Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

দক্ষিণ কলকাতার বিখ্যাত সিনেমা হল উজ্জ্বলা, যেখানে এক বছরেরও বেশি চলেছিল উত্তমকুমারের ‘অমানুষ’। এহেন উজ্জ্বলাই নেই।

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:১০
Share: Save:

টিকে আছে শুধু নাম

হুতোম থেকে রবিঠাকুর হয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় অবধি তাঁদের রচনায় কলকাতা শহর নিয়ে নানা কথাই লিখে গিয়েছেন। আর লিখবেন না-ই বা কেন? এমন মজার শহর আর দুটো খুঁজে বার করা প্রায় অসম্ভব। অতীতের হাজারো নজিরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা। যার অস্তিত্বই নেই তার নামে এলাকার পরিচয়, আজও। দক্ষিণ কলকাতার বিখ্যাত সিনেমা হল উজ্জ্বলা, যেখানে এক বছরেরও বেশি চলেছিল উত্তমকুমারের ‘অমানুষ’। এহেন উজ্জ্বলাই নেই। তার বদলে উলটো দিকের ফুটপাতে রমরমিয়ে বিক্রি হয়ে চলেছে উজ্জ্বলার চানাচুর! আবার পার্কসার্কাস থেকে বহু অটোওয়ালা ধর্মতলা আসার সময়— এমনকী বহু যাত্রীও— বলেন, লোটাস নামব। কিন্তু কোথায় লোটাস? সে পদ্ম কবে কারা তুলে নিয়ে গিয়েছে। এই রুটেরই আর একটি জায়গা সম্পর্কে ওই চালক ও সওয়ারিরা বলেন, বাটা মোড়। চার মাথার মোড়ে কোথাও কোনও বাটা-র দোকানের অস্তিত্বই নেই। ঠিক যেমন ধর্মতলা থেকে মৌলালিগামী বাস-ট্রামের কন্ডাক্টররা বলেন, জ্যোতি আসছে। হায়! সেই জ্যোতি এখন লোহা-অ্যালুমিনিয়ামের দোকান। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরে ছিল ‘দিল্লি ধাবা’। সারা বছর তো বটেই, প্রায় সারা রাতই সেখানে খোলা থাকত কোহলকুঞ্জ। সে উঠে গিয়েছে। তবু কোনও কোনও ইয়ারদোস্ত তাঁর প্রিয় বন্ধুকে আজও বলেন, চল দিল্লি ধাবা। এই সে দিন কোথাও কোনও প্রতীক্ষার কথায় বলা হত, মেট্রোর সামনে। মেট্রো সিনেমা হল ভাঙার কাজ অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। আর কিছু দিন পরেই সুবিখ্যাত হলটা আমাদের চোখের সামনে থেকে হারিয়ে যাবে। তবু অপেক্ষার আর এক নাম যে মেট্রো থাকবে এ ব্যাপারে কলকাতাবাসী নিশ্চিত। সঙ্গে মেট্রো সিনেমার পুরনো ছবি।

শ্রদ্ধাঞ্জলি

মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য ১৮৯৮ সালের নভেম্বর মাসে বোসপাড়া লেনের বাড়িতে স্কুল শুরু করেছিলেন ভগিনী নিবেদিতা। ১১৯ বছরের সেই ‘নিবেদিতা স্কুল’ আজ ‘রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুল’, শহরের একটি বিশিষ্ট নাম। স্কুলের প্রাক্তনীরা ৩১ ডিসেম্বর সারা দিন মহাজাতি সদনে নানা অনুষ্ঠানে নিবেদিতার সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। থাকছেন স্বপন চক্রবর্তী, প্রব্রাজিকা অমলপ্রাণা, প্রব্রাজিকা জ্ঞানদাপ্রাণা প্রমুখ। এই সঙ্গে সোহিনী ঘোষ ও মীনা দাঁ-র সম্পাদনায় প্রকাশিত হবে তিনশো পাতার বিশেষ স্মারক সংকলন ‘সমকালে নিবেদিতা’। পুনর্মুদ্রিত হচ্ছে প্রাক্তনী সরলাবালা সরকারের রচনা, থাকছে রবীন্দ্রনাথ ও নিবেদিতা, জগদীশচন্দ্র ও নিবেদিতা বিষয়ক লেখা, এমনকী ‘সেকালের বোসপাড়া’ প্রসঙ্গও। সঙ্গে স্কুল ভবনের পুরনো ছবি।

দ্যতিয়েন স্মরণ

তিনি জন্মেছিলেন বেলজিয়ামের ছোট্ট শহর রশফর-এ, ৩০ ডিসেম্বর ১৯২৪। জেসুইট সম্প্রদায়ের এই সন্ন্যাসীর ধর্মীয় জীবনের সূচনা ১৯৪২ সালে। কলকাতায় আসেন ১৯৪৯ সালে, স্বদেশে ফিরে যান ১৯৭৭-এ। ফাদার পল দ্যতিয়েনের (১৯২৪-২০১৬) মাতৃভাষা ফরাসি হলেও, ভারতে থাকাকালীন কলকাতা, শ্রীরামপুর, বিশ্বভারতীতে বাংলা ভাষা শিখেছেন, সাহিত্যসৃষ্টি করেছেন বাংলাতেই। আছে একাধিক রম্যরচনার বই, অনুবাদ, প্রবন্ধ গ্রন্থ। ১৯৭২-এ ডায়েরির ছেঁড়া পাতা-র জন্য পেয়েছেন নরসিংহদাস পুরস্কার, ২০১০-এ রবীন্দ্র পুরস্কার। এ বার তাঁর ৯৪তম জন্মদিন উপলক্ষে সম্প্রীতি আকাদেমির অনুষ্ঠান ৩০ ডিসেম্বর বিকেল ৪টেয় মিলনবীথি মঞ্চে (সুকান্তপল্লি, কেওড়াপুকুর)। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ‘ফাদার দ্যতিয়েনের জীবন ও সাহিত্য’ নিয়ে আলোচনা করবেন সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়, রাহুল দাশগুপ্ত, বিভোর দাস। দ্বিতীয় পর্বে সমরেন্দ্র মণ্ডলের ইউরোপীয় মিশনারিদের বাংলা ভাষা চর্চা ও ফাদার দ্যতিয়েন শীর্ষক বইটি প্রকাশ পাবে। তৃতীয় পর্বে আছে সম্মাননা জ্ঞাপন।

আনন্দনিকেতন

জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গাঁধী, বিধানচন্দ্র রায়, অতুল্য ঘোষ, হুমায়ুন কবীর— এঁরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও সময়ে সিএলটি-র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পণ্ডিত রবিশঙ্কর, তিমিরবরণের মতো শিল্পী সিএলটি-র বিভিন্ন প্রযোজনায় সুরারোপ করেছেন। বালকৃষ্ণ মেনন, গুরু বিপিন সিংহ, কলাবতী দেবীরা শিক্ষার্থী শিশুদের নৃত্যে তালিম দিয়েছেন। সমর চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে ১৯৫২ সালে সিএলটি-র সূচনা। এটি একেবারে শিশুদের আনন্দনিকেতন। এখানে ছড়ার গানের মাধ্যমে তালছন্দের হাতেখড়ি হয়। তার পর শাস্ত্রীয় নৃত্য পরে নৃত্যনাট্য ইত্যাদি। ভারতছন্দ, অবনপটুয়া, মিঠুয়া, নীলসাগরের নীচে, চড়ুইভাতি, রামায়ণ প্রভৃতি এই প্রতিষ্ঠানের উচ্চ প্রশংসিত প্রযোজনা। এখানে নৃত্য, গীত, চিত্রাঙ্কন ছাড়াও নাটক, রোলার স্কেটিং এবং টেবল টেনিস শেখার ব্যবস্থা আছে। মানসিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্য আছে বিশেষ বিভাগ বা ব্যবস্থা। সম্প্রতি সি এল টি-র নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহে বার্ষিক উৎসব হয়ে গেল।

মুক্তচিন্তা

মুক্তচিন্তার পথে পথে আজ পাথর ছড়ানো। এই আঁধার রাতে তাই সেই সব মানুষ বিশেষ করে স্মরণীয় যাঁরা সারা জীবন মানুষের মনের মুক্তির কথা ভেবে গিয়েছেন। পাভলভ ইনস্টিটিউট আর ‘মানবমন’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা, মনোরোগ-বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন তেমনই এক মানুষ। মানুষের আত্মিক ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে অন্তত ষাট বছর আগে যে চেতাবনি দিয়েছিলেন তিনি, তা আজ কণ্টকাকীর্ণ বাস্তব। বিচ্ছিন্নতার বিশল্যকরণী হিসাবে রবীন্দ্রনাথের সৃজনী মন ছিল তাঁর অন্যতম আগ্রহের বিষয়। এ বছরও পাভলভ ইনস্টিটিউট আর ‘মানবমন’ পত্রিকা ধীরেন্দ্রনাথের স্মরণে আয়োজন করেছে বক্তৃতা। বলবেন স্বনামধন্য দর্শনবেত্তা শেফালী মৈত্র। বিষয়: ‘তোমার হাতে আমার ঘোড়া লাগাম-পরানো: রবীন্দ্রনাথের মুক্তিচিন্তা।’ কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের তিন তলায় বই-চিত্র সভাঘর, ২৮ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটা।

নজরুল আর্কাইভ

রবীন্দ্রনাথ সঞ্জীবচন্দ্র সম্বন্ধে যেমন বলেছিলেন, নজরুল সম্বন্ধেও তেমনই বলা যায় যে, তাঁর প্রতিভা ‘ধনী, কিন্তু গৃহিণী নয়’। এমন নজরুল ইসলামকে নিয়ে হিডকো-র উদ্যোগে নিউ টাউনের নজরুলতীর্থে গড়ে উঠেছে একটি ডিজিটাল আর্কাইভ— ‘মহাফেজখানা’। নজরুল সম্পর্কিত ইতস্তত প্রক্ষিপ্ত যাবতীয় তথ্য, যেমন নজরুলের লেখা, নজরুল বিষয়ক লেখা, তাঁর গান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, সম্পাদিত পত্রপত্রিকা, দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্র, পাণ্ডুলিপি (মূল ও প্রতিলিপি), তাঁর বইয়ের প্রথম সংস্করণের প্রতিলিপি, নজরুল সম্পর্কিত চলচ্চিত্র ইত্যাদি এই মহাফেজখানায় সংরক্ষণ করা হয়েছে। আর্কাইভ কক্ষে তো বটেই, সদস্যরা বাড়িতে বসেও প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারবেন। ২০ ডিসেম্বর এই মহাফেজখানার উদ্বোধন করলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, দেখানো হল মুজিবর রহমান পরিচালিত তথ্যচিত্র ‘নজরুল জীবন পরিক্রমা’।

সামাজিক

নাটক শুধু শৈল্পিক বিনোদন নয়, তার সামাজিক ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। এই বিশ্বাস নিয়েই কাজ করে চলেছে মৌলালির নাট্যদল রঙ্গশিল্পী। হাওড়ার জয়পুরে আমতা পিস স্কুল— গরিব ছেলেমেয়েদের ভালবাসার, ভরসার শিক্ষাঙ্গন। ভাড়ার মেয়াদ শেষ হবে এই ডিসেম্বর মাসেই। ছাড়তে হবে স্কুলবাড়ি। তাদের অপরাধ তারা কেউ বিড়ি শ্রমিকের সন্তান, কারও বাবা জরির কাজ করেন, তাঁদের সামর্থ্য নেই চাঁদা দিয়ে স্কুলবাড়ি তৈরি করে দেন। রঙ্গশিল্পীর গুটিকয় নাট্যকর্মীকে আমূল নাড়া দিয়ে যায় এই ঘটনা। সহৃদয় ব্যক্তির আনুকূল্যে ইতিমধ্যে অল্প জমির বন্দোবস্ত হয়েছে। হাওড়ার নাট্যদল জোনাকী এগিয়ে এল। গোর্কি সদন কর্তৃপক্ষ বিনা ভাড়ায় দিলেন তাঁদের মঞ্চ। সম্প্রতি দুটি দল সেখানে মঞ্চস্থ করল দুটি নাটক। জোনাকীর প্রযোজনা ইন্দ্রাশিস্ লাহিড়ির লেখা নাটক ‘অন্তরিক্ষে’, পরিচালনা সুদীপা বসু। আর রঙ্গশিল্পীর নাটক ফণীশ্বরনাথ রেণুর গল্প অবলম্বনে ‘পাঞ্চ লাইট’, পরিচালনা প্লাবন বসু। দর্শক অনুদান পুরোটাই তুলে দেওয়া হল স্কুলের হাতে। এই সামান্য পুঁজি নিয়ে ভিতটা খোঁড়া শুরু হয়েছে। এখনও অনেক পথ চলা বাকি।

পুরনো গাড়ি

৬৯ বিধান সরণি বাসস্থান, আর ৭৫ নম্বরে পূর্বপুরুষের ছবি ফ্রেমিং-এর দোকান ‘ক্যালকাটা আর্ট গ্যালারি’। এগারো বছর বয়সে ঠাকুরদা সুবল চক্রবর্তীর হাত ধরে নাছোড় নাতি স্বপনের দোকানে আসা। বাবা ঠাকুরদার কাছেই কাজ শেখা। তবে স্বপন ফ্রেমরূপকে আরও উন্নত করার তাগিদ অনুভব করতেন প্রতিনিয়ত। তাই ১৯৭৮-এ বাবা বিশ্বনাথ প্রয়াত হলে নিজস্ব ‘ফ্যান্সি ফটো সেলার’ প্রতিষ্ঠা করেন। রাজভবন, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, ভারতীয় সংগ্রহালয়, বিবেকানন্দের বাড়িসহ বহু বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠানে দেখা যায় তাঁর ফ্রেমবন্দির মুনশিয়ানা। কুড়ি বছর জোড়াসাঁকোয় রবীন্দ্রজয়ন্তীতে রবীন্দ্রনাথের হরেক ছবি নিয়ে হাজির হওয়া স্বপন এ বার কর্মজীবনের পঞ্চাশ উপলক্ষে শিল্পী জয়ন্ত খানকে দিয়ে ক্যানভাসে অ্যাক্রিলিক চারকোল তেলরঙে ৩৫টি ভিনটেজ গাড়ির ছবি আঁকিয়ে বালিগঞ্জ প্লেসের উইভার্স স্টুডিয়ো-তে আয়োজন করলেন ‘এলিগ্যানস্ অব অ্যানটিক অটোমোবাইল’ শীর্ষক প্রদর্শনী, চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত (৩-৮)।

ইতিহাস কংগ্রেস

স্বাধীনতার ভাবনাকে চারিয়ে দিতেই বেশ কিছু ইতিহাসবিদ একত্র হয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেস’, সময়টা ১৯৩৫। তার পর থেকে প্রতি ডিসেম্বরে তিন দিনের এই অধিবেশন দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়। সেই ১৯৭৪-এর পর এ বার আবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত হতে চলেছে ‘ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেস’-এর ৭৮তম অধিবেশন, ২৮-৩০ ডিসেম্বর। এই সূত্রে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস ফিরে যাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ শুরুর দিনগুলিতে, সুশোভন সরকার প্রতুলচন্দ্র গুপ্ত নিমাইসাধন বসু অমিতাভ মুখোপাধ্যায় শিপ্রা সরকার প্রমুখ স্মরণীয় শিক্ষকদের কথায়। এ বারে সারা দেশ থেকে আসছেন ১৮০০ প্রতিনিধি, ১৫টি সেশনে ১২০০ পেপার রয়েছে, জানালেন লোকাল সেক্রেটারি শুভাশিস বিশ্বাস। এইচ কে বরপূজারি জাতীয় সম্মান পাচ্ছেন ইতিহাসবিদ সব্যসাচী ভট্টাচার্য। রোমিলা থাপার, ইরফান হাবিবসহ বহু বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ যোগ দেবেন অধিবেশনে। ২৯ ডিসেম্বর সন্ধে ৬টায় নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠানে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নাট্যমেলা

কালুদার পরিচালনায় নাটক হবে, ‘দুর্যোধনের ঊরুভঙ্গ’৷ পাড়ার কচিকাঁচাদের মধ্যে সাজ-সাজ রব৷ দিন-রাত এক করে মহড়া চলছে পুরোদমে৷ তার পরে? চূড়ান্ত ক্লাইম্যাক্সের সময়েই ঘটে গেল এক উলটপুরাণ৷ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে নাটক ‘ভীমবধ’ এ বার শুভম নাট্যমেলায়৷ নয় নয় করে ষোলো বছরে পৌঁছে গেল এই নাট্যমেলা৷ আয়োজক বিডন স্ট্রিট শুভম-এর কর্ণধার আশিস খান জানিয়েছেন, ২৯-৩১ ডিসেম্বর মিনার্ভা থিয়েটারে সাত নাটকের সাত কাহন৷ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের শতবর্ষে তাঁর লেখা অবলম্বনেও থাকছে কয়েকটি নাটক৷ ‘অভিনয়: নাটক ও ছবি’ আলোচনায় আসছেন ছোটদের চলচ্চিত্রের দুই পরিচালক ও খুদে অভিনেতারা৷

বর্ষশেষ

এবারেও বছরের শেষ দিনে নাট্যকেন্দ্রিক মিলনানুষ্ঠান। এখন শুধু সকাল-দুপুর-সন্ধে।’ ৩১ ডিসেম্বর ‘অন্য থিয়েটার’-এর ‘বর্ষশেষ অনুষ্ঠান’ নিয়ে বলছিলেন কর্ণধার বিভাস চক্রবর্তী। ‘‘বরাবরের মতো এ অনুষ্ঠান এ বারও আন্তর্জাতিক স্তরে প্রদক্ষিণ করবে। যেমন অর্পিতা ঘোষ আর দেবেশ চট্টোপাধ্যায় নাট্যনির্মাণ সম্মান পাবেন সার্ত্রের নাটক অবলম্বনে পঞ্চম বৈদিক-এর ‘মাছি’ প্রযোজনার জন্যে। থাকছে লোরকার নাটক অবলম্বনে অনসম্বল-এর নতুন প্রযোজনা ‘খণ্ডহর’। সোহাগ সেনকে জীবনকৃতি সম্মাননা প্রদান করা হবে।’’ বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের রূপান্তরে লোরকার ‘দ্য হাউস অব বারনারদা আলবা’-য় কনকলতা-র চরিত্রে সোহাগ সেন— ‘ওঁর সঙ্গে কাজ করতে পেরে আপ্লুত আমি।’ জানালেন নির্দেশক অবন্তী চক্রবর্তী। ‘লোরকা-র মূল নাটকটা পড়া ছিল, রূপান্তরে তা একই রকম জীবন্ত। এগারোটি নারীচরিত্র, নারীসত্তার সেই বিবিধ ওঠাপড়ার সঙ্গে মেয়ে হিসেবে একাত্ম বোধ করছি। এ নাটকে ঘরে-বাইরে মেয়েদের শ্বাসরোধকারী অবস্থার সঙ্গে একই চেহারা সমাজেরও। ফ্যাসিজম বা জেন্ডার-পলিটিক্স ঘরের ভিতর শুরু হয়েই ছড়িয়ে পড়ে বাইরে।’ অবন্তী (সঙ্গের ছবি) ইতিমধ্যেই সংগীত-নাটক অকাদেমির যুবা-পুরস্কার ‘উস্তাদ বিসমিল্লা খান’ সম্মানে ভূষিত। সে দিন সন্ধে ৬টায় ‘খণ্ডহর’-এর প্রথম অভিনয়। সকাল সাড়ে দশটায় বিতর্ক: ‘বর্তমান বাংলা থিয়েটার কমবেশি অনুদান-নির্ভর।’ আরও দুটি নাট্যানুষ্ঠান থিয়েটার প্ল্যাটফর্মের ‘হৃদিপাশ’ ও বেলঘরিয়া হাতেখড়ি-র ‘এই মুহূর্তে’। এক সম্ভাবনাময় নাট্যশিক্ষার্থীকে প্রদান করা হবে ‘অনীতা-আনন্দী স্মারক বৃত্তি’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE