Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

অভিনেতা হবেন, নিজেও ভাবেননি, ইচ্ছে ছিল যুদ্ধে যাওয়ার, যুদ্ধ-বিমানের পাইলট হবেন বা ট্যাঙ্ক চালাবেন, মা-র মত ছিল না। একদিন সকালে ব্যাগট্যাগ গুছিয়ে কলকাতায় চলে আসেন হঠাৎ, ষাটের দশক।

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

পোস্টারে বচ্চন নামা

ম নমোহন দেশাই ‘কুলি’র (সঙ্গে পোস্টার-এর ছবি) শেষটা বদলে দিয়েছিলেন, আগে ঠিক ছিল ছবি শেষ হবে অমিতাভ বচ্চনের মৃত্যুতে। ১৯৮২, সে ছবির শুটিংয়ে মারাত্মক জখমের পর যখন সুস্থ হলেন অমিতাভ, পরিচালক হিসেবে মনমোহন মনে করলেন, যে মানুষটা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে বেঁচে উঠলেন তাঁকে কিছুতেই রুপোলি পর্দায় মেরে ফেলা যায় না। অমিতাভের জীবন বরাবরই এ রকম ঘটনাবহুল। কত ব্যর্থতা বা খারাপ সময়ের ভিতর দিয়ে গিয়েছেন, ঠিক আবার ফিরে এসেছেন সাফল্যে, স্বমহিমায়। অভিনেতা হবেন, নিজেও ভাবেননি, ইচ্ছে ছিল যুদ্ধে যাওয়ার, যুদ্ধ-বিমানের পাইলট হবেন বা ট্যাঙ্ক চালাবেন, মা-র মত ছিল না। একদিন সকালে ব্যাগট্যাগ গুছিয়ে কলকাতায় চলে আসেন হঠাৎ, ষাটের দশক। শুনেছিলেন এ শহরে তরুণদের জন্য কাজের সুযোগ আছে, ভাল চেহারা আর কথা বলায় পারঙ্গম হলেই কাজ মেলে। ‘সেই ফেলে আসা দিনগুলো আজও মনে পড়ে। স্ট্রাগল-এর চমৎকার সময়, রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে তৈরি হয়ে ফাইল হাতে কাজ খুঁজতে বেরোতাম।’ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অমিতাভ। ফিল্মে তাঁর প্রথম রোজগার কলকাতার মৃণাল সেনের ছবিতেই, ‘ভুবন সোম’-এর নেপথ্যভাষ্যে। পরে সত্যজিৎও তাঁকে ভাষ্যকার করেন ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’তে। কলকাতাকে ভুলতে পারেন না অমিতাভ, প্রতি বছর আসেন কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবে। কলকাতাও তাঁকে কখনওই ভোলে না, এই তো তাঁর ফিল্মের পোস্টার সাজিয়ে প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আইসিসিআর-এ, তাঁর পঁচাত্তর পূর্তির জন্মদিনে, ১১ অক্টোবর (জন্ম ইলাহাবাদে, ১৯৪২)। ‘বচ্চন নামা’। চলবে ১৪ অবধি, প্রতিদিন ৩-৮টা। উদ্যোক্তা সুদীপ্ত চন্দ, দীর্ঘ দিনের পোস্টার সংগ্রাহক, তাঁর মূল্যবান সংগ্রহ থেকেই সাজানো হচ্ছে তাঁর প্রথম প্রদর্শনী। দু’-বছর পর অভিনয়-জীবনেরও সুবর্ণজয়ন্তী হবে অমিতাভের, প্রথম ছবি ‘সাত হিন্দুস্তানি’, ১৯৬৯-এ। হয়তো নিজেও ভাবতে পারেননি, সত্তর দশকের ‘সুপার স্টার’ রাজেশ খন্নাকে ছুটি করে দিয়ে তিনি হয়ে উঠবেন বলিউডের শাহেন শাহ। লন্ডনে মাদাম ত্যুসো-র মিউজিয়ামে মোম-মূর্তি আছে তাঁর। তবে তাঁর সম্পর্কে ফরাসি নবতরঙ্গের অবিসংবাদী পরিচালক প্রয়াত ফ্রাঁসোয়া ত্রুফো-র বিশেষণটিই শিরোধার্য: ‘ওয়ানম্যান ইন্ডাস্ট্রি’।

গবেষক

বাঙালি মহিলাদের অন্দরের কথা একের পর এক বইয়ে তিনি যখন প্রকাশ্যে আনছিলেন তখনও মানবীবিদ্যা চর্চার এত প্রসার হয়নি। তাঁর ‘ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল’ কি ‘অন্তঃপুরের আত্মকথা’, ‘মহিলা ডাক্তার/ ভিনগ্রহের বাসিন্দা’, ‘বিবাহবাসরের কাব্যকথা’, ‘আবরণে আভরণে ভারতীয় নারী’ বইগুলি দীর্ঘ গবেষণা ও অনুসন্ধিৎসার ফল। বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে মেয়েদের ভূমিকা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তাঁর কাজে। চিত্রা দেব (১৯৪৩-২০১৭) গ্রন্থরচনার পাশাপাশি সম্পাদনাও করেছেন সরলাবালা সরকারের রচনাসমগ্র। আদতে ত্রিপুরার মানুষ, জন্ম পূর্নিয়ায়। বাবার চাকরিসূত্রে ছোটবেলা কেটেছে বিহারে। প্রাইভেটে ম্যাট্রিক পাশ করে কলকাতায় আসা। গবেষণার সূচনাপর্বের অনেকটাই জুড়ে ছিল পুথিচর্চা। পুথির জগৎ থেকেই চলে এলেন ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে। পাশাপাশি চলল ‘বুদ্ধদেব কেমন দেখতে ছিলেন’ বা ছোটদের জন্য লেখালিখি। বাংলা আকাদেমির মানস রায়চৌধুরী পুরস্কার, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মশতবার্ষিকী পুরস্কার ও সৃজনী ভারত সাহিত্য সম্মাননা পেয়েছেন। দীর্ঘ অসুস্থতার পর প্রয়াত হলেন সম্প্রতি। ৫ নভেম্বর অহর্নিশের আয়োজনে ভবানীপুরে আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের বসতবাড়িতে তাঁর স্মরণসভা।

প্রয়াণ

‘অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।’ দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৯৪৯-২০১৭) চিরবিদায়ে বিষাদগ্রস্ত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ‘এমন মেধাবী, শিক্ষিত, দক্ষ অভিনেতা এ-বঙ্গে বিরল। অসম্ভব আনন্দ পেতাম ওর সঙ্গে অভিনয় করতে। নির্দেশক হিসেবেও নিশ্চিন্ত থাকতাম কারণ ও যে কোনও চরিত্র জীবন্ত করে তুলত, নিজে থেকে কনট্রিবিউট করত যা থিয়েটারে বাড়তি পাওনা।’ আর একটি দিন, কুরবানি, ছাড়িগঙ্গা, তৃতীয় অঙ্ক, অতএব... এ রকম বিভিন্ন নাটকে তাঁর সঙ্গে কাজের স্মৃতির পাশাপাশি সৌমিত্রর মুগ্ধ উল্লেখে দ্বিজেনের প্রথম পর্বের অভিনয়— দানসাগর, অমিতাক্ষর, নীলাম নীলাম। জন্ম কলকাতায়। গান্ধার ও থিয়েটার কমিউন-এ স্মরণীয় অভিনয়ের পাশাপাশি দেবাশিস মজুমদারের সঙ্গে শূদ্রক প্রতিষ্ঠা, অভিনয়ের সঙ্গে যুগ্ম নির্দেশনার শুরু। ১৯৮৪-তে সংস্তব প্রতিষ্ঠা, সেখানেই নির্দেশক ও প্রধান অভিনেতা ছিলেন আমৃত্যু, উল্লেখ্য প্রযোজনা— মুষ্ঠিযোগ, গুণধরের অসুখ, মনশ্চক্ষু, স্পর্ধাবর্ণ। এ ছাড়াও ফ্রিৎজ বেনেভিৎজ নির্দেশিত ‘গালিলেওর জীবন’, পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি-র ‘বলিদান’। আকাদেমি তাঁকে ‘দীনবন্ধু পুরস্কার’-এ সম্মানিত করে গত বছর। টিভি-সহ অভিনয় করেছেন সন্দীপ রায়ের ‘যেখানে ভূতের ভয়’ ও একাধিক ফেলুদা-য়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে। তরুণ মজুমদারের নতুন ছবি ‘ভালোবাসার বাড়ি’-তে তাঁর অভিনয় দেখার অপেক্ষায় এ-শহর।

অর্পণের দুর্গা

ছোটবেলা থেকেই মূর্তি তৈরির শখ বজবজের চৌদ্দো বছরের অর্পণ সর্দারের। সম্প্রতি সে রক্তের কর্কটরোগে আক্রান্ত, চিকিৎসা চলছে ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালে। কিন্তু অদম্য মনের জোর নিয়ে সে তৈরি করে ফেলেছিল একটি একচালা দুর্গামূর্তি। ইচ্ছে ছিল সেটি এই বিরাট শহরের কোনও একটি মণ্ডপে স্থান পাক! সেই সুযোগটি করে দিল ৬৬ পল্লি দুর্গাপূজা কমিটি। শিল্পী সুমি এবং শুভদীপ মজুমদারের ভাবনায় এবারে এই ক্লাবের মণ্ডপটি সেজে উঠেছিল বাংলার হারিয়ে যেতে বসা একটি শিল্পশৈলী ‘বহুরূপী’ নিয়ে। বড় দুর্গামূর্তির সঙ্গেই এখানে স্থান পেয়েছিল অর্পণের দুর্গামূর্তিটি (সঙ্গের ছবি)। পুজোর মধ্যে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে এই মূর্তিতেও। না, কোন সহানুভূতি নয়, ওর চাই মর্যাদা। এই শহরের দুর্গা উৎসবে হারিয়ে যাবে কি এমত অর্পণদের স্বপ্ন, নাকি সহস্র মানুষের ভালবাসায় এই ছোট্ট ছেলেটিই একদিন হয়ে উঠবে মস্ত বড় শিল্পী!

রায়বেঁশে

বাংলার ব্রতচারী আন্দোলনের নায়ক গুরুসদয় দত্তের বীজমন্ত্র ছিল জয় সোনার বাংলা। বাংলার অগণিত কিশোর-কিশোরীর মন এবং স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য তিনি জোর দিয়েছিলেন নিয়মিত শরীরচর্চায়। এজন্য তিনি প্রবর্তন করেছিলেন ব্রতচারী আন্দোলনের। এরই একটি অংশ ছিল বীরনৃত্য রায়বেঁশে। একে বাংলার যুদ্ধনৃত্য-ও বলা হয়ে থাকে। শোনা যায়, বীরভূমে এই রায়বেঁশের প্রথম উদ্ভব। সেকালের জমিদারদের লেঠেলরাই এই নৃত্যের প্রবর্তক। এক একখানি বড় বাঁশের সাহায্যে এই মল্লক্রীড়া অনুষ্ঠিত হত। ডান পায়ে থাকতো ঘুঙুর। ব্রতচারীর মাধ্যমে গুরুসদয় এই নৃত্যশৈলীকে বাঁচিয়ে রাখবার চেষ্টা করেছিলেন। এই নাচের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসের সঙ্গেই গুরুসদয় দত্ত এবং গঙ্গাসাগর-এর মতো বিষয়কে তথ্যচিত্রে ধরেছেন পরিচালক মনোজিৎ অধিকারী। সম্প্রতি রোটারি সদনে প্রদর্শিত হল গুরুসদয় দত্ত, গঙ্গাসাগর এবং রায়বেঁশে— দি ওয়ার ডান্স অব বেঙ্গল শিরোনামে তিনখানি তথ্যচিত্র।

ঋজু মনন

সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাসের চরিত্র তো বটেই, সুভাষ পঞ্চাশের দশকে তাঁর প্রথম গদ্যের বই আমার বাংলা তাঁকে উৎসর্গ করে লিখেছিলেন: বাংলার জেলে বন্দি কাশ্মীরের ছেলে জলিমোহন কলকে। চল্লিশের দশক থেকেই যুব সংগঠন বা কমিউনিস্ট পার্টিতে জড়িয়ে পড়ার সূত্রে নাটক লিখছেন, অভিনয় করছেন জলিমোহন, ওতপ্রোত হয়ে উঠছেন শ্রমিক আন্দোলনে, লিখছেন আন্দোলনের সেই গান ‘মজদুর হ্যায় হম’। ১৯৩৮-এ গাঁধীজির অহিংস পথের পক্ষে সওয়াল করেন, আবার সেই প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘দু-তিন বছরের মধ্যে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিলে আমার গান্ধীপন্থায় বিশ্বাস আর রইল না।... অদৃষ্টের এমন পরিহাস যে জীবনের অন্তিম পর্বে আবার গান্ধীজির ধ্যানধারণায় আশ্রয় খুঁজে চলেছি।’ কাশ্মীরি-পণ্ডিত বংশজ শ্যামমোহনের পুত্র জলিমোহনের (জ. ১৯২১) ভারতীয় দর্শন, ইংরেজি সাহিত্য, ফার্সি-উর্দু, পাশ্চাত্য সংগীত আর স্বদেশি আন্দোলনের পরিবেশে বেড়ে ওঠা। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল ও কলেজের কৃতী ছাত্র, প্রথম হয়েছিলেন সিনিয়র কেমব্রিজ-এ। বিয়ে করেন কিংবদন্তি কমিউনিস্ট নেত্রী মণিকুন্তলা সেনকে। ১৯৬৩-তে মতান্তরে পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। স্বেচ্ছাশ্রমের সঙ্গে ছিল সাংবাদিকতার কাজ। এখন ইউরোপের নতুন সাম্যবাদীদের ‘ইকোসোশ্যালিজম’-এর প্রতি প্রখর মনোযোগ। আত্মজীবনীর নাম দিয়েছিলেন ‘ইন সার্চ অব আ বেটার ওয়ার্ল্ড’। ২২ সেপ্টেম্বর সাতানব্বইয়ে সদ্য উপনীত জলিমোহন আজও চিন্তা ও মননে ঋজু, তাঁর প্রতিদিনের আশ্রয় রবীন্দ্রনাথের গান। সঙ্গের ছবিতে সুভাষ মুখোপাধ্যায় ও জলিমোহন কল।

মেধা অন্বেষণ

সুতানুটি পরিষদ, চোরবাগান গত ছাব্বিশ বছর ধরেই অঙ্গনওয়াড়ি সংগীত পরিভাষায় যাকে ‘কোর্ট মিউজিক’ বলা হয়, তার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রয়াসী। এই প্রয়াসেরই অঙ্গ হিসাবে আগামী ১১ ও ১২ নভেম্বর বিডন স্ট্রিটে ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়ির ঠাকুরদালানে ‘মেধা অন্বেষণ ২০১৭’ নামাঙ্কিত এক সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এর দুটি ভাগ— কণ্ঠসংগীত ও যন্ত্রসংগীত (সেতার ও সরোদ)। অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সীরা এতে যোগ দিতে পারবে, দুই বিভাগেই প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারী পঞ্চাশ ও পঁচিশ হাজার টাকা পুরস্কার পাবে। ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ভারতীয় রাগসংগীতের ২৬ তম মজলিশি আসরে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। যোগাযোগ chorebagan.sutanuti@gmail.com. অন্য দিকে, সুতানুটি পরিষদ, চোরবাগানের আয়োজনে ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শোভাবাজার রাজবাড়ির নাটমন্দিরে ‘আর্ট অব লিসনিং’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বিভিন্ন রাগের চলন ও তার রূপ উদাহরণ সহ দর্শক-শ্রোতাদের বোঝাবেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী।

অবিকল

তাঁর মিনিয়েচার দুর্গা প্রতিমা গড়ার বয়স তেরোতে পড়লেও, ২ ইঞ্চির মাটির কালী প্রতিমা (সঙ্গের ছবিতে) এ বছরই প্রথম! বরানগর বনহুগলির দে বাড়ির বাসিন্দা হরিসাধন বিশ্বাস ফাইন আর্টস নিয়ে ১৯৮১ সালে ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজ থেকে পাশ করেন। এর পর অ্যাড এজেন্সিতে কাজ করার সময়ই তাঁকে পেয়ে বসে মিনিয়েচারের নেশা। ২০০৪ থেকে এ যাবৎ তিনি বাইশটি হিন্দু দেবদেবীর মিনিয়েচার বানিয়েছেন।

খেয়ালে নূপুরে

এক শ্রোতা ও দর্শক বললেন, ‘অভূতপূর্ব’, আর একজন বললেন, ‘ভাবা যায় না’। এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়ার পিছনে কারণ হল, এই প্রথম বাংলা খেয়ালকে যুক্ত করা হল কত্থক নৃত্যের সঙ্গে। সুছন্দা সংগীতালয়ের ২৬তম বর্ষ উদ্‌যাপনে এই উদ্ভাবনী যুগলবন্দির এক দিকে ছিলেন স্বনামধন্য কবীর সুমন এবং অন্য দিকে বিশিষ্ট কত্থকশিল্পী সুরঙ্গমা দাশগুপ্ত ও তাঁর কন্যা লোকেশ্বরী দাশগুপ্ত। রাগ কিরওয়ানি, লতাঙ্গী আর যোগ-এ বিন্যস্ত বাংলা খেয়াল স্পন্দমান হয়ে উঠল কবীর সুমনের কণ্ঠে আর এই মগ্ন সংগীতকেই বাঙ্ময় করে তুললেন দুই কত্থকশিল্পী মঞ্চ জুড়ে তাঁদের নৃত্যের মাধ্যমে। যুগলবন্দি যখন শেষ হল, তখনও আবহে ভাসছে খেয়ালের স্পন্দন আর নূপুরের নিক্কণ।

অভিনেতা

অভিনয়টা তাঁর রক্তে। ‘অ্যাকশন’, ‘কাট’ বা ‘ফাইনাল বেল’-এর মতো সিনেমা-নাটকের নানান পরিভাষা শুনতে শুনতে তিনি বড় হয়েছেন। ছেলেবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ। তাঁর দাদু প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব জোছন দস্তিদার। আর মা খেয়ালি দস্তিদার মঞ্চের বিশিষ্ট অভিনেত্রী। চার বছর বয়সেই দাদুর হাত ধরে ‘বানজারা’ নাটকে অভিনয়। প্রয়াত পরিচালক দেবাংশু সেনগুপ্তর ছেলে আদিত্য সেনগুপ্ত অভিনয়ের মতো মিউজিকেও সমান পারদর্শী। মিউজিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট বাজানোতে তো তাঁর জুড়ি মেলা ভার। পঁচিশেরও বেশি পেশাদার নাটকের অভিনেতা বলছিলেন, ‘ছেলেবেলায় অভিনয়ে এতটাই স্পৃহা ছিল, চার্বাক-এর রিহার্সাল রুমে দৌড়ে এসে দাদুকে বলতাম, দাদু, আমার নাম ডেকেছ?’ বুশকা (ডাকনাম) পড়াশোনাতে তো ভালই, কুইজ, এলোকিউশনেও তুখোড়। অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চ স্কুলের সেরা ছাত্র। সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং ভিডিয়োগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করে, কেমব্রিজ স্কুল অব আর্ট থেকে টিভি প্রোডাকশন এবং ডিরেকশন-এ মাস্টার্স করেছেন। ভবিষ্যতে তিনি ক্যামেরার পিছনেই কাজ করতে চান, সামনে নয়। ‘আমি সিনেমার পোকা। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি কোনও কিছুই বাছবিচার করি না, সবই চেটেপুটে সাবাড় করি। অদূর ভবিষ্যতে ছবি পরিচালনাতে আসার খুব ইচ্ছে।’ এ বার তিনিই অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত, উইনডোজ প্রোডাকশন হাউস ও গণপতি প্রোডাকশনের ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করে দর্শকের নজর কেড়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE