথা এবং ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার পর থেকেই গোয়েন্দারা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট নিয়ে সতর্ক করেন। গোপন ডেরায় বসে এক ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে এক ডজন পুলিশকর্মীর দল এই কাজও শুরু করেন।

দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে এমন তথ্য চালাচালির উপরে নজরদারি চালায় সেনাবাহিনী। প্রয়োজনে সেই তথ্য চালাচালি আটকানোরও ব্যবস্থা রয়েছে। সামরিক পরিভাষায় তাকে ‘ইনফর্মেশন ওয়ারফেয়ার’ বলা হয়। লালবাজারের খবর, অনেকটা সেই ধাঁচেই বিভিন্ন সন্দেহভাজন ব্যক্তি বা সংগঠন এবং তাঁদের প্রোফাইলের উপরে নজরদারি চালানোটাই এখানে মূল কাজ। কোন কোন ব্যক্তি উস্কানিমূলক কথাবার্তায় কী প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে তা-ও দেখা হচ্ছে। বেগতিক দেখলে অশান্তি বাধানোর চেষ্টার অভিযোগে মামলা করার সুযোগও রয়েছে।

সম্প্রতি জানা গিয়েছিল, হোয়্যাট্‌স অ্যাপের উপরে নজরদারি করার সরঞ্জাম এনেছে পুলিশ। তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল। অনেকেই প্রশ্ন করেছিলেন, এই ধরনের নজরদারি কি ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়? এ ক্ষেত্রেও তেমন প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। যদিও সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং গোয়েন্দাদের মতে, ফেসবুক একটি প্রকাশ্য ‘মঞ্চ’। সেখানে নজরদারি কোনও ভাবেই স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়। বরং দেশ এবং নাগরিকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এটা অনেক সময়েই জরুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police CID Social Media Surveillance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE