Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

এ বারে হুগলি নদীপথ ধরে বাটানগর থেকে চন্দননগর, আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত প্রায় কুড়িটি জায়গায় থেমে আন্তর্জাতিক স্তরের শিল্পী, লেখক এবং আলোকচিত্রীরা পরিচিত হলেন এখানকার বিশিষ্ট মানুষজন এবং আঞ্চলিক সংস্কৃতির সঙ্গে।

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৪০
Share: Save:

দুই নদীর যুগলবন্দি

হুগলি এবং টেমস নদীকে যুগলবন্দি করেই ‘সিল্ক রিভার’ উৎসবের আয়োজন ইউকে-ইন্ডিয়া ইয়ার-এর অংশ হিসেবে। মূল অনুষ্ঠানটি দুটি ভাগে। ১৫-২৪ সেপ্টেম্বর এমন যাত্রা হয়েছে টেমস নদীকে কেন্দ্র করে। সেখানকার উৎসবের শিল্পকর্ম এসেছে এখানে। এ বারে হুগলি নদীপথ ধরে বাটানগর থেকে চন্দননগর, আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত প্রায় কুড়িটি জায়গায় থেমে আন্তর্জাতিক স্তরের শিল্পী, লেখক এবং আলোকচিত্রীরা পরিচিত হলেন এখানকার বিশিষ্ট মানুষজন এবং আঞ্চলিক সংস্কৃতির সঙ্গে। সেই সঙ্গে প্রতি দিন ব্লগে লেখা হল এই যাত্রার বিবরণ। ৬ ডিসেম্বর শুরু হয়ে এই যাত্রা চলল ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সমগ্র যাত্রায় শিল্পীদের তুলিতে সেজে উঠল ২০টি বিশাল সিল্কের নিশান। যেগুলি ১৬ ডিসেম্বর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে সমাপ্তি অনুষ্ঠানে দেখা গেল, তার পর ১৯ ডিসেম্বর থেকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সেন্ট্রাল হলে প্রদর্শিত হবে (সঙ্গে মুর্শিদাবাদে তোলা তারই ছবি)। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ছিল বাংলানাটক ডট কমের উদ্যোগে বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে ও-দেশ থেকে এখানে যোগ দিয়েছেন ১৫ জন শিল্পী। কাইনেটিকা, থিংক আর্টস, মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, রুরাল ক্র্যাফটস হাবস অব ওয়েস্ট বেঙ্গল, ক্র্যাফটস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া, জাঙ্গল ক্রোজ, ফিউচার হোপ, আর্টস কাউন্সিল অব ইংল্যান্ড, ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দফতরের যৌথ উদ্যোগে এই উৎসব পরিচালিত হচ্ছে। কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির পুতুল, বাউল, শোলার কাজ, রঙ্গন দত্তের ভ্রমণকথা, প্রাণেশ সোমের বাংলার গান, মহেশগঞ্জের নীলচাষ— এই সমস্তই ছিল এই উৎসবের যাত্রাপথে।

স্মরণ

শিষ্য ও ভক্তদের স্বামী বিবেকানন্দ বলতেন, ‘তোদের এমনই ভালবাসি যে খুব খুশি হব, যদি শুনি তোরা অপরের জন্য খেটে খেটে মরে গিয়েছিস’। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পঞ্চদশ অধ্যক্ষ স্বামী আত্মস্থানন্দজিও স্বামীজির বাণী সার্থক করেছিলেন। তিনি রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের আদর্শ পূরণের জন্য নিজের জীবনের শেষ মুহূর্ত অবধি কাজ করে গিয়েছেন। এ বার তাঁরই নামাঙ্কিত আলোচনা সভা ও গ্রন্থপ্রকাশ কার্যক্রমের আয়োজন করেছে ‘সূত্রধর’, ১৯ ডিসেম্বর সন্ধে সাড়ে ৫টায়, রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার, গোলপার্কের বিবেকানন্দ হলে। এ দিন ‘রামকৃষ্ণ-ভাবান্দোলনে সেবাদর্শের শিক্ষা’ বিষয়ে আলোচনা করবেন স্বামী সুবীরানন্দ। প্রাক্‌কথক ও সভামুখ্য হিসেবে থাকবেন যথাক্রমে স্বামী বিমলাত্মানন্দ ও স্বামী দিব্যানন্দ। প্রকাশিত হবে স্বামী আত্মস্থানন্দ বিরচিত ‘দেবমানব শ্রীরামকৃষ্ণ’, ‘যুবমানসে স্বামী বিবেকানন্দ’ (সম্পাদনা: স্বামী শাস্ত্রজ্ঞানন্দ), ‘শিল্পের দর্শন ও শিল্পীর বিশ্বাস’, স্বামী রঙ্গনাথানন্দের ‘বিবেকানন্দ ও প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের মিলন’ ইত্যাদি বই। সঙ্গে স্বামী আত্মস্থানন্দজির ছবি: দেবরাজ মিত্র

সুবর্ণজয়ন্তী

তিনি ১৯৬৮ সালে ‘সন্ধিক্ষণ’ নাট্যদলে গৌর ভদ্রের নির্দেশনায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর ‘বিজয়ের অপেক্ষায়’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৭৮ থেকে ‘সায়ক’-এর নির্দেশক ও প্রধান অভিনেতা হিসেবে ২৩টি পূর্ণাঙ্গ নাট্য প্রযোজনায় তিনি প্রায় তিন হাজারের বেশি অভিনয় করেছেন দেশে-বিদেশে। তাঁর অভিনীত ‘দুই হুজুরের গপ্প’, ‘জ্ঞানবৃক্ষের ফল’, ‘দায়বদ্ধ’, ‘বাসভূমি’ প্রভৃতি নাটক বহু প্রশংসিত। এ বছরই নির্দেশক-অভিনেতা মেঘনাদ ভট্টাচার্যর অভিনয় জীবনের পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হল। এই উপলক্ষে বেহালা সাংস্কৃতিক শিল্পী সমন্বয়, সায়ক-এর সহযোগিতায় বেহালা শরৎ সদনে ২৩-২৫ ডিসেম্বর, সন্ধে সাড়ে ৬টা থেকে এক নাট্য উৎসবের আয়োজন করেছে। উৎসবে সায়ক-এর তিনটি প্রযোজনা ‘প্রেমকথা’, ‘দামিনী হে’ ও ‘দায়বদ্ধ’ দেখা যাবে। ‘সায়ক নাট্যপত্র’র একটি বিশেষ সংখ্যাও এই উৎসবে প্রকাশিত হবে।

শতবর্ষে

উন্নত শিল্পের মাধ্যমে জীবনের সত্য ও সামাজিক বোধের বিকাশ ঘটানোর অভিপ্রায় থেকেই ছবি করতেন তিনি, ফলে কখনও আপস করেননি রাজেন তরফদার। বলতেন ‘আমার কাছে ছবি নিছক কোনও চিত্ত-বিনোদনের হাতিয়ার নয়।’ তাঁর (১৯১৭-’৮৭) জন্মশতবর্ষ কমিটি শতবর্ষ পূর্তিতে তাঁর পরিচালিত একগুচ্ছ ছবি দেখানোর আয়োজন করেছে আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাবের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে। গোর্কি সদনে ১৮-২২ ডিসেম্বর প্রতি দিন সন্ধে ৬টায় দেখানো হবে তাঁর অন্তরীক্ষ, গঙ্গা, জীবনকাহিনী, পালঙ্ক, নাগপাশ। তাঁকে নিয়ে একটি প্রদর্শনীও চলবে পাশাপাশি। উদ্বোধন করবেন তরুণ মজুমদার।

রেস্তরাঁয় কবিতা

এ-ও সত্যি। কলকাতা শহরের একটি ‘ক্লাব কাম রেস্তরাঁ’য় কবিতা উৎসব, কবিতা উদ্‌যাপন। লালমুখো সাহেবদের হাত ধরে এ দেশে ক্লাবের জন্ম। সম্প্রতি এ শহরে ‘ক্লাব কাম রেস্তরাঁ’ নামে নতুন এক ধরনের সংস্থা তৈরি হচ্ছে। দক্ষিণ কলকাতায় শুরু। এ সব জায়গায় যে কোনও পথচলতি খাদ্যরসিক যেমন আসতে পারবেন তেমন ক্লাব-সদস্যরা তো আসবেনই। তাই বলে কবিতা-উৎসব! তা-ও আবার দোল পর্যন্ত তো বটেই। সংস্থার কর্ণধার উত্তম মুখোপাধ্যায় জানালেন, ‘‘মনে হল শুধু ক্লাব-রেস্তরাঁ করে কী হবে? তার সঙ্গে মননের চর্চাও তো দরকার। তাই রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করে শুরু করলাম। আমাদের নাম ‘দ্য গ্রিন ভিউ’, তাই রবীন্দ্র-সপ্তাহের নাম দেওয়া হয় ‘সবুজের অভিযান’।’’ ৩২টি টেবিলের প্রতিটিতেই টেন্ট কার্ডে রবীন্দ্রনাথের একটি করে পৃথক ইংরেজি ও বাংলা কবিতা লাগানো ছিল। একই ভাবে পরের সপ্তাহটি উৎসর্গ করা হল জীবনানন্দ দাশকে।

উত্তরাধিকার

১ জানুয়ারি ১৮১৮ আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল গ্রেট ট্রিগনমেট্রিক্যাল সার্ভে-র (জি টি এস)। সারা উপমহাদেশে এই সমীক্ষার জন্য তৈরি করা হয় অজস্র চতুষ্কোণ টাওয়ার। আজকের বি টি রোডের উপর এমন দুটি টাওয়ার এখনও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুটির দূরত্বকেই ধরা হয় ‘ক্যালকাটা বেসলাইন’, এটি মাপার কাজে যুক্ত ছিলেন রাধানাথ শিকদার। জি টি এস-এর দ্বিশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্ট এবং কলকাতার ভূগোলবিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিকরা মিলে কিথ লিলে-র (কুইন্স ইউনিভার্সিটি, বেলফাস্ট) নেতৃত্বে ব্রিটিশ অ্যাকাডেমির ‘সার্ভেয়িং এম্পায়ার্স’ প্রকল্পটি রূপায়ণ করলেন। জি টি এস-এর সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার খুঁজতে গিয়ে তাঁরা কলকাতার ৫০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে টিকে থাকা জি টি এস টাওয়ারগুলির তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এই সব নিয়েই জাতীয় গ্রন্থাগারে চলছে প্রদর্শনী, ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকাশিত হয়েছে পুস্তিকাও।

শিশু-কিশোর উৎসব

ডিসেম্বরের ১৬ থেকে রবীন্দ্র সদন, নন্দন চত্বরে শুরু হয়েছে শিশু কিশোর আকাদেমির দশম রাজ্য শিশু-কিশোর উৎসব। চলবে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বিভিন্ন জেলা থেকে নশো’রও বেশি ছেলেমেয়ে সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তি, নাটক, মূকাভিনয়, জাদু প্রদর্শন, যন্ত্রবাদনসহ নানাবিধ অনুষ্ঠান পরিবেশনে মুখর করে তুলছে রবীন্দ্র সদন, শিশির মঞ্চ, একতারা মঞ্চ এবং চারুকলা ভবন সংলগ্ন ভগিনী নিবেদিতা মুক্তমঞ্চ। ইতিমধ্যে আকাদেমি রাজ্যের মহকুমা স্তরে ‘আমার দেশ’ ও ‘একতাই সম্প্রীতি’ বিষয়ে যে ছবি আঁকা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল, সেখান থেকে বাছাই করা চারশোর বেশি ছবির একটি প্রদর্শনী চলছে গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালায়। প্রকাশিত হয়েছে ছবিতে সুকুমার জীবনী, শিশু কিশোর সাহিত্য সংগ্রহ ৫, হারানো দিনের উজ্জ্বল গল্পমালা ৬, ও পতঙ্গ, এ ছাড়া আছে ‘চিরসবুজ লেখা’র বিশেষ উৎসব সংখ্যা।

নাট্যচর্চা

কলকাতার নাট্যদলগুলির বিশিষ্ট সব প্রযোজনায় মাতোয়ারা কল্যাণীর এ বারের শীতের উৎসব। সেখানকার ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অগণিত মানুষ আগেভাগেই টিকিট কেটে নাটক দেখা শুরু করে দিয়েছেন। কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রের এই ২৩তম নাট্যোৎসবে ২৩টি নাটকই মঞ্চস্থ হচ্ছে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋত্বিক সদনে। কলকাতা ছাড়াও ছিল বাংলাদেশের নাটক ‘মাতব্রিং’, বিবর্তন নাট্যগোষ্ঠীর এ নাটকটিই সূচনা করল উৎসবের। কল্যাণী নাট্যচর্চা-র নিজস্ব নতুন প্রযোজনাটি বড়দিনে, ২৫ ডিসেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায়। অমর মিত্রের সাহিত্য অকাদেমি সম্মানে ভূষিত উপন্যাস ‘ধ্রুবপুত্র’ থেকে নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় কিশোর সেনগুপ্ত। (সঙ্গে নাটকের ছবি)

মুদ্রা প্রদর্শনী

১৯৮৫ সালে ক’জন মুদ্রা সংগ্রাহক এবং গবেষকের উৎসাহে গড়ে উঠেছিল নিউমিসম্যাটিক সোসাইটি অব ক্যালকাটা। কেবল সংগ্রহই নয়, নিয়ম করে পত্রিকা ও দিনপঞ্জি প্রকাশ, সেমিনার বা প্রদর্শনীরও আয়োজন করে থাকে এরা, দেশে বা বিদেশে। এই সংস্থারই জাতীয় স্তরের বার্ষিক আয়োজন মুদ্রা উৎসব। এ বারে সংস্থার ২০তম বার্ষিক প্রদর্শনী এবং সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিড়লা মন্দিরের কাছে হলদিরাম ব্যাঙ্কোয়েট হলে। ২২-২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রদর্শনীতে থাকছে মূলত মুদ্রা-নোট, টোকেন, মেডেল ইত্যাদির প্রদর্শন, নিলাম বা ক্রয়বিক্রয়। বিশেষ ভাবে দেখা যাবে ভারতীয় মুদ্রার আদি পর্ব থেকে বর্তমান। থাকছে মহম্মদ বিন তুঘলকের রাজত্বকালের ডিমনিটাইজেশন নিয়ে আলোচনাও।

ছবির গুরুত্ব

ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে থেকেই ইউরোপীয় শিল্পীরা এ দেশের মাটিতে পা রেখেছেন। কৌতূহল, রোমাঞ্চকর অভিযানের নেশা, অভিজাত পৃষ্ঠপোষণার সম্ভাবনা— সব কিছু মিলিয়েই তাঁদের ভারতে আসা। আঠারো শতকের মাঝামাঝি থেকে উনিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত, অর্থাৎ ফটোগ্রাফি আসার আগে এই শিল্পীরা যে সব ছবি এঁকেছেন, সেগুলি অসামান্য দলিল। সমসাময়িক ভারতের স্থাপত্য, জীব ও উদ্ভিদজগৎ, মানুষের জীবনের সমস্ত খুঁটিনাটি প্রায় আলোকচিত্রের বিশ্বস্ততায় ধরা পড়েছে এই সব ছবিতে। প্রাক্‌-আলোকচিত্র যুগে এত উন্নত মানের ‘ভিজুয়াল হিস্টরি’ বিশ্বের খুব কম দেশেরই আছে। এই ছবিগুলির গুরুত্ব নিয়েই ১৮ ডিসেম্বর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে বিকেল সাড়ে ৫টায় বলবেন জহর সরকার, ‘আওয়ার ট্রেজার অব ইউরোপিয়ান পেন্টিংস অন বেঙ্গল’ শীর্ষকে। ইউরোপীয় শিল্পীদের আঁকা ছবি কোথায় কোম্পানি চিত্রকলা থেকে আলাদা, জোর দেবেন তার উপর।

গিরিজা দেবী

ন’বছর বয়সে এক বার কলকাতায় ‘ইয়াদ রহে’ ছবিতে গান অভিনয় দুই-ই করেছিলেন গিরিজা দেবী। পরে বেনারসে যখন বড় হচ্ছেন, বাবা তাঁকে নিয়মিত গলা সাধাতেন তো বটেই, ঘোড়ায় চড়া-সাঁতার-লাঠি খেলাও শেখাতেন। পছন্দ হত না মা বা ঠাকুরমার, তাঁরা তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন। স্বামী কিন্তু বলেছিলেন ‘গান করতেই পারো’, সেই সাধনা থেকেই ইলাহাবাদ আকাশবাণীতে প্রথম গান করেন গিরিজা দেবী, ১৯৪৯। তাঁর সঙ্গে অরিজিৎ মৈত্র মনীষা ভট্টাচার্যের এই কথোপকথন আর তাঁর স্বর্ণকণ্ঠের কিছু মুহূর্ত নিয়ে সিডি: ‘গোল্ডেন মোমেন্টস’। প্রকাশ করছে বিহান, আজ নন্দনে বিকেল ৫টায়। সঙ্গে দেখানো হবে গিরিজা দেবীর উপর ফিল্মস ডিভিশনের তথ্যচিত্রটি।

কবি

কবির অভিজ্ঞতা ও অনুভবের নির্যাস থেকেই কবিতা উৎসারিত হয়। আর এ জন্যই কবিতায় যেমন আনন্দের অনুভব থাকে, তেমনই জীবনের যন্ত্রণা, হতাশার অভিব্যক্তিও প্রতিফলিত হয়। নদিয়ার বানিয়াখড়ির কবি জয়নাল আবেদিনের কবিতাও এর ব্যতিক্রম নয়। বাবা দবিরউদ্দিন ও পরিবারের অনুপ্রেরণায় কবিতা লেখার শুরু দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াকালীন। সপ্তম শ্রেণিতে প্রথম কবিতা প্রকাশ স্কুলের ম্যাগাজিনে। এর পর দেশ, পাক্ষিক আনন্দমেলা, সাপ্তাহিক আনন্দমেলা, সানন্দাসহ আরও নানান পত্রপত্রিকায় তাঁর কবিতা ছাপা হয়েছে, হচ্ছেও। ‘আকাশবাণী’তে তিনি স্বরচিত কবিতা পাঠ এবং কথিকা পাঠও করেছেন বেশ কয়েক বার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়োজিত ‘শতাব্দী বরণ উৎসব’-এ কবিতা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান। দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে হায়ার সেকেন্ডারি পাশ, বেসিক ট্রেনিংপ্রাপ্ত কবির রোজনামচা শুরু হয় ভোর পাঁচটায়। সাইকেলে বেরিয়ে পড়েন বাড়ি বাড়ি খবরের কাগজ দিতে। দুপুরে বাড়ি ফিরে স্নান-খাওয়া সেরে আবার বেরিয়ে পড়েন কাগজের মূল্য সংগ্রহে। ফেরার সময় বেকারি থেকে নিয়ে আসেন কিছু পাউরুটি-বিস্কুট-কেক— দোকানে দোকানে সরবরাহের জন্য। এরই পাশাপাশি চলতে থাকে একচিলতে দরমার কুটিরে কবিতার অনলস চর্চা। এই উপার্জনেই বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও মেয়ের অন্নবস্ত্র জোগান। বয়সের ভারে ন্যুব্জ। কবি তাই দুশ্চিন্তায়, ‘পেরে উঠছি না আর টানতে। সংসারটা চালাব কী ভাবে?’ বন্ধুদের সহযোগিতায় কলকাতার সম্ভ্রান্ত প্রকাশনা থেকে তাঁর একাধিক কবিতাবই ইতিমধ্যেই প্রকাশিত।

ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE