কালিকাপ্রসাদকে মনে রেখে
শতাব্দী প্রায় শেষ হয়ে আসছে, নতুন শতাব্দীর শুরু, ১৯৯৯। তখন একদিন স্টুডেন্টস হল-এ গান শুনিয়েছিলেন কালিকাপ্রসাদ আর তাঁর ‘দোহার’— বাংলা আর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লোকসংগীত। আমন্ত্রণ পত্রে লেখা ছিল ‘আমি কেবল গেয়ে বেড়াই চাই নে হতে আরো বড়ো’। অফুরান প্রাণশক্তি ছিল তাঁর, সব সময় তাতিয়ে রাখতেন দোহার-কে। কুশীলবদের টেনে এনে সসম্মানে প্রতিষ্ঠা করতেন... কেউ ট্রেনে সারিন্দা বাজিয়ে গান গেয়ে জীবিকা অর্জন করতেন, কেউ অর্থকষ্টে জর্জরিত তালবাদ্যের দক্ষ শিল্পী, কেউ-বা অনন্য অথচ হারিয়ে যাচ্ছিলেন অপরিচিতের ভিড়ে। ‘মাঠে-ঘাটে ছুটে বেড়ানো কালিকার দুটো চোখ গুণীর সন্ধানে সদাজাগ্রত ছিল।’ লিখেছেন ঋতচেতা গোস্বামী আর অভীক মজুমদার, তাঁদের সম্পাদনাতেই দে’জ পাবলিশিং থেকে বেরচ্ছে জন্মদিনের কালিকাপ্রসাদ। অভীকই তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন শঙ্খ ঘোষের কাছে। ‘কোনো কোনো মানুষ যাকে এমন যে দেখামাত্রই একটা চিহ্ন রেখে যায়। ছেলেটিকে দেখে কেন যে মনে হল সেদিন এও তেমনি একজন।... যেন নিবিড় কোনো গ্রামসত্তা নিয়ে পৌঁছেছে এই নাগরিকতার দেশে। একটা সরল সটান উপস্থিতিতে সে সেই প্রথম দিনেই জয় করে নিয়েছিল আমাকে।’ শঙ্খ ঘোষের এ-লেখা সহ বইটিতে থাকছে কালিকার কাজকর্ম, সাধনা, ভাবনার পরিধি নিয়ে নানা লেখা, দুই বাংলার সংস্কৃতিমন্য মানুষজনের। আজ তাঁর (১৯৭০-২০১৭) জন্মদিনে রবীন্দ্রসদনে সন্ধে ৬টায় বইটি উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ। একই সঙ্গে দোহার-এর বন্ধুরা সহ বিশিষ্ট শিল্পীদের অনুষ্ঠান: জন্মদিনের কালিকাপ্রসাদ/ কথায় সুরে সোনা বন্ধুরে। আয়োজনে দে’জ ও দোহার।
শুধু সুন্দরবন
বৃষ্টির মিষ্টি জল মাটির লবণাক্ততা ধুয়ে দেয় বলেই সুন্দরবনের মানুষ বৃষ্টির জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকেন। এই অঞ্চলের কৃষির ক্ষেত্রে অতএব বৃষ্টির অনেকখানি ভূমিকা রয়েছে। এমনকী, কোনও কোনও অঞ্চলে বহু আগে থেকেই বৃষ্টির জল ধরে রেখে সেটি খাওয়া বা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করবার ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ ভারতীয় সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের তথ্য সংগ্রহের কোনও ব্যবস্থাই নেই! এমত বিষয় স্মরণে রেখেই এ বারের শুধু সুন্দরবন চর্চা পত্রিকাটি সাজানো হয়েছে এই অঞ্চলের বৃষ্টিপাতের নানা দিক নিয়ে। সুন্দরবনের বৃষ্টি...বৃষ্টির সুন্দরবন শিরোনামে এই সংখ্যায় আলোচিত হয়েছে এখানকার বর্ষাকালীন কৃষি, সমস্যা এবং সমাধান, পরিসংখ্যান আর দুর্যোগের সাতকাহন।
মহিষাসুরমর্দিনী
আজও আশ্বিনের শারদপ্রাতে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ শুনে বাঙালির ঘুম ভাঙে। রেডিয়ো-নির্ভরতা ঘুচে গিয়েছে কবে, তবু মহালয়া-র দিনটিতে ভোরবেলা বাণীকুমারের রচনা, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্তোত্রপাঠ, পঙ্কজকুমার মল্লিকের সুরসৃষ্টি শুনতে শুনতে বাঙালি বিভোর হয়ে যায়। এখন তো নির্বাচিত অংশের রেকর্ড বাজে, এক সময়ে বিশদে সরাসরি সম্প্রচার হত (সঙ্গে তারই মহড়ার ছবি)। অধুনা অশ্রুত তখনকার বেশ কিছু গান বা স্তোত্রপাঠ এক অনুষ্ঠানে পরিবেশন করবে পঙ্কজ মল্লিক মিউজিক অ্যান্ড আর্ট ফাউন্ডেশন, শ্রুতি নাটকের বিন্যাসে এক সাংগীতিক নাটকে— ‘শক্তি’, তাতে দুর্গতিনাশিনীর আধুনিক রূপটিও ধরা থাকবে। পঙ্কজকুমারের সুরকাঠামোর ভিত্তিতেই গাইবেন তাঁর দৌহিত্র-বধূ ঝিনুক গুপ্ত, আর সংকলন স্তোত্রপাঠ ও পরিচালনায় দৌহিত্র রাজীব গুপ্ত। গ্রন্থনায় ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রদর্শিত হবে দুর্লভ ছবিগুলিও। ১৬ সেপ্টেম্বর সিএলটি অবন মহলে সন্ধে সাড়ে ৬টায়।
জন্মদিন
বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব বিষ্ণু বসুর অভিভাবকত্বে যাত্রারম্ভ প্লেমেকার্স-এর, ১৯৯১-এর সেপ্টেম্বর। শুরুতেই মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের নাটক মঞ্চায়নের ভিতর দিয়ে চিনিয়ে দিয়েছিল নিজস্বতার দিকচিহ্ন। ২৭-এ পা দিচ্ছে নাট্যগোষ্ঠীটি, জন্মদিন পালন করবে ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর, পদাতিক লিটল থিয়েটারে (৬/৭ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড), প্রতি দিন বিকেল ৫টা থেকে। দু’দিনই আছে প্লেমেকার্স-এর নিজস্ব প্রযোজনা, প্রথম দিন নতুন নির্মাণ বৈঠকি প্রযোজনা ব্রাত্য বসুর ‘বিসর্জনের পরে’। পরের দিনও তাঁরই নাটক অবলম্বনে কৌস্তভ দত্তগুপ্ত পরিচালিত ‘কমরেড কথা’। এ ছাড়াও আছে অন্যান্য নাট্যগোষ্ঠীর ‘বিষছায়া’, ‘হ য ব র ল’, ‘তিন এক্কে তিন’। এই ‘পায়ে পায়ে সাতাশ’ জন্মোৎসবের উদ্বোধন করবেন ব্রাত্য বসু ১৫-য়। সে দিন আছে একটি আলোচনাও: ‘সাহিত্য থেকে থিয়েটার’।
কুমোরটুলি
কুমোরটুলির পরিচিতি অবশ্যই প্রতিমা নির্মাণ দিয়ে তবে তার সমধিক প্রসিদ্ধি দেবী দুর্গার মৃন্ময়ী রূপ নির্মাণ করে। মৃৎশিল্পের এই সুপ্রাচীন কর্মশালা সারা বিশ্বেই আদৃত ও বিস্ময়ের। এ বার নোট বাতিল, জি এস টি এবং বন্যার সাঁড়াশি আক্রমণে জগজ্জননী জেরবার। প্রবল সমস্যায় মূর্তিনির্মাণকারী শিল্পীরা। শুধু মৃৎশিল্পীরা নন, প্রতিমার অঙ্গসজ্জার শিল্পীরাও সমান ও গভীর সমস্যায়। মূর্তি নির্মাণের সমস্ত কাঁচামালের উপর জিএসটি চালু হওয়ায় এ বারে প্রতিমার খরচ অনেকটাই বেড়েছে। তার উপর বন্যা। সুতরাং মফস্সলের পুজো কমিটিগুলো কুমোরটুলির প্রতিমা এনে পুজো করার ভাবনা থেকে অনেকটাই পিছিয়ে এসেছে। এ বছর বহু প্রতিমার বায়নাই হয়নি যা সম্ভবত কুমোরটুলির ইতিহাসে রেকর্ড। এখানকার কমিটির সম্পাদক কার্তিক পাল গভীর হতাশার সঙ্গে বলেন, আর কত এই নিয়ে ইন্টারভিউ দেব বলুন? এ বছরের মতো সমস্যায় আগে কখনও পড়তে হয়নি। ষাট-সত্তর হাজারের প্রতিমা এখন আর পুজো-উদ্যোক্তারা কিনতে চাইছে না। ফলে বাধ্য হয়েই সে ধরনের মূর্তি স্টুডিয়োয় রেখে দিতে হয়েছে। তার উপর থিম পুজোর চাপ তো আছেই। সব মিলিয়ে কুমোরটুলি ঘোর অনিশ্চয়তায়।
দশ বছর
দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়া অঞ্চলের কিছু নাট্যদলকে সঙ্গী করে ২০০৭-এ যাত্রা শুরু করেছিল অশনি নাট্যম। সুজাতা সদনে প্রতি মাসের প্রথম শনিবার আয়োজিত হতে থাকে দুটি করে একাঙ্ক নাটক। ধীরে ধীরে বিভিন্ন জেলা এবং কলকাতার ৪২টি দল এদের সঙ্গী হল, মূলত যারা তথাকথিত ‘মাচা’য় থিয়েটার করেন। এই উদ্যোগে সুদূর বালুরঘাট, সিউড়ি, দক্ষিণেশ্বর, বারাসাত, নামখানা, কাকদ্বীপ এবং হাওড়ার অনেক দলের প্রযোজনা নজর কাড়ে। গত ২ সেপ্টেম্বর এদের দশম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে সুজাতা সদনে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠান। ছিলেন বিভাস চক্রবর্তী, অরুণ মুখোপাধ্যায়, ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়, সৌমিত্র বসু এবং ৪২টি নাট্যদলের বন্ধুরা। ছিলেন কলকাতা পুলিশের ‘প্রণাম’ প্রকল্পের প্রবীণ দর্শকরা। এদিন অভিনীত হল দুটি নাটক। একটি লু সুনের অনুপ্রেরণায় এক পাগলের ডায়েরি এবং দ্বিতীয়টি নাট্যভূমি’র প্রযোজনায় মহাশ্বেতা দেবীর রচনা অবলম্বনে আজীর, পরিচালনায় দেবাশিস চক্রবর্তী।
ভিন্ন মাত্রা
এত রক্ত কেন? ‘বিসর্জন’ নাটকে প্রশ্ন করেছিলেন জয়সিংহ। আজকের এই অস্থির বিষণ্ণ সময়ে যখন রক্তাক্ত চারিদিক, তখন এই প্রশ্ন নিয়ে এগিয়ে এসেছেন অনিরুদ্ধ ওরফে সাশা ঘোষাল। প্রেক্ষাপট বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ, যখন সন্দেহ আচ্ছন্ন করেছে মন, ধর্মান্ধতা ঢেকে দিয়েছে মনন, ব্যক্তিস্বাধীনতা আর সমষ্টিগত দায়বদ্ধতার দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত, প্রতিবাদী মন কোথাও ক্লান্ত কোথাও বা দিগভ্রান্ত, তখন ১৬ সেপ্টেম্বর ইজেডসিসি প্রেক্ষাগৃহে রবীন্দ্রনাথের নাট্যগীতির এক সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রার উপস্থাপনা।
এ বারে পূজা নয়, বোঝার পালা এক সমাজতাত্ত্বিক রবীন্দ্রনাথকে, যে রবীন্দ্রনাথ উগ্র জাতীয়তাবাদের বিপক্ষে, ধর্মান্ধতার বিপক্ষে, আত্মকেন্দ্রিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে বিশ্বমানবতার পক্ষে বলে গিয়েছেন বারবার, সেই রবীন্দ্রনাথকে ফিরে দেখার পালা। তাই ব্লু ক্লাউডস প্রোডাকশনস–এর প্রযোজনায় ‘রক্তাক্ত সময় কবির ছায়ায়— সাশা ঘোষাল লাইভ ইন কনসার্ট’।
হস্তশিল্প
মেক্সিকোয় এক বিশেষ গাছের ছাল থেকে বানানো কাগজই আসলে ‘আমাতে’, যা প্রাথমিক ভাবে ব্যবহৃত হত পুথি তৈরিতে। স্পেনীয় বিজয়ের পর আমাতে তৈরি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়, আমদানি শুরু হয় ইউরোপের কাগজ। কিন্তু আমাতে তৈরি কখনওই পুরো বন্ধ হয়নি, বিশেষ করে তা থেকে গিয়েছিল ‘জাদু-পুরোহিত’দের মধ্যে। এখন ওতোমি জনজাতির মানুষ বাণিজ্যিক ভাবে আমাতে তৈরি করেন, আর নাহুয়া শিল্পীরা উজ্জ্বল রঙের ব্যবহারে তা থেকে সৃষ্টি করেন জনপ্রিয় শিল্পকর্ম। মেক্সিকো সরকারও এই নতুন লোকশিল্পটির প্রচারে উদ্যোগী। এ বার দিল্লির মেক্সিকান দূতাবাস ও আইসিসিআর-এর যৌথ প্রয়াসে এই হস্তশিল্পের প্রদর্শনী ‘আমাতেস’ শুরু হয়েছে আইসিসিআর-এর অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রদর্শকক্ষে। চলবে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, রোজ ৩-৭টা। সঙ্গে তারই ছবি।
আরজে-র ডায়েরি
ভাবনার কবিতাগুলো নিয়ে বই না করে নানান সময়ে ফেসবুকে তুলে ধরেছেন। চেনা-অচেনা বন্ধু-স্বজনেরা সেই সব কবিতা পড়ে উৎসাহ দিয়েছেন রেডিয়ো জকি সেই কবিকে। এবং সেই উৎসাহেই ফেসবুকে লেখা নিজের একগুচ্ছ কবিতা নিয়ে কবি সুদীপ ভট্টাচার্য সিডি প্রকাশের ভাবনা শুরু করেন। এ শহরের বেশ কয়েক জন রেডিয়ো জকি এবং বাচিকশিল্পীর আবৃত্তিতে সুদীপের কবিতার প্রথম সিডি ‘আরজে-র ডায়েরি থেকে’ প্রকাশিত হল ৪ সেপ্টেম্বর, বাংলা আকাদেমিতে।
স্বাধীনতা
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে টিকিয়ে রাখা সর্বত্র ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। সরকারি হস্তক্ষেপ, বিজ্ঞাপন নির্ভরতা এ সব তো আছেই, তার সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে সংগঠিত ভাবে লেখক-শিল্পী-সাংবাদিকদের ভয় দেখানো, গণহিংসা, তদন্ত-দল বা কর-দফতরের হানা, আইনি ঝামেলা ইত্যাদি। এরই মধ্যে কী ভাবে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখা যায়, প্রসারিত করা যায় তাই নিয়েই সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস, কলকাতার উদ্যোগে ১০ লেক টেরেস-এর যদুনাথ ভবনে আয়োজিত হয়েছে সপ্তম অঞ্জন ঘোষ স্মারক আলোচনাসভা। ১৬ সেপ্টেম্বর সারা দিনের (সূচনা ১০-৪৫) এই আলোচনায় বিভিন্ন পর্বে থাকবেন পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা, সিদ্ধার্থ বরদরাজন, অনহিতা মজুমদার, সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, সতীশ দেশপাণ্ডে ও দীপঙ্কর সিংহ প্রমুখ।
প্রয়াণ
ডাক্তারি পাশ করলে চিকিৎসার দিকেই থাকে অধিকাংশের ঝোঁক, কিন্তু সুজিতকুমার চৌধুরী ছিলেন ব্যতিক্রমী। মেডিসিনে সেরা নম্বর পেয়েও শারীরবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করলেন, হয়ে উঠলেন এই শাস্ত্রের অন্যতম বিশেষজ্ঞ। মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক ছিলেন আড়াই দশকেরও বেশি। তাঁর ‘কনসাইজ মেডিক্যাল ফিজিওলজি’ বইটি (১৯৯১) এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এক প্রধান পাঠ্য। আরও দুটি বই লিখেছেন মেডিক্যাল ফার্মাকোলজির উপর। শারীরবিজ্ঞান মুখস্থের বিষয় নয়, ধারণার বিষয়। ‘যতক্ষণ না ছাত্রেরা বুঝছে, ততক্ষণ স্যর ছাড়তেন না,’ বললেন তাঁর এক প্রাক্তন ছাত্র, বর্তমানে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক। ‘আউট অব দ্য বক্স’ বা ছাঁচভাঙা চিন্তা করতে উৎসাহ দিতেন। অধুনা বাংলাদেশের রংপুর জেলার গাইবান্ধা গ্রামে তাঁর জন্ম। তরুণ বয়সে মার্ক্সবাদ তাঁকে আকর্ষণ করেছিল, পরে আকৃষ্ট হন বেদান্ত দর্শনের দিকে। রক্তের বিরল একটি রোগে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি চলে গেলেন, তিরাশি বছরে।
বারো স্বর
কবীর সুমন তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন, ‘শচীদুলাল দাশ বাংলা গানের এক জীবন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া। বাংলা আধুনিক গানকে এমন ভালবাসা আর ক’জন বাসতে পেরেছেন আমি জানি না। সেই সঙ্গে তিনি গীতিকার ও সুরকার।’ সংগীতস্রষ্টা অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘বাংলা গানের লিভিং আর্কাইভ’ হিসেবে দেখেন। এ বার শচীদুলালেরই প্রবাসী পুত্র ‘শোনার সোনার বাংলা গান’ অনলাইন ফোরামের সঞ্চালক শমিত দাশ উদ্যোগী হয়েছেন তাঁর বাবার লেখা কিছু গান এবং গীতি-কবিতার গানের সংকলন বের করতে। বাংলা ফিল্মে ও বেসিকে তাঁর লেখা কিছু গান আগে নানা সময়ে বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রকাশ পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাঁর ভাব-সমৃদ্ধ লিরিক অবলম্বনে বাংলা গানের বিশিষ্ট শিল্পীদের নিয়ে এমন সংকলন প্রকাশ অভিনব। শমিত তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে বর্তমানের বিশিষ্ট পাঁচ জন সুরকারকে দিয়ে তাঁর বাবার লেখা দশটি গানে সুর করান এবং শচীদুলালের নিজের সুরে দুটি গান বেছে মোট এক ডজন মৌলিক বাংলা গান, কলকাতা ও মুম্বইবাসী জনপ্রিয় বারো জন বাঙালি শিল্পীকে দিয়ে রেকর্ডিং করান। এ বার সেই সিডি সংকলনটি ‘বারো স্বর এক স্বনন’ (রাগা মিউজিক) প্রকাশিত হবে গ্যালারি গোল্ড-এ, ১৬ সেপ্টেম্বর, বিকেল ৫টায়। অনুষ্ঠানে আরতি মুখোপাধ্যায়, উষা উত্থুপ, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্ট শিল্পী উপস্থিত থাকবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy