লন্ডন আই
গঙ্গাতীরে ‘লন্ডন আই’-এর ধাঁচে ‘কলকাতা আই’ গড়ে তোলার পথে আর কোনও জটিলতা থাকল না। সোমবার এমনটাই দাবি করেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি এ দিন জানিয়েছেন, কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘কলকাতা আই’ তৈরির জন্য যৌথ উদ্যোগে সংস্থা গঠনে তাঁদের আপত্তি নেই।
মন্ত্রী বলেন, “ইতিমধ্যেই চিনে কলকাতা আই-এর ১৩৫ বর্গমিটার ব্যাসের স্টিলের চাকা তৈরির কাজ চলছে। তার জন্য লন্ডনের যে সংস্থাটি কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং কেএমডিএ-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সামিল হবে, তারা টাকাও পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ সায় না দেওয়ায় সংস্থাটি গঠন করা যাচ্ছিল না। এখন আর কোনও জটিলতা রইল না। আগামী বছর মিলেনিয়াম পার্কে ‘কলকাতা আই’ চালু হয়ে যাবে।”
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরেই লন্ডনের আদলে গঙ্গাকে কেন্দ্র করে কলকাতার আকর্ষণ বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয় রাজ্য সরকার। সেই পরিকল্পনার অন্যতম অংশ ‘কলকাতা আই’। নগরোন্নয়ন দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এই ‘কলকাতা আই’ আসলে নাগরদোলায় চেপে তিন শতাব্দী প্রাচীন মহানগরীকে দেখা।
‘লন্ডন আই’ তৈরি হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩৫ মিটার উঁচু এই নাগরদোলায় রয়েছে ৩২টি কেবিন বা ক্যাপসুল। এক বার চক্কর দিতে সময় নেয় আধ ঘণ্টা। একসঙ্গে ৮০০ লোক চড়তে পারে লন্ডন আই-এ। একই ভাবে ঠিক হয়েছে ‘কলকাতা আই’-এর উচ্চতা হবে ১০০ মিটার। তবে কতগুলি কেবিন হবে এবং ওই চত্বরে কী কী থাকবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
তবে কলকাতা আই কোথায় তৈরি হবে, তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে টালবাহানা চলেছে প্রায় দু’বছর। প্রথমে ঠিক হয়, হাওড়ার দিকে গঙ্গাতীরেই তৈরি হবে। সেই মতো সেখানে তিন একর মাপের দু’টি জমিও দেখা হয়েছিল। কিন্তু সমীক্ষা করে দেখা যায়, হাওড়ার দিকে কলকাতা আই তৈরি হলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এই প্রকল্পে উৎসাহ দেখাবে না। শেষ পর্যন্ত মিলেনিয়াম পার্কেই কলকাতা আই তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, আগামী বছরই কলকাতা পুরসভার ভোট। তার পরের বছরেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই মিলেনিয়াম পার্কে ‘কলকাতা আই’ তৈরির কাজ শেষ করতে চাইছে সরকার। বন্দর কর্তৃপক্ষ সবুজ সঙ্কেত দেওয়ায় তাতে সরকারের ইচ্ছেপূরণে আর কোনও বাধা থাকল না বলেই মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy