Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

শিশুপাঠ্য কাহিনিকে মুখ-ঢাকা যে নীতিশিক্ষা নীরস করে তোলে তাকে এড়িয়ে চলতে চেয়েছিলেন সুরসিক রাজশেখর। তাঁর সরল মজার গদ্যের সঙ্গে জুড়ি মিলিয়েছিল পরিতোষ সেনের দারুণ সব অলংকরণ।

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৩৪
Share: Save:

ঐতিহ্য ও আধুনিকতা

বাল্মীকি রামায়ণ, ব্যাস-কৃত মহাভারত আর গীতার সারানুবাদ। রাজশেখর বসুর অনুবাদ বলতে এই তিনের নামই মনে পড়ে। কিন্তু বিষ্ণুশর্মার হিতোপদেশের গল্পেরও অনুকথন করেছিলেন তিনি। গল্পের চরিত্র যে সব জীবজন্তু তাদের নামেই নাম রেখেছিলেন গল্পের। শিশুপাঠ্য কাহিনিকে মুখ-ঢাকা যে নীতিশিক্ষা নীরস করে তোলে তাকে এড়িয়ে চলতে চেয়েছিলেন সুরসিক রাজশেখর। তাঁর সরল মজার গদ্যের সঙ্গে জুড়ি মিলিয়েছিল পরিতোষ সেনের দারুণ সব অলংকরণ। বিস্মৃতির অতলে পড়ে থাকা সে বই এ বার নবরূপে প্রকাশিত হল বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ থেকে। প্রকাশনা উপ-পরিচালক আশিস পাঠকের পরিকল্পনায় বড় আকারে, বড় হরফে, পরিতোষ সেন ও কালীকিংকর ঘোষদস্তিদারের অলংকরণ আর প্রভাস সেনের প্রচ্ছদে (সঙ্গের ছবি) সেই হিতোপদেশের গল্প মনে রাখার মতো উজ্জ্বল উদ্ধার। ১৯৬১-তে রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষে প্রকাশিত বিশ্বভারতী পত্রিকার বিশেষ সংখ্যার গ্রন্থ-সংস্করণটিও সংগ্রহযোগ্য। হাতে-তৈরি কাগজে সুদৃশ্য বাক্সবন্দি বইটিতে দামি কাগজে পুনর্মুদ্রিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্র, পেন্টিং ও পাণ্ডুলিপি, এমনকী বাদ যায়নি বিজ্ঞাপনগুলিও। পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে শিশুদের নিয়ে রবীন্দ্ররচনার সংকলন মুকুল, বিশ্বভারতী পত্রিকার নতুন সংখ্যা, সবুজকলি সেন ও কানুচরণ সাহু সম্পাদিত রিফ্লেকশনস: রবীন্দ্রনাথ টেগোরস এডুকেশনাল ফিলজফি আর যোগীরাজ বসুর উপনিষদের ভাবাদর্শ ও সাধনা। বদলে গিয়েছে পুস্তক-তালিকাটিও। প্রচ্ছদে রমেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লিনোকাটে পিয়ার্সন সাহেবের ক্লাস, পিছনের প্রচ্ছদে গগনেন্দ্রনাথ-অঙ্কিত রবীন্দ্রনাথে সুশোভন পুস্তক-তালিকাটি বুঝিয়ে দেয় ৯৫-এ পা-দিতে-চলা বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ ঐতিহ্য আর আধুনিকতায় ফিরছে তার স্বমহিমায়।

আশিতে পা

তিনি লিখেছেন, ‘যুদ্ধের মধ্যে, দুর্ভিক্ষের মধ্যে, রেশনের কাঁকর চাল আর ‘ফ্যান দাও মা’ কান্নার মধ্যে আমার ছোটবেলা কেটেছে বলেই হয়তো আমাদের বাল্যে খুব খাওয়াদাওয়ার গল্প হত, বড় বড় খাইয়েদের, আর ভাল ভাল রাঁধুনিদের গপ্পো শুনে মুগ্ধ হয়ে বড় হয়েছি।’ মা রাধারানি দেবী ছিলেন দারুণ রন্ধনপটীয়সী। বাবা নরেন্দ্র দেব ছিলেন শিশু-কিশোর পত্রিকা ‘পাঠশালা’র সম্পাদক। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘লালু’ এখানেই প্রথম প্রকাশিত হয়। কলেজ জীবন থেকেই বুদ্ধদেব বসুর কবিতা ভবনে নবনীতা দেব সেন-এর যাতায়াত। ওখানকার বিশেষ আড্ডায় আসতেন বর্তমান, অতীত ও ভবিষ্যতের কবি সাহিত্যিকরা। আর এই আড্ডাতেই তিনি প্রথম বুঝতে শেখেন, তাঁর কথার, ভাবনার, চিন্তার মূল্য আছে। তিনি স্বীকার করেন, বড় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এই আড্ডাটা ভীষণ জরুরি ছিল। এ বার তিনিই ১৩ জানুয়ারি আশিতে পা দেবেন। সেই উপলক্ষে রবীন্দ্রসদনে ১২ জানুয়ারি সন্ধে সাড়ে পাঁচটায় ‘আশিতে নবনীতা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হবে ‘নবনীতা দেব সেন রচনাবলি ১ম খণ্ড’ (দে’জ) গ্রন্থটি। নবনীতা দেব সেন-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনিতা অগ্নিহোত্রী। উপস্থিত থাকবেন শ্রীজাত, অমর মিত্র, স্বপ্নময় চক্রবর্তী, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

স্বদীক্ষিত

‘ভাল গল্প কিংবা কাহিনি ছেলেবেলা থেকেই আমায় আকর্ষণ করে। যিনি বলতেন, তাঁর সঙ্গে প্রায় লেপটে থাকতাম যতক্ষণ-না তিনি গোটা গল্পটা শেষ করতেন।’ বলছিলেন চিত্রকর শমীক দে। তাঁর ছবিতে লীন হয়ে থাকে নানান আখ্যানের অনুষঙ্গ, ঠাকুরমা-দিদিমার কাছে শোনা। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও এমবিএ শমীক স্বদীক্ষিত শিল্পী। পৌরাণিক আখ্যানের পাশাপাশি প্রাণিত হয়েছেন ভারতীয় লোকশিল্প ও ধ্রুপদী নৃত্য থেকে। ‘ওঁর স্টাইলে অদম্য এক প্যাশন টের পাওয়া যায়, ইরস আছে, পৌরাণিকতার সঙ্গে আধুনিকতার হাতমেলানো।’ জানালেন কিউরেটর শৌনক চক্রবর্তী। শমীকের ড্রইং ও পেন্টিংয়ের একক প্রদর্শনী ১০-১৪ জানুয়ারি (প্রতি দিন ৪-৮টা), উইভার্স স্টুডিয়োতে। ৯ জানুয়ারি সন্ধে সাড়ে ৬টায় উদ্বোধনে থাকবেন মার্কিন কনসাল জেনারেল ক্রেগ হল, শিপ্রা ভট্টাচার্য ও শুভাপ্রসন্ন।

অজানা গল্প

বাবা শৈলেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, মা লীলা দেবী। দুই মেয়ে মঞ্জরী আর মাধুরী। এর ঢের পরে হয়েছেন মাধুরী থেকে চলচ্চিত্রের নায়িকা মাধবী মুখোপাধ্যায়। কোলে-চড়া বয়সেই তিনি ‘সেপারেশন’ শব্দের মানে বুঝে যান। মা-বাবা আলাদা হয়ে গেলেন। দুই বোনকে নিয়ে শুরু হয় মায়ের বেঁচে থাকার লড়াই। আর শুধু ঠিকানা বদলের গল্প। এর বাড়ি সাত দিন তো ওর বাড়ি দেড় মাস, কম পয়সার ভাড়াবাড়ি খোঁজা। দিনের পর দিন পাটশাক ভাজা আর ভাত। তাঁর কথায়, ‘কষ্টে ছিলাম, কিন্তু দুঃখে ছিলাম না’।— তাঁর জীবনের নানা অজানা গল্প শোনা যাবে ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সংস্থা ‘ঋদ্ধি আ স্টেপ ফর মিউজিক’ নিবেদিত ১৪ জানুয়ারি, নন্দন ৪-এ, সন্ধে ৬টায় ‘জার্নি’ অনুষ্ঠানে। যেখানে স্বয়ং মাধবী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপচারিতায় থাকবেন দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাবনা এবং রূপায়ণে ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়।

শ্রদ্ধাঞ্জলি

স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগো থেকে ফিরলে শোভাবাজার রাজবাড়িতে তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা জানানো হয়। শিকাগো সম্মেলনের ১২৫ বর্ষ ও বিবেকানন্দের ১৫৫তম জন্মজয়ন্তীতে শোভাবাজার রাজবাড়ি ও ঋতবাক-এর আয়োজনে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান। রাজবাড়ির প্রবীরকৃষ্ণ দেবের আঁকা স্বামী বিবেকানন্দ ও তাঁর বাণী, রাজা বিনয়কৃষ্ণ, রাজা নবকৃষ্ণ, রাজবাড়ি, গ্যাসবাতিসহ অন্দরমহল, ঠাকুরদালান দেখা যাবে অজয় দত্তের তৈরি বিশাল পাঁচ ফানুসে। ১২ জানুয়ারি সকাল ১০টায় শশী পাঁজা ফানুস উড়ানে শুভ সূচনা করবেন রাজবাড়ি থেকে স্বামীজির বাড়ি পর্যন্ত শোভাযাত্রার। ঘোড়ায় টানা জুড়িগাড়ি, ভিনটেজ কার ও বাজনদারসহ পদযাত্রায় শামিল হবেন রাজপরিবার, দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি, গীতবিতান শাখাসমূহ, স্থানীয় স্কুলকলেজের ছাত্রছাত্রীরা। দুপুর আড়াইটেয় রাজবাড়িতে বিশিষ্টজনের সংবর্ধনা, পরে বক্তৃতা, বই প্রকাশ ছাড়া থাকছে পঞ্চকবির গান ও পুরনো বাংলা গান।

সুচিত্রা স্মরণ

বাঙালি মধ্যবিত্ত জীবনের কথাকার হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষবিন্দু ছুঁয়েছিলেন সুচিত্রা ভট্টাচার্য। তাঁর লেখনীতে বাঙালির মূল্যবোধের পরিবর্তন তথা বাংলার নারীসমাজের ক্রমিক বদল দর্পণের মতো বিম্বিত হয়েছে। আবার কিশোরকিশোরীদের জন্যও তিনি নেহাত কম লেখেননি। এই সব কিশোর রচনাই একত্র করে দুই খণ্ডে প্রকাশিত হচ্ছে সুচিত্রা ভট্টাচার্যের কিশোর সমগ্র (পত্রভারতী), ভূমিকা লিখেছেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। দুটি উপন্যাস ছাড়া এতে থাকছে ষাটটি গল্প, দুটি ভ্রমণকাহিনি, একটি মজার নাটক ও একটি আত্মজৈবনিক রচনা। বইটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন নবনীতা দেব সেন। ১০ জানুয়ারি ৫টায় শিবানন্দ হল, রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার, গোলপার্কে সুচিত্রা ভট্টাচার্যের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। দেওয়া হবে স্মারক মেধাবৃত্তি, প্রাপক একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির আট জন দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রী। থাকবে তাঁর গল্পপাঠ ও শ্রুতিনাটক।

হীরকজয়ন্তী

১৯৫৮ সালের ২২ এপ্রিল শুরু হয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয় নরেন্দ্রপুর। তার পর ছয় দশক অতিক্রান্ত, আবাসিক স্কুলটি ছাত্র-শিক্ষক-কর্মীদের সম্মিলিত কীর্তিতে স্থান করে নিয়েছে ইতিহাসে। গৌরবের অংশী স্কুলের প্রাক্তন ছাত্ররাও, দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা ওঁরা বারবার ফিরে আসেন শান্ত সবুজ আশ্রমের ছাত্রাবাসে, মাঠে। গ্রীষ্মে-শীতে ওঁরা চালু করেছেন ‘রিট্রিট’, স্কুলবেলার মতোই সকাল থেকে সন্ধে দিন দুয়েকের নিয়মনিষ্ঠ যাপন। স্কুলের হীরকজয়ন্তীর বছরে বিদ্যালয় প্রাক্তনী আয়োজন করছেন বর্ষব্যাপী নানান অনুষ্ঠান। ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে রামকৃষ্ণ মিশন গোলপার্ক থেকে নরেন্দ্রপুর অবধি শোভাযাত্রা দিয়ে শুরু, পরে হবে আলোচনা, বিতর্কসভা, জুবিলি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। প্রিয় স্কুলকে ঘিরে উৎসবের হীরকদ্যুতি।

শতবর্ষে

মণিপুরের বাইরে মণিপুরি নৃত্য চর্চার পথিকৃৎ রবীন্দ্রনাথ। উদয়শংকরও তাকে সাদরে স্থান দিয়েছিলেন। পঞ্চাশের দশকে যে নৃত্যগুরু এই সম্পদ এনে দিলেন গোটা দেশকে, তিনি বিপিন সিংহ। গুরুগৃহে সাবেকি তালিম নেন, কিন্তু প্রথাগত নাচে আবদ্ধ থাকেননি। যা ছিল মন্দিরপ্রাঙ্গণে কৃষ্ণ-আরাধনার অঙ্গ, সেই রাসনৃত্যকে আধুনিক মঞ্চের উপযোগী করে তোলেন। প্রথা ভেঙে মেয়েদেরও শেখান শৌর্যপূর্ণ ‘পুং চোলম।’ মুম্বই, কলকাতা ও ইম্ফলে স্থাপন হয় মণিপুরি নর্তনালয়। সারা জীবন অক্লান্ত গবেষণা করেছেন বৈষ্ণব সাহিত্য, মণিপুরের নিজস্ব নানা ভাষার সাহিত্য, মৌখিক ঐতিহ্য নিয়ে। সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কারসহ নানা সম্মান পেয়েছেন। চলে গিয়েছেন সতেরো বছর আগে, এ বছরটি তাঁর জন্মশতবার্ষিকী। এই উপলক্ষে শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রীতি পটেল, পৌষালী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ শিষ্যদের নিবেদন ‘খুরুমজরি’ (শ্রদ্ধাঞ্জলি), ৯-১০ জানুয়ারি, সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহ, আইসিসিআর।

সাংস্কৃতিক

বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি রাশিয়া ও মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে ভারতের সাংস্কৃতিক ভাব-বিনিময়ের ঐতিহ্যও চিরায়ত। সেই কৃষ্টির মেলবন্ধনে ১৩-১৪ জানুয়ারি সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করেছে ‘হেরিটেজ বেঙ্গল’। ভারত-রুশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’দেশের মৈত্রী ও পারস্পরিক সম্পর্ক, ঐতিহ্য নিয়েও আলোচনা হবে। আইসিসিআর-এর সহযোগিতায় রবীন্দ্র সদনে এই অনুষ্ঠানে থাকবে রাশিয়ার অস্কার ব্যান্ড এবং মঙ্গোলিয়ার ইটুজেন। ভারতের তরফে সংগীত পরিবেশন করবেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী এবং শুভমিতা।

স্মৃতির আমেজ

শেষ পৌষের জমাট শীতে শাল মুড়ি দিয়ে গদি-ফরাশের উপর বসে ভারতীয় রাগসংগীতের আমেজ উপভোগের স্মৃতিকে উসকে দিতেই সুতানুটির মজলিশ। গুরু-শিষ্য পরম্পরায় বহমান ধ্রুপদী সংগীতের সুর ও বন্দিশকে বৈঠকি আমেজে উপস্থাপন করার তাগিদেই সুতানুটি পরিষদ চোরবাগান আঞ্চলিক কমিটির ২৬তম উচ্চাঙ্গ সংগীতের আসর বসছে ১৩ জানুয়ারি কৈলাস বোস স্ট্রিট লাহাবাড়িতে। কণ্ঠসংগীতে জয়তীর্থ মেভুন্ডি ও সেতারে শাহিদ পারভেজ (তবলায় শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়) অংশ নেবেন। শুরুতে পরিষদ আয়োজিত সংগীত প্রতিযোগিতা ‘মেধা অন্বেষণ ২০১৭’-এর কণ্ঠ ও যন্ত্রসংগীত বিভাগের বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।

কে প্রথম

বাংলা লোককথার প্রথম সংকলক কে? সম্প্রতি গবেষক শিশির মজুমদার এশিয়াটিক সোসাইটির মাসিক অধিবেশনে এক পূর্ণাঙ্গ গবেষণাপত্র পেশ করে দেখিয়েছেন, রেভারেন্ড লালবিহারী দে-র ফোকটেলস অব বেঙ্গল (১৮৮৩) প্রকাশের আগেই ১৮৭২-এ ‘দি ইন্ডিয়ান অ্যান্টিকোয়ারি’ পত্রিকায় দিনাজপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ডি এইচ ড্যামন্ট প্রকাশ করেছিলেন পলি জনজাতির অনেকগুলি লোককথা। ফলে তিনি ড্যামন্টকেই এ বিষয়ে পথিকৃতের সম্মান দিতে চেয়েছেন।

সংগীতজীবন

আমি বাংলা জানি না, একটু একটু বলতে পারি’— এটুকু জানাতেই করতালিতে ভরে উঠেছিল নজরুল মঞ্চের ‘স্বর-সম্রাট’ অনুষ্ঠান। উস্তাদ আল্লারাখার জ্যেষ্ঠ পুত্র জাকির হুসেনের খ্যাতি এখন বিশ্ব জুড়ে। মাত্র সাত বছর বয়সে শ্রোতাদের সামনে এসেছিলেন তিনি, স্বীকৃতি পেয়েছিলেন শিশু প্রতিভা হিসেবে। চার বছর বয়সেই শুরু হয়েছিল তালিম। প্রবাদপ্রতিম পিতার নির্দেশে কঠোর পরিশ্রমই ওঁকে আজ খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গিয়েছে। ছেলেবেলা কেটেছে মাহিম-এ। শুধুমাত্র হিন্দুস্থানি সংগীতই নয় বরং সমসাময়িক জ্যাজ বা বিশ্বসংগীতেও ওঁর অবদান আজ স্বীকৃত। রয়্যাল অ্যালবার্ট হল থেকে ম্যাডিসন স্ক্যোয়ার গার্ডেন— সর্বত্রই শ্রোতারা মেতেছেন তাঁর অনবদ্য সংগীতে। কাজ করেছেন বিশ্বখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে। পণ্ডিত রবিশংকর, আলি আকবর বা বিলায়েত খান— অসংখ্য ব্যক্তিত্বের স্মৃতি ওঁর মন জুড়ে। তবে শুধু সংগীতই নয়, অভিনয়ও করেছেন জেমস আইভরির হিট অ্যান্ড ডাস্ট, সাই পরাঞ্জপের সাজ প্রভৃতি ছবিতে। সংগীত নির্মাণ করেছেন বার্তোলুচির লিটল বুদ্ধ, অপর্ণা সেনের মি. অ্যান্ড মিসেস আইয়ার এবং ইসমাইল মার্চেন্টের ছবি ইন কাস্টোডি, দ্য মিস্টিক ম্যাসিউর-এ। ১৯৬০ থেকে অসংখ্য হিন্দি ছবিতেও বাজিয়েছেন তিনি। তবলার বোলে কথা বলেন তিনি। নাসরিন মুন্নি কবিরের সঙ্গে একান্ত আলাপে জাকির জানিয়েছেন ওঁর জীবনের নানা কথা। তা নিয়েই হার্পার কলিন্সের বই জাকির হুসেন: আ লাইফ ইন মিউজিক। এ বারের টাটা লিটারারি মিটে জানুয়ারিতেই আসছেন তিনি। বইটি প্রকাশ পাবে সেখানে এবং তিনি শোনাবেন নিজের জীবনের কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE