Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বৃহন্নলাদের দাপট রুখতে এ বার পুলিশের উদ্যোগ

শুধু বালিগঞ্জ নয়। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে ট্র্যাফিক সিগন্যালে গাড়ি দাঁড়ালে ওই একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে অনেককে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৪
Share: Save:

শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে ট্যাক্সি নিয়ে যাদবপুরের বাড়িতে ফিরছিলেন বেঙ্গালুরুর এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী স্বপন দাস। বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে লাল সিগন্যালে গাড়ি দাঁড়াতেই ট্যাক্সির বন্ধ জানলায় টোকা দিয়ে টাকা চাইলেন কয়েক জন হিজড়ে। সেই সঙ্গে নানা অঙ্গভঙ্গি। বাধ্য হয়ে টাকা দিলেন স্বপনবাবু।

শুধু বালিগঞ্জ নয়। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে ট্র্যাফিক সিগন্যালে গাড়ি দাঁড়ালে ওই একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে অনেককে। পুলিশ থাকলেও তাদের কার্যত উপেক্ষা করেই চলে টাকা চেয়ে তাণ্ডব। না মিললে অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগের অভিযোগও রয়েছে এই হিজড়েদের একাংশের বিরুদ্ধে। লালবাজার জানিয়েছে, রাস্তায় হিজড়েদের একাংশের ওই দাপট তারা কমাতে চায়। সে জন্যে গত মাসে লালবাজারের পক্ষ থেকে ট্র্যাফিক পুলিশের সব গার্ডের ওসি-কে সর্তক করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও রাস্তায় এর পরেও ওই অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্ট গার্ডের ওসি দায়ী থাকবেন বলেও লালবাজারের তরফে সর্তক করা হয়।

কী বলা হয়েছে লালবাজারের নির্দেশিকায়?

সূত্রের খবর, প্রতি ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি-কে বলা হয়েছে তাঁদের এলাকার সিগন্যালে দাঁড়ানো গাড়ি থেকে টাকা আদায় করতে পারবেন না হিজড়েরা। এ কাজে তাঁদের এগোতে দেখলেই রাস্তার পাশে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে হিজড়েদের সরানো নিয়ে এলাকায় বড় সমস্যা না হয়, সে জন্যে স্থানীয় থানার সাহায্য নিতে হবে।

ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, ওই নির্দেশের পরে কর্তাদের কাছে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ জমা পড়ে শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তার মোড়ে। লালবাজারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সেই সব গার্ডের ওসি-র কাছে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। লালবাজারের ওই তালিকায় দক্ষিণ কলকাতার একটি ট্র্যাফিক গার্ড রয়েছে বলে সূত্রের খবর।

লালবাজারের সূত্রের খবর, হিজড়ের দাপট নতুন নয়। সদ্যোজাতের বাড়িতে হাজির হয়ে হুজ্জুতির বহু ঘটনার অভিযোগ অনেক দিন আগে থেকেই রয়েছে শহরে। পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও অধিকাংশ বাসিন্দা কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন না। হিজড়েদের ওই দাপটের শিকার একাধিক ব্যাক্তি জানিয়েছেন, টাকা না দিলেই অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগ করেন হিজড়েরা। পরিবার-পরিজনের সামনে সে ভাষা খুব অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। তাই ভয়েই টাকা দেন অনেকে।

এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘সম্প্রতি রাস্তায় হিজড়ের দাপট বেড়ে গিয়েছে বলে লালবাজারের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। এর পরেই নিচুতলার পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই নির্দেশ জারি করা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE