Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক কবিকে নিয়ে যে সুমুদ্রিত ও চিত্রশোভিত বইটি প্রকাশ করেছে সদ্য, রবীন্দ্রনাথ টেগোর: আ জিনিয়াস একস্ট্রাঅর্ডিনেয়ার, তাতে আছে লেখাটি।

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৫
Share: Save:

দুই বাংলার রবীন্দ্র-প্রণাম

রবীন্দ্রনাথ প্রথম যখন বিলেত যান সতেরো বছর বয়সে, ঠাকুর পরিবারের মানুষজন আশা করেছিলেন যে তিনি ব্যারিস্টার বা আইসিএস হবেন। সে সব ইচ্ছেয় জল ঢেলে বিশ্বকবি হওয়ার পথে প্রথম পা বাড়িয়েছিলেন তিনি। ইংরেজদের জীবন, সংস্কৃতি, সাহিত্য, এমনকী তাঁদের রাজনীতি নিয়েও তত দিনে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁর। স্বাভাবিক, উপনিবেশের দেশেই তো জন্মেছিলেন। কিন্তু ইংল্যান্ডে পৌঁছে যে বাস্তবতার মুখোমুখি হলেন, তাতে বেশ খানিকটা মোহভঙ্গই হল। পর্যটক হিসাবে যে ব্যথাটা সবচেয়ে বেশি বুকে বেজেছিল কবির তা হল ভারতীয়দের সম্পর্কে ইংরেজদের ঔদাসীন্য, একটু অপমানজনকই মনে হয়েছিল তাঁর। মনখারাপের সে কথাগুলি চিঠিতে লিখে পাঠাতেন নতুন বউঠান কাদম্বরী দেবীকে। কবির ভুবনায়নের এই মনটিকে নিয়ে লিখেছেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, ‘দ্য ট্র্যাভেলার’। রচনাটি শুরুর আগে বাঁ দিকের পৃষ্ঠায় কবির প্লেনে চেপে পারস্য যাত্রা নিয়ে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা সঙ্গের ছবিটি। কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক কবিকে নিয়ে যে সুমুদ্রিত ও চিত্রশোভিত বইটি প্রকাশ করেছে সদ্য, রবীন্দ্রনাথ টেগোর: আ জিনিয়াস একস্ট্রাঅর্ডিনেয়ার, তাতে আছে লেখাটি। বইটির সম্পাদক ভারতী রায় জানিয়েছেন, এটি ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রয়াস, কারণ পরাধীন ভারতের কবি দুটি স্বাধীন দেশেরই, দু’পক্ষেই সম্পাদনায় সহযোগিতা করেছেন স্বপন মজুমদার আর আনিসুজ্জামান। আর সংস্কৃতি মন্ত্রকের তৎকালীন সচিব জহর সরকার ছাড়া এ বই তৈরিই হত না। বিশ্বকবি যাতে আবিশ্ব পাঠকসমাজের কাছে সম্যক ভাবে পরিচিত হতে পারেন তাই এই উদ্যোগ। ব্যক্তিজীবন, পরিবার, কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাজগৎ, শিল্পসাহিত্য, দর্শন, রাজনীতি, সমাজ— সমস্ত ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথের অপরিসীম প্রজ্ঞা ও ভূমিকার কথাই গোটা বই জুড়ে। লিখেছেন উমা দাশগুপ্ত গোলাম মুরশিদ আনিসুজ্জামান ইন্দ্রপ্রমিত রায় করুণাসিন্ধু দাসের মতো বিদ্বজ্জন। বিশদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাটি স্বয়ং সম্পাদকের, সেখানে তিনি পূর্ণতার সন্ধানী রবীন্দ্রনাথের বহুমুখী মনন ও কাজের এক রূপরেখা তৈরি করেছেন, যাতে বিশেষ ভাবে উঠে এসেছে কবির আধুনিকতা, নারীমুক্তি ও সমাজসংস্কার নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি।

বাক্‌দিনী

মেয়ে রোহিণী লিখেছেন, ‘ভালো নাম গৌরী ধর্মপাল, ডাকনাম গৌড়বুড়ী— গোউরবুড়ী— গোউর বাগদিনী— (বাগদিনীও বটে আবার বাক্‌দিনীও)।’ বাকই তাঁর সাহিত্য। সংস্কৃত কথাকে আশ্চর্য কৌটোয় ভরে বাঙালি ছেলেমেয়েদের পরিবেশন করতেন। লালমাটি গোউর বাক্‌দিনীর লেখাপত্রের সংকলন খণ্ডে খণ্ডে প্রকাশ করতে চলেছেন, সম্প্রতি জীবনানন্দ সভাঘরে প্রকাশিত হল সমগ্রের প্রথম খণ্ড।
এ খণ্ডের শেষে রয়েছে তাঁর লেখাপত্রের বিস্তারিত সূচি। লীলা মজুমদার লিখেছিলেন, ‘এর ভাষা হল খাঁটি বাংলা... আত্মসচেতন শহুরে ভাষা এ নয়,
এ হল ঘরোয়া ভাষা, যে ভাষায় ছোট ছেলেমেয়েরা মাকে ডাকে।’ সে দিনের প্রকাশ অনুষ্ঠানে গৌরী ধর্মপালের লেখা নিয়ে কথা বললেন জয়া মিত্র, পবিত্র সরকার, রুশতী সেন প্রমুখ। প্রথম খণ্ডে লেখার সঙ্গে রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের অলংকরণ। সত্যজিতের সঙ্গে তাল মিলিয়েছেন শিবশঙ্কর ভট্টাচার্য— ছোটদের মন-ভরানো এই বইয়ের প্রচ্ছদ তাঁরই করা। সঙ্গে প্রচ্ছদ।

শতবর্ষে

শ্রীঅরবিন্দ জওহরলাল নেহরুকে বলেছিলেন, ‘বন্দে মাতরম্’ গানটি যোগ্য শিল্পীকে দিয়ে গাওয়ানোর জন্য। উস্তাদ আলাউদ্দিন খান সত্য চৌধুরীকে (১৯১৮-১৯৯৩) এ জন্য নির্বাচন করেছিলেন। রেকর্ডিং-এর পর আলাউদ্দিন আনন্দে শিল্পীকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। ১৯৪৫ সালে প্রণব রায় ও মোহিনী চৌধুরীর কথায়, কমল দাশগুপ্তের সুরে, ‘যেথা গান থেমে যায়’ ও ‘পৃথিবী আমারে চায়’ গেয়ে তো বটেই, চল্লিশের দশক জুড়ে তাঁর বিভিন্ন ধারার গান বাঙালির হৃদয়ে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছিল। তাঁর গাওয়া ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানি’, ‘নয়নভরা জল’, ‘জাগো অনশন বন্দি’ প্রভৃতি নজরুলগীতি আজও স্মরণীয়। প্রচুর চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন। ১৯৩৭-এ রেডিয়োয় যোগদান। শিল্পীর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে, পৃথিবী আমারে চায় ও সুরমঞ্জরীর উদ্যোগে ৮ জানুয়ারি শিশির মঞ্চে সন্ধে ৬টায় অনুষ্ঠান। শিল্পীর গানের রেকর্ড বাজিয়ে স্মৃতিচারণ করবেন মিহির বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুশান্তকুমার চট্টোপাধ্যায়, বলবেন নির্বেদ রায় ও অর্কদেব ভাদুড়ী। সংগীতে শম্পা কুণ্ডু, অলক রায়চৌধুরী, নূপুরছন্দা ঘোষ প্রমুখ।

স্মারক বক্তৃতা

কালীঘাটের তেইশ বছরের এক তরুণ কালীমন্দিরের ভিতরে হরিজনদের প্রবেশাধিকার নিয়ে ও হরিজন বিষয়ে পত্রিকা-প্রকাশে গাঁধীজির আশীর্বাণী প্রার্থনা করেছিলেন। সালটা ১৯৩২। প্রত্যুত্তরে গাঁধীজি নিজের হাতে চিঠি লিখে সেই সময়ে তাঁকে ওই কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান। স্কটিশ চার্চ স্কুল ও কলেজের বিজ্ঞানের কৃতী ছাত্র সুধীরকুমার মিত্র ৩৯ বছর বয়সে বিপুল পরিশ্রমে লিখলেন ১১০০ পাতার সচিত্র গ্রন্থ হুগলী জেলার ইতিহাস। ১৯৯৩ সালে ৮৪ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন। ক্যালকাটা কালচারাল সেন্টার ১৯৯৪ সাল থেকে ইতিহাস, সমাজ ও সংস্কৃতি শিরোনামে দ্বিবার্ষিক ‘সুধীরকুমার মিত্র স্মারক বক্তৃতা’র আয়োজন করে আসছে। ৬ জানুয়ারি বিকেল চারটেয় কলকাতা প্রেস ক্লাব সভাঘরে একাদশতম স্মারক বক্তৃতা দেবেন ইতিহাসবিদ সুরঞ্জন দাস, বিষয় ‘মহাত্মা গাঁধীর শিক্ষাভাবনা ও তার সমকালীন প্রাসঙ্গিকতা’। প্রধান অতিথি ভারতী রায়, পৌরোহিত্য করবেন চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়।

সইমেলা

সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে চলা নানা হিংস্র ও অমানবিক ঘটনা প্রত্যেককেই পীড়িত করছে। তাই আঠারো পূর্ণ হওয়া সইমেলার এ বারের বিষয়ভাবনা— ‘হিংসার বিরুদ্ধে সৃজনশীল নারী’। শিশির মঞ্চে ৬ ও ৭ জানুয়ারি, দুপুর ৩টে থেকে চলা এই দু’দিনের ‘সইমেলা-বইমেলা’য় অতিথি হয়ে আসছেন ইরম শর্মিলা, মৃণাল পান্ডে, অনিতা অগ্নিহোত্রী এবং কমলা ভাসিন, জানাবেন নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও ভাবনা। দ্বিতীয় দিনে, একটি আলোচনাসভা ও বাণী রায়ের রচনা পাঠের মধ্য দিয়ে তাঁকে সম্মাননা জানানো হবে। থাকবে ‘সৃজনশীলতা হিংসার প্রতিদ্বন্দ্বী’ বিষয়ে আলোচনা। গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় দু’দিন ধরে চলবে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড-এর পরিচালনায় মেয়েদের লেখা বই ও তাঁদের সম্পাদিত পত্রিকা নিয়ে মেলা। ‘স্বয়ম’ সংস্থার সৃষ্টি করা ২১৬ জন নির্যাতিতা মেয়ের আত্মকথনে নির্মিত ‘অন্ধকারের কণ্ঠস্বর’ প্রদর্শিত হবে দুপুর ২টোয়। সহযোগিতায় সাহিত্য অকাদেমি।

প্রবাসী

দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে তালিমপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পৃথ্বীশ দাশগুপ্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে এম এসসি পাশ করে ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি করেন। আমেরিকাপ্রবাসী শিল্পী তাঁর সংগীত চর্চা অক্ষুণ্ণ রাখতে আমেরিকায় পঁচিশ বছর ধরে রবীন্দ্রসংগীত শেখাচ্ছেন। ছাত্রছাত্রীদের জন্যে তিনি শুধু হারমোনিয়াম ও তালমালা দিয়ে ঘরোয়া ভাবে বেশ কিছু গান ক্যাসেটে ধরে রেখেছিলেন। শিল্পীর বহু দিনের পরিকল্পনা, ক্যাসেটবন্দি সেই গানগুলি ক্রমশ সিডি-তে রূপান্তরিত করা। সেই পরিকল্পনামাফিক সম্প্রতি ষোলোটা গান বিধৃত ‘কাছে থেকে দূর রচিল’ শীর্ষক সিডি-টি ‘ভাবনা’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে।

বিশ্বাসদা

হিমেন্দু বিশ্বাস। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্রছাত্রীর প্রিয় হিমেন্দুদা বা বিশ্বাসদা। চল্লিশের দশকের বিশিষ্ট ছাত্রনেতা ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি। পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-অধিকর্তা (ডিন অব স্টুডেন্টস)। ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের অন্যতম কান্ডারি। বিভিন্ন ক্লাব, যেমন মাউন্টেনিয়ারিং ক্লাব, মিউজিক ক্লাব, ডিবেটিং সোসাইটি, ফটোগ্রাফিক ক্লাব ইত্যাদির স্রষ্টা ও ছাত্রদের পড়াশোনার জগতের বাইরে নানা কাজে উদ্বুদ্ধ করার অন্যতম উদ্যোক্তা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতবিরোধের মধ্যে সকলের কাছে সমান সমাদৃত। আজ ৯৫ বছরে সারা জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখেছেন আমি ও আমার সময়।
৩ জানুয়ারি সন্ধে ছ’টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণা সেন হল-এ সেটি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করবেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, উপস্থিত থাকবেন শঙ্খ ঘোষ, অমিয় দেব, নবনীতা দেব সেন, রমাপ্রসাদ দে, কবীর সুমন প্রমুখ।

নতুন পথ

দোজখনামা উপন্যাসটি দেশভাগের। দোজখনামা সাদাত হাসান মান্টোর জীবন। মহাকবি গালিবের জীবন। এক জন পাকিস্তানের মাটির নীচে শুয়ে আছেন, অন্য জন ভারতের মাটিতে। দুই দেশের কবরে শুয়ে দু’জন যে আলাপ করেন সেই অসম্ভব এক আঙ্গিকে লেখা দোজখনামা ভারতীয় উপন্যাসে নতুন এক পথও নিশ্চয়। লেখক রবিশঙ্কর বল এর পরে পারস্যের সুফি কবি জালালুদ্দিন রুমিকে নিয়ে লিখেছেন আয়নাজীবন। এক জন ইসলামি ধর্মবেত্তা ও পণ্ডিত থেকে সুফি কবি হয়ে ওঠার রহস্য তাঁকে আকর্ষণ করেছিল। ইসলামি সংস্কৃতির বহু মাত্রাকে বুঝতে চেয়েছিলেন, উর্দু ভাষাও শিখেছিলেন। দারুনিরঞ্জন, ছায়াপুতুলের খেলা, মধ্যরাত্রির জীবনী, পার্ল রহস্য, আমাদের ছোট রাস্তা, চন্দ্রাহতের কুটীর তাঁর অন্যান্য গ্রন্থ। আশির দশকের শেষে সাহিত্যে প্রবেশের পর নানা ভাবে নতুন পথের অনুসন্ধানে ব্যাপৃত ছিলেন। সম্পাদনা করেছেন সাদাত হাসান মান্টোর রচনাসংগ্রহ। সাংবাদিকতা ছিল জীবিকা। মাত্র ৫৪ বছর বয়সেই চলে গেলেন এই মেধাবী লেখক। ৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমির তৃপ্তি মিত্র সভাঘরে তাঁর পরিবার এবং অহর্নিশ, অশোকনগর নাট্যমুখ ও অভিযান পাবলিকেশনের উদ্যোগে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে বিকেল সাড়ে ৫টায়। সঙ্গের ছবি: সীমান্ত গুহঠাকুরতা

সুগন্ধি চাল

শরতের শেষে পড়ন্ত বিকেলে বাতাসে গন্ধ শুঁকেই চাষি বুঝতে পারেন গোবিন্দভোগে ফুল এসেছে। ধানের বীজতলায় চারা তুলতে গিয়ে গন্ধেই বোঝা যায় কোনটা রাধাতিলকের চারা। রান্নাঘরে ভাতের গন্ধ শুঁকেই গিন্নি বলবেন, এ তো রাঁধুনিপাগল চাল। বর্ধমানের গোবিন্দভোগ, উত্তর দিনাজপুরের তুলাইপাঞ্জি, কোচবিহারের কালো নুনিয়া, নদিয়ার রাঁধুনিপাগল আর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রাধাতিলক বাংলার এমনই ঐতিহ্যপূর্ণ চাল। পৌষ মাস পড়তেই বাঙালি আজও এই সব চালের পিঠে-পায়েসের নস্টালজিয়ায় ভোগেন। এ বার ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মোহরকুঞ্জ ও হেদুয়া পার্কে আয়োজিত হয়েছে ‘পৌষ উৎসব’, আয়োজনে রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ। আছে বাংলার হস্তশিল্প, রকমারি খাবারের স্টল আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মোহরকুঞ্জে পাওয়া যাচ্ছে বাংলার সুগন্ধি চাল।

সম্মাননা

‘রুদ্ধ উপন্যাসে মূলগত নৈতিক রূপটি অভ্যন্তরেই ধরা থাকে, কিন্তু মুক্ত উপন্যাসে তা থাকে না: নতুন জীবনাভিজ্ঞতার মতোই তা খোলা থাকে, একটা কিছুতে থেমে যায় না।’ এমনই স্বচ্ছ গদ্যে বাংলাভাষী পাঠককে যিনি উপন্যাসের নন্দনতত্ত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করে তোলেন, তিনি পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায়। পাণ্ডিত্যের বহিঃপ্রকাশ কিংবা তত্ত্বের ভার তাঁর রচনাকে বিস্বাদ করে তোলে না। শিল্পিত স্বভাবের সিনেমায়ও তাঁর স্বচ্ছন্দ গতায়াত, মনস্ক দর্শক তাই তাঁর চলচ্চিত্রের নন্দনতত্ত্ব পড়েও নতুন ভাবনার খোরাক পান। নৈহাটির চিন্তক ও কর্মপ্রাণ এই মানুষটি প্রবন্ধগ্রন্থ রচনার সঙ্গে সম্পাদনাও করেছেন, যেমন সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে বিষ্ণু দে: কালে কালোত্তরে। তাঁকে নিয়ে ‘ক্ষ’ পত্রিকার (সম্পা: শাসিতরঞ্জন চক্রবর্তী) সম্মাননা সংখ্যায় প্রকাশিত রচনাদির মধ্যে যেমন স্মৃতির অভিনিবেশ, তেমনই তাঁর মননেরও আলোচনা।

সুবর্ণজয়ন্তী

জর্জ বিশ্বাস তাঁর গান শুনে বলেছিলেন, ‘ভালই তো গেয়েছ। তুমি কী করো? তোমায় গান শেখাতে চাই, তুমি শিখবে?’ এর পর টানা দশ বছর তাঁর কাছে নাড়া বেঁধেছিলেন। তালিম নিয়েছেন মায়া সেনের কাছেও। নরেন্দ্রপুরের স্নাতক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের মাস্টার্স এবং পাশাপাশি আইনশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেছেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী স্বপন গুপ্ত। ‘ভেবেছিলাম এম এ পাশ করে কোনও কলেজে অধ্যাপনা করব বা আইনশাস্ত্র পাশ করে কোনও আদালতে জুনিয়র হিসেবে...।’ তিনি পিয়ানো অ্যাকর্ডিয়ান বাজান দুর্ধর্ষ। ‘১৯৬৫, আমার বিএ পার্ট টু পরীক্ষার আগে এক সরস্বতী পুজোর জলসায় দেবব্রত বিশ্বাস আসবেন। আমাকে বলা হয়েছিল পিয়ানো অ্যাকর্ডিয়ান বাজাতে। বাজালাম। কিন্তু হল কী, দেবব্রত বিশ্বাস আসতে দেরি করছিলেন। উদ্যোক্তারা জোর করে আমায় বললেন, গান গাইতে। গান গাইছি। এমন সময় তিনি চলে এসেছেন। উনি আমার গান শুনে উদ্যোক্তাদের কাউকে দিয়ে বলে পাঠালেন, ওকে একটা আমার গাওয়া গান গাইতে বলুন। গাইলাম— আকাশ ভরা সূর্য তারা। পরের রোববারই ওঁর ট্রায়াঙ্গুলার পার্কের বাসায় এক রাশ স্বপ্ন নিয়ে এলাম শিখতে।’ ১৯৫৮-য় এইচ এম ভি থেকে প্রথম রেকর্ড। অল ইন্ডিয়া রেডিয়োতে গান করা শুরু ১৯৬৭-তে। প্লে ব্যাক, দেশে-বিদেশে হরেক অনুষ্ঠান। অনেক সম্মান। এ বার তাঁর সংগীত জীবনের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৪ জানুয়ারি রবীন্দ্রসদনে সন্ধে সাড়ে ৬টায় ‘গানের ঝর্ণাতলায় সাঁঝের বেলায়’ শীর্ষক এক সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ‘কারুকথা এইসময়’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE