Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

‘ফেলুদা: ফিফটি ইয়ার্স অব রে’জ ডিটেকটিভ’। তাতেও চরিত্র হয়ে উঠেছে জয়সলমির, উটের গাড়ি, আর যাঁরা তৈরি করে চলেছেন ফেলুদা-ফিল্ম। সন্দীপ ও ললিতা রায় (সঙ্গে শ্যুটিংয়ের ছবিতে তাঁদের সঙ্গে পরিচালক) থেকে সব্যসাচী আবীর শাশ্বত ধৃতিমান প্রমুখ।

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

সাগ্নিকের তথ্যচিত্র: ফেলুদা ৫০

জয়পুর স্টেশনে উটের দুধের চা খেতে-খেতে ফেলুদাকে বলছিলেন জটায়ু, ‘উট! আশ্চর্য জানোয়ার!’ সত্যজিতের সোনার কেল্লা-র সে দৃশ্য চল্লিশ বছর পেরিয়ে যে ভাবে গেঁথে গিয়েছে বাঙালির স্মৃতিতে তাতে যেন শান দিতে স্রেফ ফেলুদাকে নিয়েই আস্ত একটা ছবি বানিয়ে ফেলেছেন সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়। ‘ফেলুদা: ফিফটি ইয়ার্স অব রে’জ ডিটেকটিভ’। তাতেও চরিত্র হয়ে উঠেছে জয়সলমির, উটের গাড়ি, আর যাঁরা তৈরি করে চলেছেন ফেলুদা-ফিল্ম। সন্দীপ ও ললিতা রায় (সঙ্গে শ্যুটিংয়ের ছবিতে তাঁদের সঙ্গে পরিচালক) থেকে সব্যসাচী আবীর শাশ্বত ধৃতিমান প্রমুখ। সত্যজিতের ফেলুদা সৌমিত্র, তোপসে সিদ্ধার্থ তো আছেনই, আছেন সোনার কেল্লা-র মুকুল কুশল চক্রবর্তী। সাক্ষাৎকারে আশিস নন্দী শ্যামা জায়দি’র মতো মানুষজন। ‘ফেলুদা প্রকাশনার পঞ্চাশ পূর্তিতে ইলাসট্রেশন, ফিল্ম-অডিয়ো ক্লিপিং এ রকম যাবতীয় উপাদান ব্যবহার করেছি। অসম্ভব ভালবাসা থেকেই বাঙালির প্রিয় আইকনকে নিয়ে ছবি করা, বিশেষত আমার বয়ঃসন্ধির পুত্রের মতো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছনোর জন্যে।’ পরিচালকের পাশাপাশি আনন্দিত সন্দীপ রায়ও: ‘এ ধরনের কাজ এই প্রথম।’ ইতিমধ্যেই ছবিটির প্রিমিয়ার হয়ে গিয়েছে নিউ ইয়র্কে, এ বারে দেখানো হবে হায়দরাবাদে বাংলা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে, ৩০ জুন-২ জুলাই। সেখানে সব্যসাচী চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে সে-ছবির সঙ্গে সন্দীপ রায়ের বড় পরদায় প্রথম ফেলুদা ‘বোম্বাইয়ের বোম্বেটে’। অধিকর্তা পার্থপ্রতিম মল্লিকের মতে, ‘আমাদের বেড়ে ওঠার সঙ্গে অচ্ছেদ্য ফেলুদা, তার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্‌যাপনে আমরা আহ্লাদিত।’ ছবি: সৌরদীপ রায়

শতবর্ষে

স্পেনের কবি খুয়ান রামোন খিমেনেস (১৮৮১-১৯৫৮) সাহিত্যে নোবেল পান ১৯৫৬ সালে। স্প্যানিশ ভাষায় গীতাঞ্জলি সহ রবীন্দ্রনাথের বেশ কয়েকটি কাব্য, ছোটগল্প ও নাটকের অনুবাদক খিমেনেস অবশ্য সবচেয়ে জনপ্রিয় তাঁর গদ্যকবিতামালা প্লাতেরো ই ইয়ো-র জন্য। আন্দালুসিয়ার ছোট্ট জনপদ মোগের-এ এক কিশোর ও রুপোলি রঙের এক গাধাকে নিয়ে দশ বছর ধরে লেখা এই কবিতাগুচ্ছ প্রকাশিত হয় ১৯১৭-য়। তারই শতবর্ষে কলকাতার স্প্যানিশ সাহিত্য চর্চাকেন্দ্র ‘লোস ইস্পানোফিলোস’-এর উদ্যোগে প্রকাশিত হল বইটির দ্বিভাষিক শতবর্ষ সংস্করণ প্লাতেরো আর আমি (অনুষা। অনুবাদ: শুক্তি রায়)। ২৪ জুন বিশ্ব স্প্যানিশ দিবসে দিল্লির ‘ইন্সতিতুতো সেরভান্তেস’-এ ছিল উদ্বোধন অনুষ্ঠান, সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ও খিমেনেসকে নিয়ে ‘লোস ইস্পানোফিলোস’-এর সদস্যদের পরিবেশনা ‘দুই কবি... এক সফর’।

প্রয়াণ

স্বাধীনতার পরই দেশে বিজ্ঞান সংগ্রহশালা গড়ায় উৎসাহ দেন জওহরলাল নেহরু, জি ডি বিড়লা, কে এস কৃষ্ণণ এবং বিধানচন্দ্র রায়। বেদপ্রকাশ বেরি, অমলেন্দু বসু এবং রমানাথন সুব্রহ্মণ্যম লেগে পড়েন কাজে। পিলানি, কলকাতা এবং দিল্লিতে গড়ে ওঠে সংগ্রহশালা। পরে এই শহরের তারামণ্ডলে যোগ দেন সুব্রহ্মণ্যম। হয়েছিলেন ডিরেক্টর জেনারেল। তার আগে তিনি ছিলেন চেন্নাইয়ের সরকারি সংগ্রহশালায়। কে এস কৃষ্ণণের অনুরোধে ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে যোগ দেন এবং গড়ে তোলেন সংগ্রহশালা। ১৯৬১-তে কৃষ্ণণের মৃত্যুর পর এম পি বিড়লা এবং হুমায়ুন কবিরের ডাকে কলকাতায়। তামিলনাডুর ধর্মপুরীতে জন্ম ১৯২৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ১৯৪৮-এ। লন্ডনের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ফেলো ১৯৬৩-তে। নতুন করে সেজে ওঠা তারামণ্ডল নিয়ে অনেক আশা ছিল ওঁর, কিন্তু তাঁর আগেই চলে গেলেন তিনি, মহাকাশের দেশে।

বাংলার ঐতিহ্য

১৯৯২ সালে তৈরি হয়েছিল গণেশ কবিগানের দল। মুখ্য গায়ক গণেশ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে, সঙ্গে আরও পাঁচজন। ভারতের নানা প্রান্তে কবিগান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে দলটি। একদা বিখ্যাত এই শিল্পমাধ্যমটির প্রকাশে তাঁদের আন্তরিকতা দেখা গেল আইসিসিআর-এ ২৩ জুনের অনুষ্ঠান ‘বাংলা কবিগান’-এ। পরে একই দিনে একই জায়গায় ছিল সল্টলেক নবনৃত্য ডান্স সেন্টার এবং দমদম সংশোধনাগারের নৃত্যানুষ্ঠান ‘রায়বেঁশে’ ও ‘বিহঙ্গ’। কোরিয়োগ্রাফি ও পরিচালনায় ছিলেন চিরন্তন ভাদুড়ী। ‘রায়বেঁশে’ বাংলার সুপরিচিত ‘মার্শাল ডান্স’, দমদম সংশোধনাগারের উপস্থাপনায় দেখা গেল তারই রূপায়ণ। আর ছিল ‘বিহঙ্গ’: দূষণে বিপন্ন-অস্তিত্ব পাখিদের বাঁচানর কথা মাথায় রেখে।

দ্বিশতবার্ষিকী

বাংলা সংবাদপত্র পা দিল দুশো বছরে। ১৮১৮ সালে শ্রীরামপুর থেকে প্রকাশিত হয় ‘দিগ্দর্শন’ ও ‘সমাচার দর্পণ’। এ দিকে পরাধীন দেশে কলকাতার কয়েকজন সাংবাদিকের উদ্যোগে ১৯৪৫-এ গড়ে ওঠে ‘কলকাতা প্রেস ক্লাব’, সাংবাদিকদের নিজস্ব সংস্থা। সাত দশকে বহু গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের সাক্ষী এই সংস্থা। এ বার তাদেরই উদ্যোগে প্রকাশিত হচ্ছে অর্ধশত নতুন-পুরনো লেখার সংকলন বাংলা সংবাদপত্রের দুশো বছর, সম্পাদনায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় অশোক সেনগুপ্ত স্নেহাশিস সুর। ৩০ জুন বেলা বারোটায় রবীন্দ্র সদনে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বইটি তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাতে।

অ-এ অজগর

আয় বাবা দেখে যা দুটো সাপ রেখে যা— বাবুরাম সাপুড়ের প্রতি অনুরোধ ছিল সুকুমার রায়ের। এ বার আর দুটো নয়, সেটা গিয়ে দাঁড়াল চুয়ান্নয়। ১৭৮ বছর বয়সি আলিপুর চিড়িয়াখানার ইতিহাসে এই প্রথম এক সঙ্গে এত জন নতুন অতিথির জন্ম হল। অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্তের কথায়, পাইথন বা অজগর হল তিন প্রজাতির। রেটিকুলেটেড, বার্মিজ ও রক। শেষ দুটি প্রজাতি মিলিয়েই এসেছে নতুন অতিথিরা। সর্পবিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরী জানালেন, মার্চ ও এপ্রিলে পাড়া ডিম সংগ্রহ করে পাঁচ সদস্যের এক কমিটি তৈরি করা হয়। প্যারাফিন ওয়াক্স, ফিল্টার পেপার, ফুড স্টার্চ— ইত্যাদি দিয়ে তৈরি বাসায় ডিম সংরক্ষণ করে নাগশিশুর জন্ম দেওয়া হয়। এ বাংলার অধিকাংশ এলাকায় যখন সাপ দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়, তখন মায়ের মমতায় ৫৪টি অজগরশিশুর জন্ম দেওয়া এবং তাদের লালনপালন কলকাতার পক্ষে গৌরবের কথা।

নবোদ্যমে

‘ভয় হয়, এত দিন ধরে কাজ করতে-করতে মরচে না ধরে যায়, শ্যাওলা না জড়িয়ে যায়, তাই নিত্য নতুন কাজে মেতে উঠি আমরা।’ নান্দীকার-এর ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বলছিলেন কর্ণধার রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত। নতুন নাটকের প্রস্তুতিপর্ব চলছে এখন তাঁদের, সোহিনী সেনগুপ্তের নির্দেশনায়। জাতীয় নাট্যোৎসবের আয়োজন আর নিজেদের স্মরণীয় সব প্রযোজনার পাশাপাশি দীর্ঘকাল ধরে প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত নাট্যচর্চা করে চলেছে এই ঐতিহ্যবাহী নাট্যগোষ্ঠীটি— শিশু-কিশোর, ফুটপাথ-বস্তিবাসী, সংশোধনাগারের বাসিন্দা, যৌনকর্মী... সমাজের সর্ব স্তরের মানুষকে নিয়ে। ২৯ জুন জন্মদিনে অ্যাকাডেমিতে সন্ধে সাড়ে ৬টায় তাঁদের ‘পাঞ্চজন্য’ নাটকের অভিনয়।

পঞ্চম স্মরণ

শচীন আর মীরা দেব বর্মনের ঘরে ১৯৩৯ সালের ২৭ জুন সকাল ৯-২৯ মিনিটে জন্ম হয়েছিল এক শিশুর। তখন তার ডাক নাম টুবলু ঠিক হলেও, কিছু দিন পর নাম হয় ‘পঞ্চম’, কারণ সে নাকি সব সময়েই পঞ্চম স্বরে কাঁদত! আরও একটা গল্প আছে। বাবা ‘সা’ গাইলেই ছেলে নাকি ‘পা’ গাইত, তাই অশোককুমার এই নামটা দিয়েছিলেন। পঞ্চম ওরফে রাহুল দেব বর্মনের ৭৯তম জন্মদিন উপলক্ষে অমিতকুমার ফ্যান ক্লাবের উদ্যোগে এই প্রথম নন্দন ৩-এ (শো ৩টে ও ৬টায়, চলবে ২৮ জুন পর্যন্ত) তাঁরই নামাঙ্কিত ফিল্মোৎসবের আয়োজন। আজ বিকেল পাঁচটায় উদ্বোধন করবেন সন্দীপ রায়। অন্য দিকে, ২৭ জুন, দুপুর ১২টায় সাদার্ন অ্যাভেনিউয়ে পঞ্চমের মূর্তির সামনে সুপর্ণকান্তি ঘোষ, রকেট মণ্ডল, রাঘব চট্টোপাধ্যায় ও সৌম্য ঘোষালের সুরে সংগীতশিল্পী রিনি-র ৬টি নতুন গানের অ্যালবাম ‘গল্প শুরু পঞ্চমের’ প্রকাশ করবেন সব্যসাচী চক্রবর্তী।

অভিনব

ফ্যাশন ডিজাইনার ঋকের চিরকাল অভিনবত্বের প্রতি আকর্ষণ। সেটা পোশাক তৈরিই হোক বা পোশাক প্রদর্শনীর জায়গা নির্বাচন! এ বার তাঁর সংস্থা ‘থ্রেডবাবা’ গড়িয়াহাট ট্রাম ডিপোয় একটি আস্ত ট্রামকে নতুন রঙ করে সাজিয়ে তার মধ্যে তাঁর তৈরি পোশাকের প্রদর্শনী আয়োজন করেছে। তিন দিনের প্রদর্শনীর আজই শেষ দিন (১২টা-৭টা)। যেখানে আম জনতা শুধু কেনাকাটাই করবেন না, সঙ্গে ওই ডিপো চত্বরে বাঙালি আড্ডার প্রিয় খাবারগুলো চেখে দেখবেন এবং গানবাজনা শুনে গুনগুনিয়ে বাড়ি ফিরবেন। ঋকের কথায়, ‘কলকাতার ঐতিহ্যের ট্রাম তো উঠে যেতে বসেছে। ট্রাম মানেই কলকাতার ইতিহাস— এই নস্টালজিক ব্যাপারটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ।’

রাষ্ট্রপতির ছবি

কাজটা চলেছে পাঁচ বছর ধরে। আরম্ভ আর্ট গ্যালারির ডাকে সাড়া দিয়েছেন উপমহাদেশের ৮৪ জন নবীন-প্রবীণ শিল্পী, কেউ এঁকেছেন ছবি, কেউ বা গড়েছেন ভাস্কর্য। বিষয় মূলত দেশের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জীবনের নানা অধ্যায়, সঙ্গে রাইসিনা হিলসের গুরুত্ব এবং ভারতীয় গণতন্ত্রের বহুত্ব। ৩০ জুন সকাল ১০-১০-এ অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এর গ্যালারি জু়ড়ে এই শিল্পসম্ভারের প্রদর্শনী শুরু, চলবে সাত দিন। রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে এর উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। এ দিনই রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেওয়া হবে দুটি বই— একটি তাঁকে নিয়ে আঁকা বিশিষ্ট শিল্পীদের ছবির সংগ্রহ ও অন্যটি তাঁর বিভিন্ন সময়ের আলোকচিত্রের সংকলন। সঙ্গে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছবির শিল্পী প্রকাশ কর্মকার।

পঞ্চানন বর্মা

১৯০৫ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ রংপুর শাখা প্রতিষ্ঠা করলে তিনি সদস্য হন। পরের বছরে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় রংপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা। ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন কোচবিহার রাজ্যে জন্ম তাঁর। খোসাল সরকার ও চম্পলা দেবীর সন্তান পঞ্চানন সরকার মাথাভাঙা হাইস্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করে কোচবিহার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এফ এ এবং সংস্কৃতে অনার্স নিয়ে বি এ এবং এম এ পাশ করেন। তিনি রংপুরে থাকাকালীন গঠিত হয়েছিল ‘রাজবংশী ক্ষত্রিয় সমিতি’। এই ক্ষত্রিয় আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এর পরেই তাঁর ‘সরকার’ থেকে ‘বর্মা’ পদবিতে উত্তরণ। তিনি ‘ঠাকুর পঞ্চানন’ নামেও পরিচিত হন। ১৯৩৫ সালে তাঁর প্রয়াণ। এ বার তাঁর সার্ধশতজন্মবর্ষ পূর্তি স্মরণে ৩০ জুন সকাল সাড়ে ১০টায় এশিয়াটিক সোসাইটির বিদ্যাসাগর হলে তাঁর জীবন ও কর্মের উপর এক আলোচনাচক্রের আয়োজন হয়েছে। উদ্বোধন করবেন দীনেশ ডাকুয়া। আলোচনায় থাকছেন প্রসেনজিৎ বর্মন, অন্নময়ী অধিকারী, সাংসদ বিজয় বর্মন প্রমুখ।

সন্ত কবির গান

লালন ফকিরেরও পাঁচশো বছর আগে, চতুর্দশ শতকের কাশ্মীরে সাধনা করেছিলেন সাধু লালী। লোকমুখে লাল, লাল দেদ, লাল্লা— বহু নামে পরিচিতা তিনি। বিবাহিতা, পরে গৃহত্যাগী; পরে গুরুসংসর্গ ত্যাগ করে নির্বস্ত্র বেরিয়ে পড়েন পথে। কাশ্মীরি ভাষায় রচনা করেছেন ১৮৪টি ‘বাখ’ বা কথা, যাতে বিধৃত অন্তরের অন্তরতমের অনুভূতি। প্রামাণ্য অধ্যাত্ম-ইতিহাস ঠাঁই না দিলেও, জনশ্রুতি ও লোকবিশ্বাসই সাতশো বছর ধরে বয়ে নিয়ে চলেছে সাধু লালীর বাখ। লালীর বাখগুলির ভাব স্মরণে বাংলায় গান বা পদ বেঁধেছেন শমীক ঘোষ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের শিক্ষক শমীকের ডাকে এগিয়ে এসেছে লোকসংস্কৃতি গবেষণা সংস্থা ‘দিশারী’, তৈরি হয়েছে অডিয়ো সিডি ‘উলঙ্গিনীর গাথা’। প্রকাশ অনুষ্ঠান ইন্দুমতী সভাগৃহে, ২৭ জুন সন্ধে ৬টায়।

হেমন্ত ৯৮

গুলজার বলেছিলেন, বিমল রায় মারা যাওয়ার পর আমরা যারা অনাথ হয়ে গিয়েছিলাম তাদের ডেকে নিয়েছিলেন হেমন্তদা। কলার দেওয়া, কনুই অবধি গোটানো সাদা শার্ট, ধুতি। গোটা মুম্বই মার্সিডিজ চালিয়ে ঘুরে বেড়াতেন, ডান হাতে রাজা মাপের সিগারেট। দলবল নিয়ে দুপুর কিংবা রাতের আড্ডায় গেয়ে উঠতেন কোলে হারমোনিয়াম নিয়ে— ‘দিয়ে গেনু বসন্তের এই গানখানি’। মান্না দে কলকাতার যে কোনও গানের অনুষ্ঠানে তাঁর সুর করা গান গাওয়ার আগে বলতেন, ‘মিষ্টি মানুষ, মিষ্টি সুরকার, মিষ্টি গায়ক হেমন্তবাবুর সুরের একটা গান শোনাই।’ লতা মঙ্গেশকর আশা ভোঁসলে দুই বোনই নাকি নিয়ম করে ভোরবেলায় ওঁর কোনও না কোনও একটা গান শুনতেন। ওঁরা মনে করেন যেন মন্দিরে বসে কোনও সাধু ভজন গাইছেন। সুভাষ মুখোপাধ্যায় লিখেছিলেন ‘আমার সবচেয়ে লম্বা দুই বন্ধু’। একজন তাঁর সহপাঠী হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তো বটেই, অন্য জন সত্যজিৎ রায়। ‘দেশ’ পত্রিকায় তাঁর অনেকগুলি ছোটগল্প বেরিয়েছিল, তখন তিনি ছিলেন ছোটগল্পকার। ‘পরদেশি কোথা যাও থাম গো হেথা’— এই গানই তাঁকে সেই চল্লিশের দশকে বাংলা গানের শ্রোতাদের হৃদয়ে পৌঁছে দিয়েছিল। আর তিনি এলেন দেখলেন জয় করলেন। আত্মবিস্মৃত বাঙালি তাঁর ৯৮তম জন্মদিন (১৬ জুন) কমবেশি বিস্মৃতির মধ্যে কাটিয়ে দিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE