Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সোনিকা মৃত্যু মামলায় কোর্টে চার্জশিট পেশ

২৯ এপ্রিল ভোর রাতে লেক মলের সামনে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সোনিকার। আহত হন গাড়ির চালকের আসনে থাকা বিক্রম। সেই ঘটনায় বিক্রমের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ।

বিক্রম চট্টোপাধ্যায়

বিক্রম চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৩
Share: Save:

মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ৮১ দিন পরে অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। বুধবার টালিগঞ্জ থানার তদন্তকারী অফিসার আলিপুর আদালতে এই চার্জশিট জমা দেন। পুলিশি সূত্রের খবর, বিক্রমের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানো, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো-সহ চার ধরনের অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে মোটর ভেহিক্যালস আইনের ধারাও যুক্ত করা হয়েছে। সোনিকা সিংহ চৌহানের অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলায় গত ৬ জুলাই মাঝরাতে রাজডাঙার একটি শপিং মলের সামনে থেকে বিক্রমকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতের নির্দেশে তিনি এখনও জেলে বন্দি।

২৯ এপ্রিল ভোর রাতে লেক মলের সামনে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সোনিকার। আহত হন গাড়ির চালকের আসনে থাকা বিক্রম। সেই ঘটনায় বিক্রমের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। পাঁচ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আলিপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান তিনি। পুলিশের অভিযোগ, পরবর্তী সময়ে তদন্তে উঠে আসে, অতিরিক্ত নেশা করে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন অভিনেতা। গাড়ির গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১০৫ কিমি। তার ফলেই লেক মলের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি উল্টে গিয়েছিল। চালকের পাশের সিটে বসে থাকা সোনিকার চোট মারাত্মক হওয়ায় তাঁকে বাঁচানো যায়নি। এর পরেই মামলায় অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর ধারা যুক্ত করেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন: সভাস্থলে এত আগে দমকল কেন

পুলিশের দাবি, এই সব তথ্য সামনে আসার পরই বিক্রম বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন। একাধিক বার তাঁকে ডেকে পাঠালেও তদন্তকারীদের সামনে হাজির হননি বিক্রম। বরং তিনি কানাডায় চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি। তবে বিক্রমের উপরে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে ৬ জুলাই মধ্যরাতে এক বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য বেরোতেই পাকড়াও করা হয় তাঁকে। নিপাত্তা থাকার সময় বিক্রমের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি গ্রেফতার হওয়ায় সেই আর্জি আদালতের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে যায়। আজ, বুধবার আলিপুর আদালতে বিক্রমের জামিনের আর্জির শুনানি হবে।

লালবাজার সূত্রের খবর, এই মামলায় প্রথমে গাড়ির ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। চার্জশিটে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। গাড়ি নির্মাতা সংস্থার রিপোর্টও জমা দিয়েছেন তদন্তকারীরা— যা এ রাজ্যে প্রথম বলে দাবি পুলিশের। এ ছাড়া আদালতের কাছে গোপন জবানবন্দি দেওয়া ৮ জন সাক্ষীর বয়ানও নথিভুক্ত করে চার্জশিটের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় অবশ্য বিক্রমের রক্তের নমুনা সংগ্রহ নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ৯ দিন পরে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছিল। সেই নমুনাও পরিমাণে এত কম— ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি জানিয়ে দেয় তাতে মাদকের উপস্থিতি পরীক্ষা করাই সম্ভব নয়। তাই এ ক্ষেত্রে গাড়ির ফরেন্সিক রিপোর্ট ও সাক্ষীদের বয়ানকেই মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসেবে দাবি করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE