Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

শুরু হল নান্দীকার-এর ভারত আবিষ্কার— জাতীয় নাট্যোৎসব। সারা দেশের যে বৈচিত্র আর ব্যাপ্তি তাই তো উঠে আসে আমাদের থিয়েটারে, নানান ধরনের থিয়েটারে নিত্য যুক্ত হতে থাকে কত রকমের সাংস্কৃতিক সামাজিক ক্রিয়াকাণ্ড।

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৩৬
Share: Save:

নান্দীকারের নাট্যোৎসব

এ বার ৩৪তম বর্ষ। আরম্ভ ১৯৮৪, নান্দীকার-এর রজতজয়ন্তী বর্ষে। কর্ণধার রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তকে সুব্রত পাল (সম্পাদক) এসে প্রস্তাব দিলেন ‘নিজেরাই নিজেদের দেখাচ্ছি, এ বার অন্যদের দেখালে হত না?’ শুরু হল নান্দীকার-এর ভারত আবিষ্কার— জাতীয় নাট্যোৎসব। সারা দেশের যে বৈচিত্র আর ব্যাপ্তি তাই তো উঠে আসে আমাদের থিয়েটারে, নানান ধরনের থিয়েটারে নিত্য যুক্ত হতে থাকে কত রকমের সাংস্কৃতিক সামাজিক ক্রিয়াকাণ্ড। ‘থিয়েটার করা মানে তো মুখে রং মাখা নয়, দৈনন্দিন বাঁচা বা মূল্যবোধের কাছে দায়বদ্ধ থাকা। সে দায় থেকেই লাগাতার করে গিয়েছি এ নাট্যোৎসব, প্রথমে শুধুই ভিন্ন প্রদেশের নাটক থাকত, এখন পশ্চিমবঙ্গের নাটকেরও নিয়মিত ঠাঁই। সরকারি অনুদান নিশ্চয়ই থাকে, বিভিন্ন সংস্থা বা মানুষজনের সাহায্যও থাকে, কিন্তু ব্যয়ভার বিপুল, তবু কখনও ছাড়িনি এ উৎসব।’ রুদ্রবাবুর সংকল্পে সাড়া দিতেই কানহাইলাল রচিত-নির্দেশিত মণিপুরের কলাক্ষেত্র-র নাটক দেখবে এ বার কলকাতার দর্শক। সম্মাননা জ্ঞাপন করা হবে সাবিত্রী হেইস্নামকে। আছে দিল্লির এনএসডি, হায়দরাবাদ, মুম্বই, বা বাঁকুড়ার নাটক। কলকাতার সংসৃতি-র ‘সওদাগরের নৌকা’, স্বপ্নসন্ধানী-র ‘নির্ভয়া’, মিনার্ভা নাট্যসংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র-র ‘খড়ির গণ্ডি’, নান্দীকার-এর ‘রানি কাদম্বিনী’ (সঙ্গের ছবিতে সে নাটকে কাদম্বিনীর ভূমিকায় সোহিনী সেনগুপ্ত), বা এ রকম আরও নাটক। প্রদর্শনীর বিষয়: উৎস— শিকড়ের সন্ধান। ১৬-২৫ ডিসেম্বর অ্যাকাডেমিতে। ‘সারা দেশে আজ অশান্ত অসহিষ্ণু পরিস্থিতি, অথচ নীরব হয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রী, বিপন্ন নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তাঁর প্রতি আবেদন থেকেই এই ভারতীয় নাট্যোৎসব।’ মনে করেন রুদ্রপ্রসাদ।

ভুলের তত্ত্ব

আচার্য রামানুজ ও আচার্য অভিনবগুপ্তের জন্ম সহস্রাব্দ চলছে। যথাক্রমে ভারতের দক্ষিণ ও উত্তর প্রান্তের এই দুই বরেণ্য দার্শনিকের মৌলিক মনন ও উন্মোচনকে সম্মান জানানোর জন্য দ্য সংস্কৃত কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি ১৭ ডিসেম্বর একটি আলোচনাসভার আয়োজন করেছে। সে দিন বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাসাগর সভাগৃহে বলবেন দার্শনিক অরিন্দম চক্রবর্তী, বিষয়: ‘হোয়াট ক্যান উই লার্ন ফ্রম আওয়ার মিসটেকস? কম্পেয়ারিং রামানুজাজ অ্যান্ড অভিনবগুপ্তাজ থিয়োরিজ অব এরর’। শোনা যাবে ভুল জানা নিয়ে প্রাচ্যের দুটি প্রাচীন চিন্তার নানামুখী বিশ্লেষণ। সভামুখ্য পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, প্রধান অতিথি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যাপক স্বপন চক্রবর্তী।

সম্মাননা

তিনি চিত্রশিল্পী। চারুকলা ও ভাস্কর্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন সরকারি আর্ট কলেজে। দেশে ও বিদেশে তাঁর ছবির একক প্রদর্শনীর সংখ্যা পনেরোর বেশি, যৌথ প্রদর্শনীও কুড়ির অধিক। এখনও পর্যন্ত ৪৬টি নাটকের মঞ্চসজ্জা করেছেন, ১২টি সিনেমার শিল্প নির্দেশক তিনি— কাজ চলছে বেশ কিছুর। তিনি কবিতা লেখেন, ছবি নিয়ে প্রবন্ধ, স্মৃতিকথাও লিখেছেন। বেরিয়েছে ১৬টি বই। শিল্পী হিরণ মিত্রের আর একটি পরিচয়— লিটল ম্যাগাজিনের তিনি অকৃত্রিম বন্ধু। বাহাত্তর ছোঁওয়া এই শিল্পীর ঋজু ব্রাশ-স্ট্রোকে সাদা-কালো আর লালের বিমূর্ত চলন পত্রিকা অথবা বইয়ের প্রচ্ছদকে দিয়েছে স্ব-পরিচিতি। তাঁর হাতে ‘অহর্নিশ’ পত্রিকার পক্ষ থেকে ‘অহর্নিশ সম্মাননা ২০১৭’ তুলে দেবেন শঙ্খ ঘোষ। ১৪ ডিসেম্বর, বিকেল সাড়ে পাঁচটায়, জীবনানন্দ সভাঘরে। দেখানো হবে তাঁকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র ‘শ্রবণের চিত্ররূপ’, নির্দেশক অরিন্দম সাহা সর্দার। ছবি অর্ক চক্রবর্তী।

কলাক্রান্তি

১৯৯১ সাল থেকে গৌরীকণা দেবীর স্মৃতিতে ‘কলাক্রান্তি’ সাংস্কৃতিক জগতে নানা ভাষাভাষীর নাট্যদলকে একত্র করার উদ্দেশ্যে বহুভাষিক ছোট নাটক প্রতিযোগিতা করে চলেছে। দেশে এই ধরনের উদ্যোগে সম্ভবত তারাই পথিকৃৎ। প্রতি বছরের মতো তারা এই বছরও ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর মুক্তাঙ্গন রঙ্গালয়ে নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে। প্রথম দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শম্ভু মিত্রের স্মরণে এক চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে উৎসব উদ্বোধন হবে। তার পর সন্ধে ৬টায় দেখা যাবে হিন্দি নাটক। দ্বিতীয় দিন সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু। সন্ধে ৭টায় অনিমেষকান্তি ঘোষাল রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘তস্কর’ মঞ্চস্থ হবে। উৎসব শেষ হবে ইংরেজি নাটক দিয়ে। নানা ভাষা মিলিয়ে মোট ১২টি নাটক এ বারের প্রতিযোগিতায় মঞ্চস্থ হবে।

শিশুতীর্থ

গীতিনাট্য থেকে নৃত্যনাট্যের যুগে পদার্পণের অন্যতম সোপান রবীন্দ্রনাথের ‘শিশুতীর্থ’। কাব্য-গীতি-নৃত্য-অভিনয়ের সমন্বয়ে রচিত শিশুতীর্থের এই নৃত্যনাট্য রূপটি তিনি সৃষ্টি করেন ১৯৩১ সালে। একাধিক মঞ্চে এটি উপস্থাপনও করেন। তার পর ৮৫ বছর ধরে শিশুতীর্থের কাব্যরূপটি মঞ্চস্থ হয়ে এসেছে, কিন্তু নৃত্যনাট্যের রূপটি পরিবেশিত হয়েছে বলে জানা যায় না। ২০১৭-র এপ্রিলে রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ‘সুরঝংকার’ পুণেতে এই নৃত্যনাট্যটি মঞ্চস্থ করে। এ বার তারাই কলকাতায় ‘শিশুতীর্থ’ নৃত্যনাট্যটি শিল্পী ও সংগীতগুরু অমিত মিত্রের পরিচালনায় পরিবেশন করবে ১৫ ডিসেম্বর সন্ধে ৭টায় রবীন্দ্রসদনে। পুণের নৃত্যশিক্ষার প্রতিষ্ঠান ‘নৃত্যপ্রেরণা’র পরিচালক ভরতনাট্যম শিল্পী সুচিত্রা দাতে ও বাচিক শিল্পী জয়িতা ভট্টাচার্যের সহযোগিতায় পরিবেশিত হবে এই নৃত্যনাট্যটি। নৃত্যে থাকবেন মরাঠি শিল্পীরাই।

জগৎসভায়

এ বার ১৭৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত ফ্রান্সের লা রশেল-এ বিশ্ববিখ্যাত ‘আকাদেমি দে বেল লেৎতর, সিয়াঁস এ আর’ সম্মান জানাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ফরাসিবিদ চিন্ময় গুহকে। বিষয় ছিল ‘আঁ কেত দ্যঁ নুভেল এসপাস’ (নতুন পরিসরের সন্ধানে)। মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রিতে অনুষ্ঠিত, ফরাসি ভাষায় প্রদত্ত এই বক্তৃতা আকাদেমিতে কোনও ভারতীয়ের প্রথম বক্তৃতা। সভাপতিত্ব করেন পাসকাল এভাঁ। প্রসঙ্গত, ফরাসি থেকে ইংরেজি ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় অনূদিত সাহিত্যের জন্য এ বছর ফরাসি দূতাবাস প্রবর্তিত প্রথম রম্যাঁ রলাঁ স্মারক পুরস্কারের অন্যতম বিচারক চিন্ময় গুহ। এই পুরস্কার ঘোষিত হবে ২৮ জানুয়ারি জয়পুর সাহিত্য উৎসবে। ১৫ ডিসেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় তিনি আলিয়াঁস ফ্রাঁসেজ-এ বলবেন সতেরো শতকের কয়েক জন দার্শনিক ও মরালিস্ত সম্পর্কে, যাঁদের মধ্যে আছেন ব্লেজ পাসকাল, লা ব্র্যুইয়ের ও লা রোশফুকো। পাঠ করবেন পাসকালের ‘পাঁসে’ ও লা রোশফুকোর ‘মাক্সিম’ থেকে।

বিশেষ বক্তৃতা

এক দিকে তিনি মন ও ভাষার দর্শন চর্চা করেন। অন্য দিকে রাজনৈতিক দর্শন ও নৈতিক মনোবিজ্ঞানের জগতেও তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক, রোডস স্কলার, অক্সফোর্ড ও শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রের শিক্ষকতা মিশিগান ও শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি দার্শনিকের চোখে সমকালীন রাজনীতিতে সমাজ ও সংস্কৃতির প্রভাবকে দেখার পক্ষপাতী। বিলিফ অ্যান্ড মিনিং, সেলফ নলেজ অ্যান্ড রিসেন্টমেন্ট, ও সেকুলারিজম, আইডেন্টিটি অ্যান্ড এনচ্যান্টমেন্ট শীর্ষক বইগুলির প্রণেতা ভারতীয় দার্শনিক আকিল বিলগ্রামি ১৫ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে তিনটেয় একাদশতম রবীন্দ্রভারতী বিশেষ বক্তৃতা দেবেন মরকতকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। বক্তৃতার বিষয়: ‘ইজ দেয়ার এনি ইন্ডিয়ান সেকুলারিজম?’

শঙ্খচিলের সন্ধানে

হেমাঙ্গ বিশ্বাসের মতো প্রবাদপ্রতিম শিল্পী এপার-ওপার দুই বাংলার সংগীতরসিক মানুষের কাছেই শুধু নন, অসমের গানের জগতেও প্রাণের পটুয়া। তাঁর লোকগান, ভারতীয় গণনাট্য সংঘে সৃষ্টিশীল অবদান, আপসকামিতার বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই, প্রতিবাদী স্বর আজও তাঁকে স্মরণীয় করে রেখেছে। ‘শঙ্খচিল’ বা ‘জন হেনরি’-র সেই কালজয়ী গায়কের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসাবে তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে জীবনীচিত্র: ‘শঙ্খচিলের সন্ধানে’। শৌভিক সাংস্কৃতিক চক্রের এই প্রয়াসটির সামগ্রিক ভাবনায় ও হেমাঙ্গ বিশ্বাসের চরিত্র চিত্রণে গৌতম মুখোপাধ্যায়। হেমাঙ্গ বিশ্বাসের জন্মদিন ১৪ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় তপন থিয়েটারে (তাপস-জ্ঞানেশ সভাগৃহে) দেখানো হবে ছবিটি।

জীবনদর্শন

শিল্পী মিলবার্ন চেরিয়ান পড়াশোনা করেছেন অমদাবাদের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনে। ইউরোপের প্রাক-নবজাগরণ শিল্পীদের সঙ্গে দালি তাঁকে যথেষ্ট প্রভাবিত করেছেন। বিশেষ করে ডাচ শিল্পী পিটার ব্রুগেল-এর কাজ দেখেই তিনি ছবি আঁকা শুরু করেন। দেশবিদেশের শিল্পরসিক মহলে তিনি নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছেন। বাইবেলের নানা বিষয় তিনি চিত্রিত করেছেন, তাঁর অ্যাক্রিলিক চিত্রে নিজস্ব জীবনদর্শনের প্রকাশ। ২০০৪-এ যিশুখ্রিস্টকে নিয়ে আঁকা তাঁর ‘দ্য হিলিং’ ছবিটি (সঙ্গে তারই অংশ) নানা দেশে প্রদর্শিত হওয়ার পর এ বার কলকাতায়। ভ্যাটিকান এই ছবিটি রাখতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। এটি-সহ তাঁর অনেকগুলি কাজ দেখা যাবে ১২-১৮ ডিসেম্বর, অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ ‘ওল্ড ওয়ার্ল্ড— নিউ প্যালেট’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে।

কোরিয়া থেকে

সুন্দর সাজানো রেস্তোরাঁ হঠাৎ পরিণত হয় গভীর সমুদ্রে! চোখের সামনে রকমারি মাছ, জেলিফিশ আরও কত কী! এ দিকে এই রেস্তোরাঁতেই কিন্তু তৈরি হয় সেরা খাবার। কোরিয়ার বিবপ সংগীত দলের পরিবেশনায় কলকাতা শহরে এই প্রথম বারের জন্য অনুষ্ঠিত হল শেফ প্রযোজনাটি। টেস্টি কোরিয়ার এই প্রযোজনায় সুসি, চিকেন নুডল, পিৎজা ইত্যাদি তৈরির মধ্য দিয়ে চলতে থাকে নাটকের যাত্রা। সঙ্গে ফোলি আর্টিস্টের মতো শুধু মুখ দিয়ে বিচিত্র শব্দ প্রক্ষেপণ অবাক করে দেয়! গান, নাচ, অভিনয়, হাস্যরস, ভল্ট— অনবদ্য প্রযোজনা। উদ্যোগে কলকাতা এবং দিল্লির কোরীয় দূতাবাস।

মূকাভিনয়

ইডেনে জাতীয় যুব উৎসবে ভি বালসারার পর অনুষ্ঠান করতে উঠতেই চার দিক থেকে জুতোর বৃষ্টি, করজোড়ে তাঁদের কাছে পাঁচ মিনিট সময় চেয়ে মূকাভিনয় করতেই দর্শক শান্ত। স্মৃতি রোমন্থন করছিলেন যোগেশ দত্ত। ছোটবেলায় নানা কাজে দিন গুজরান, পরে রোজ রবীন্দ্র সরোবরে ঘুরতে আসা মানুষের নানান দৃশ্য ব্যঙ্গকৌতুকে রপ্ত করতেন। স্টুডেন্টস্ হলে প্রথম ব্যঙ্গকৌতুক দেখানো, পরের বছর ১৯৫৬-য় বালিতে প্রথম মঞ্চে মূকাভিনয়। ’৬৮-তে বিশ্ব যুব ও ছাত্র উৎসবে বুলগেরিয়ার সোফিয়ায় আমন্ত্রিত। ’৭১-এ ‘পদাবলী’ প্রতিষ্ঠা, ’৭৫-এ নামকরণ ‘যোগেশ মাইম একাডেমি’। সংগীত নাটক অকাদেমি ও শিরোমণি পুরস্কারসহ বহু সম্মান তাঁর ঝুলিতে। ২০০৯-এ রবীন্দ্র সদনে শেষ মূকাভিনয় করে মঞ্চকে বিদায় জানিয়ে নিজেকে নিয়োজিত করেন একাডেমির কাজে। সম্প্রতি তিন দিনের ৩৯তম মূকাভিনয় উৎসব পালিত হল কালীঘাটের যোগেশ মাইম একাডেমি (পদাবলী) হলে।

ব্যতিক্রমী

তিনি ব্যতিক্রমী। তিনি এমন এমন বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পটু, যেখানে মেয়েদের সচরাচর দেখাই যায় না। তিনি যেমন পিয়ানো-অ্যাকর্ডিয়ান বা পিয়ানো বাজাতে পারেন, তেমনই আবার মেলোডিকা, মাউথ-অরগানের মতো ওকারিনা-য় সুর ভাঁজতেও পারেন। তিনি গানের কথা লেখেন, আবার সুরও করেন। তিনি বাদ্যযন্ত্রের শিক্ষক আবার সংগীত অ্যারে়ঞ্জারও। পুতুলখেলার বয়স থেকে সংগীতই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। তবে ছেলেবেলায় তিনি পুতুল খুব একটা খেলতেন না, খেলার পরিবর্তে মায়ের কাছে গানের রেওয়াজ করতেন। ক্লাস টেনে পড়ার সময়ই তাঁর কণ্ঠসংগীতের পরীক্ষা দেওয়া হয়ে যায়। মন্দিরা লাহিড়ির কাছে দীর্ঘ দিন কণ্ঠসংগীতে তালিম নিয়েছেন। পিয়ানো-অ্যাকর্ডিয়ান বাদক শাঁওলী সেনের ছেলেবেলায় শখ ছিল পিয়ানো বাজানো, কিন্তু ‘মা বললেন, দেখ তুই যদি পিয়ানো-অ্যাকর্ডিয়ান শিখতে চাস, তা হলে দাদার (ভি বালসারা) কাছে নিয়ে যাব।’ বালসারাজি তাঁকে আমৃত্যু তালিম দিয়েছেন। ‘বিভিন্ন নিউজ পেপার থেকে কৃতী মহিলাদের ছবি কেটে কেটে একটি খাতায় সাঁটিয়ে রাখতেন। আমাকে সেই ছবি দেখিয়ে মোটিভেট করতেন। বলতেন, দ্যাখ, ওঁরা পারলে তুই কেন পারবি না। তোকেও পারতে হবে।’ বলছিলেন শিল্পী। মা সুষমা সেন ছিলেন ভি বালসারার ভোকাল গ্রুপ ‘সাজ ও আওয়াজ’-এর বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী। আর বাবা অরুণকুমার সেন ছিলেন জেলা জজ। জন্ম হাওড়ায় হলেও বাবার বদলির কাজের সুবাদে তিনি অনেকটা সময় কাটিয়েছেন ‘প্রকৃতির কোলে’ উত্তরবঙ্গে। এ বার তিনি মাউথ-অরগান এবং ওকারিনা— এই দুটো যন্ত্র ব্যবহার করে একটি যন্ত্রসংগীতের সিডি প্রকাশ করতে চলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE