Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

উত্সব শেষ হবে ফেলুদাকে নিয়ে সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়ের দু’ঘণ্টার ছবি ‘ফেলুদা: ফিফটি ইয়ার্স অব রে’জ ডিটেকটিভ’ দেখিয়ে। সঙ্গে সে ছবিরই পোস্টারের অংশবিশেষ।

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৭
Share: Save:

ছোটদের অ্যাডভেঞ্চার

সপ্তম কলকাতা আন্তর্জাতিক শিশু কিশোর চলচ্চিত্র উত্সব ছোটদের তো বটেই, বড়দেরও। আগে তো হত না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন সরকারের উদ্যোগেই এই উৎসবের শুরু।’ বলছিলেন অর্পিতা ঘোষ, শিশু কিশোর আকাদেমি-র সভাপতি: ‘যে ছবিগুলি বাছি সেগুলি এক দিকে যেমন ছোটদের বড় হয়ে-ওঠার ছবি, অন্য দিকে বড়দেরও ছোটবেলাকার ছবি।’ ১৯-২৭ জানুয়ারি দেখানো হচ্ছে দু’শোরও বেশি সেরা দেশি-বিদেশি ছবি। প্রায় তেত্রিশটি দেশ ছবি পাঠাচ্ছে। নন্দন-এর সব ক’টি প্রেক্ষাগৃহ, রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, স্টার থিয়েটার, রবীন্দ্রতীর্থ ও অহীন্দ্র মঞ্চে একযোগে ছবি দেখানো চলবে। উদ্বোধনী ছবি অমোল গুপ্তের ‘স্নিফ’। ছোটদের অবাধ স্বাধীনতা ফিল্মোত্সবের এই ক’টা দিন ডেলিগেট কার্ড গলায় ঝুলিয়ে পছন্দমতো সিনেমাগুলি দেখে নেওয়ার। তাদের সঙ্গে আমন্ত্রিত বড়রাও। এ বারের উত্সবের ফোকাস: অ্যাডভেঞ্চার। নানা ধরনের বিভাগ সেই অ্যাডভেঞ্চারের ছবিগুলির... ওয়াইল্ড লাইফ, ফ্রেন্ডশিপ, গ্রোয়িং আপ... ইত্যাদি। আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানির পাশাপাশি ইরান, তুরস্ক, মঙ্গোলিয়া, মেক্সিকো, কাজাখস্তান, লাক্সেমবার্গের এই সব ছবি যেমন মানবিক, তেমনই ঝলমলে রঙিন। ‘আর বয়ঃসন্ধি থেকেই বাঙালির জীবনে অ্যাডভেঞ্চার বলতে ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি। আমার কাছে তো ফেলুদা আদতে স্বয়ং সত্যজিৎ।’ মন্তব্য অর্পিতার। সে জন্যেই সত্যজিতের নানাবিধ কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্দীপ রায়ের সম্পাদনায় প্রকাশ পাবে একটি বই: সত্যজিৎ একাই ১০০। ‘ফেলুদা সরগরম’ নামে একটি প্রদর্শনী চলবে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায়, সত্যজিৎ রায় সোসাইটির সহায়তায়। আর উত্সব শেষ হবে ফেলুদাকে নিয়ে সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়ের দু’ঘণ্টার ছবি ‘ফেলুদা: ফিফটি ইয়ার্স অব রে’জ ডিটেকটিভ’ দেখিয়ে। সঙ্গে সে ছবিরই পোস্টারের অংশবিশেষ।

অভেদানন্দ স্মরণে

স্বামী অভেদানন্দকে গুরুভাইরা ডাকতেন ‘কালী বেদান্তী’, সন্ন্যাসের পর তিনিই স্বামী অভেদানন্দ। শ্রীরামকৃষ্ণের এই সন্ন্যাসী শিষ্যকে বিবেকানন্দ নিউ ইয়র্কে বেদান্ত সোসাইটির প্রধান করে পাঠিয়েছিলেন। তপস্বী, বাগ্মী, সুলেখক স্বামী অভেদানন্দের (১৮৬৬-১৯৩৯) জন্মের সার্ধশতবর্ষ অতিক্রান্ত, তাঁর স্মরণে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের ভারততত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের আয়োজনে দু’দিন ব্যাপী আলোচনাসভা ও প্রদর্শনী। ১৭ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটেয় ইনস্টিটিউটের আর্ট গ্যালারিতে ভারতীয় শিল্প বিষয়ক প্রদর্শনীর উদ্বোধনে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের সহাধ্যক্ষ স্বামী গৌতমানন্দ। ‘ভারতীয় দর্শন ও সংস্কৃতি’ শীর্ষক আলোচনাসভার প্রথম অধিবেশন দুপুর তিনটেয়, বক্তা স্বামী ভজনানন্দ ও স্বামী সুবীরানন্দ। শোনানো হবে স্বামী অভেদানন্দের অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো কৃত রেকর্ডের বক্তৃতাংশ। ১৮ জানুয়ারি দিনভর আলোচনা শিবানন্দ হল-এ।

ট্রামযাত্রা

নিখিল সরকার লিখেছেন, ‘বাসের মতো ট্রাম ডাঙার পাখি নয়। পথে পথে এর উড়ে চলার ইতিহাসটা— লিখিত ইতিহাস। ইস্পাতে লেখা;... এ শহরের মনের মাটিতে এর চাকার দাগ— পাকা দাগ। অনেক দিনের পুরনো, অনেকখানি গভীর।’ ঠিক সে রকমই মেলবোর্ন-এর ট্রাম কন্ডাক্টর-ড্রাইভার রবার্টো ডি’আন্দ্রিয়া-র মনে (সঙ্গের ছবি) কলকাতার ট্রাম গভীর রেখাপাত করে আছে প্রায় বছর কুড়ি ধরে। সরকার যখন পুরনো ট্রাম লাইন তুলে দিতে চাইছে, তখন তিনি বাঁচাতে চেয়েছেন ট্রাম লাইন। ঝঁাপিয়ে পড়েছেন ট্রামের সঙ্গে জড়িয়ে মানুষের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও শিল্পের জন্যও। এ বার তাঁর এই ট্রাম-প্রেম নিয়েই মহাদেব শী ‘ট্রামযাত্রা’ শীর্ষক এক চলচ্চিত্র বানিয়েছেন। ছবিটি মেলবোর্ন-ইন্ডিয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখানোও হয়েছে। ১৯ জানুয়ারি সন্ধে ৬টায় এটি দেখানো হবে গোর্কি সদনে।

সহধর্মিণী

সাহিত্যকর্মে বা চিন্তাধারায় উনিশ শতক এ বঙ্গে জোয়ার এনেছিল ঠিকই, পাশাপাশি আবার এই শতকেই যুক্তিহীন সামাজিক সংস্কারের জাল বঙ্গনারীকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধেও রেখেছিল। একই সময়কালে বেশ কিছু নারী তাঁদের নিজগুণে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছিলেন। স্মরণীয় বঙ্গপুরুষদের জীবনসঙ্গিনী হিসেবে সেই নারীদের মহিমা বর্ণনায় ‘সহধর্ম্মিণী’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ রচনা করেছিলেন মন্মথনাথ ঘোষ, ১৩৩৫ বঙ্গাব্দে। এ বার সেই লেখা ও তাঁর আলোচিত ‘সহধর্ম্মিণী’দের আলোকচিত্র নিয়ে উত্তরপাড়ার ‘জীবনস্মৃতি’ ডিজিটাল আর্কাইভ এক চিত্রপ্রদর্শনী ও আলোচনাসভার আয়োজন করেছে। ২০ জানুয়ারি ‘উনিশ শতকের বঙ্গনারী ও বাংলা সাময়িক পত্রিকা’ বিষয়ে বলবেন মীরাতুন নাহার। উপস্থিত থাকবেন বেনজীন খান। ২৭ জানুয়ারি ‘সামাজিক প্রথা ও উনিশ শতকের বঙ্গনারী’ নিয়ে বলবেন নিখিল সুর। পরিকল্পনায় অরিন্দম সাহা সরদার।

কারুশিল্প

কারুশিল্পের প্রসারে পথিকৃৎ কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইলা পালচৌধুরীর মনন যেন এক সুতোয় বাঁধা ছিল। কমলাদেবী দিল্লিতে ‘ক্রাফটস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’ প্রতিষ্ঠা করেন, পরে মাদ্রাজে। কলকাতায় ৬৪ লেক প্লেসের ‘পালচৌধুরী বাড়ি’-তে ১৯৬৭-র ৫ অগস্ট ইলা পালচৌধুরীর সঙ্গে কমলাদেবী, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, শ্রীমতী ঠাকুর প্রমুখের উপস্থিতিতে জন্ম নিল ‘ক্রাফটস কাউন্সিল অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’, যার প্রথম সভাপতি সুনীতিকুমার। নদিয়ায় পালচৌধুরীদের জায়গাতেই শুরু হল টাঙ্গাইল থেকে আসা বয়নশিল্পীদের নিয়ে কাজ। কৃষ্ণনগরে মৃৎশিল্পের উন্নতি সাধনে দাঁড়ালেন মৃৎশিল্পীদের পাশে। এখন রাজ্যের কারুশিল্পীদের নানা ভাবে এগিয়ে চলার রাস্তা দেখিয়ে চলছে সংস্থাটি। রুবি পালচৌধুরীসহ শ’খানেক সদস্যের নিরলস প্রচেষ্টায় চলছে কাজ। ১৮-২০ জানুয়ারি সংস্থার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। সূচনায় আইসিসিআর-এর সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে বিকেল পাঁচটায় অশোক চট্টোপাধ্যায় ‘অন দ্য ট্রেল অব ক্রিয়েটিভিটি: দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টোরি’ ও জহর সরকার ‘রিচুয়াল ক্রাফট অব বেঙ্গল’ প্রসঙ্গে বলবেন, থাকবেন গৌতম ঘোষ। তিন দিনই থাকবে আলোচনা, কর্মশালা এবং বিশিষ্ট কারুশিল্পীদের কাজের প্রদর্শনী।

প্রতিবেশীকে চিনুন

অযোধ্যার নবাব ওয়াজিদ আলি জীবনের শেষ ত্রিশ বছর কাটিয়ে গিয়েছেন মেটিয়াবুরুজে, সেখানেই তিনি গড়ে তুলেছিলেন ‘ছোটা লখনউ’। উনিশ শতকের সেই গরিমার রেশ আজকের কলকারখানা আর বন্দরে ঘেরা মেটিয়াবুরুজেও থেকে গিয়েছে। অথচ বাকি কলকাতার অধিকাংশ মানুষের কাছেই মেটিয়াবুরুজ মানে ‘অপর’, সেখানে বাস করে ‘ওরা’। ওঁদের চেনা না হলেও যেন ক্ষতি নেই। ‘প্রতিবেশীকে চিনুন’-এর উদ্যোগে এ বার তাই মেটিয়াবুরুজকে অন্য ভাবে চেনানোর চেষ্টা। ২১ জানুয়ারি অ্যাসোসিয়েশন স্ন্যাপ, এবং আলাপ ও অভিযান পাবলিশার্স-এর আয়োজনে হেরিটেজ ওয়াক, স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথোপকথন, মেটিয়াবুরুজ ইমামবাড়ায় ওয়াজিদ আলির জীবনকেন্দ্রিক উপন্যাস আখতারনামা থেকে লেখক শামিম আহমেদের পাঠ।

সমাজ-সংস্কারক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে তখন আবুল হুসেনের (১৮৯৭-১৯৩৮) অত্যন্ত সুনাম। মুসলিম সমাজের স্থবিরতাকে দূর করার জন্য কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল ফজলদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করলেন ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ যার মুখপত্র হল ‘শিখা’। কিন্তু আবুল হুসেনকে তাঁর মতামতের জন্য নিজের সমাজের কট্টরপন্থীদের পক্ষ থেকে সহ্য করতে হয়েছে বহু নির্যাতন ও লাঞ্ছনা। তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে আইনজীবীর পেশা গ্রহণ করেন। বাঙালি মুসলিমদের মধ্যে আইন বিষয়ে প্রথম স্নাতকোত্তর এই মানুষটিই ওয়াকফ আইনের জনক। বিস্মৃত এই মনীষীর জন্মের একশো কুড়ি বছর পূর্তি উদযাপন করছে ‘অহর্নিশ’ পত্রিকা। ১৯ জানুয়ারি বিকেল পাঁচটায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ হলে তাঁকে নিয়ে বলবেন মীরাতুন নাহার, মিলন দত্ত, বেনজীন খান এবং শুক্তি সরকার। তাঁর রচনা থেকে পাঠ ও সংগীত পরিবেশনে দুই বাংলার শিল্পীরা। সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রাচ্যসংঘ।

ফিরে দেখা ৪২

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ১৯৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। তারই ৭৫ বছর পূর্তি উদ্‌যাপনে উদ্যোগী বিরাসত আর্ট পাবলিকেশন, রিফ্লেকশন অব অ্যানাদার ডে, বিরাসত আর্ট ও আয়তক্ষেত্র। ১৬-২০ জানুয়ারি আই সি সি আর-এ আয়োজিত হয়েছে প্রদর্শনী ও আলোচনাসভা— ‘রিভিজিটিং ৪২’ শীর্ষকে। মূল ভাষণ দেবেন ভাস্কর চক্রবর্তী, থাকছেন আরও অনেক বিশিষ্টজন। প্রদর্শনীতে যোগ দিচ্ছেন কলকাতার সুপরিচিত সংগ্রাহকরা— তাঁরা দেখাবেন ১৯০৫-১৯৪৭ সময়কালের ‘স্বদেশি’র নমুনা। দেখা যাবে ‘গৃহস্থ’ আর ‘ইকমিক’ কুকার, ‘কাজল’ কালি, পোর্সিলিন আর দৈনন্দিনের সামগ্রীতে স্বদেশির চিহ্ন (সঙ্গের ছবি), বিপ্লবীদের বই ও চিঠি, পত্রপত্রিকা, দেশলাই লেবেল, এনামেল বোর্ডে স্বদেশি বিজ্ঞাপন, পতাকা, চরকা, ব্যঙ্গচিত্র, স্বদেশি কলম, ডাকটিকিট, রেকর্ড আরও কত কী। দেখানো হবে অরোরা ফিল্মসের ১৯৪৭-এর ১৫ অগস্ট তোলা একটি তথ্যচিত্র। থাকছে কলাভৃৎ-এর স্বদেশি গান, বঙ্গাড্ডার আসর। সামগ্রিক গ্রন্থনায় চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।

বিস্মৃত লেখক

শ্রীরামকৃষ্ণ, শ্রীমা সারদাদেবী, স্বামী বিবেকানন্দ ও রামকৃষ্ণ-মণ্ডলী সম্পর্কে লেখকরূপে একদা পরিচিত কুমুদবন্ধু সেন এখন বিস্মৃত-লেখক পর্যায়ে চলে গিয়েছেন। সেই ভাবনা থেকেই প্রকাশনা-প্রতিষ্ঠান সূত্রধর ২০ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টায় ছাতুবাবু-লাটুবাবুর ঠাকুরদালানে বিস্মৃত বাঙালি কুমুদবন্ধু সেন স্মারক আলোচনাসভা ও গ্রন্থপ্রকাশের আয়োজন করেছে। ‘কালের দর্পণে: বিবেক-দর্শন’ বিষয়ে বলবেন প্রব্রাজিকা ভাস্বরপ্রাণা এবং সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। প্রকাশ পাবে পুস্তকাদি... স্বামী প্রভানন্দ ও স্বামী ভজনানন্দ রচিত বিবেকানন্দ বিষয়ক বই আছে সেগুলির মধ্যে। গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশনে ১৯৬৩-র ২৯ জানুয়ারি বিবেকানন্দকেন্দ্রিক যে ঐতিহাসিক ভাষণটি দিয়েছিলেন ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, সেটিই পুস্তকাকারে প্রকাশ পাবে সে সন্ধ্যায়: বিবেকানন্দ এবং আধুনিক বিশ্বের আধ্যাত্মিক নবজাগরণ। ‘সংস্কৃত ভাষার প্রতি বিবেকানন্দর ছিল গভীর শ্রদ্ধা’, লিখেছেন ইতিহাসবিদ সব্যসাচী ভট্টাচার্য, তাঁরও স্বামী বিবেকানন্দর ভাষাচিন্তা বইটি প্রকাশ পাবে অনুষ্ঠানটিতে। আর প্রকাশিত হবে চিন্ময় গুহের শ্রীরামকৃষ্ণ, রম্যাঁ রল্যাঁ ও বিবেকানন্দ: এক সমুদ্রপ্রতিম অনুভূতি।

সংস্কৃতি উৎসব

এ শহরে শীতকালে উৎসবের হয়তো অভাব নেই। কিন্তু রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ১৭-২০ জানুয়ারি যে সংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন হতে চলেছে, সেটি অভিনব। শাস্ত্রীয় সংগীতের সঙ্গে থাকছে রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, দ্বিজেন্দ্রগীতি এমনকী সাংস্কৃতিক আড্ডা। থাকবেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, শংকরলাল ভট্টাচার্য, বিভাস চক্রবর্তী, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী ও বিজয়লক্ষ্মী বর্মণ। গানে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, অদিতি মহসীন, উস্তাদ রাশিদ খান, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, শ্রাবণী সেনসহ বিশিষ্ট শিল্পীরা। বাদ্যযন্ত্রে পণ্ডিত স্বপন চৌধুরী, পণ্ডিত তন্ময় বোস, উস্তাদ রফিক খান প্রমুখ। ১৮ আর ১৯ মরকতকুঞ্জ প্রাঙ্গণে হবে অবন মেলা। বাংলার লোকসংগীত গাইবেন অর্জুন ক্ষ্যাপা ও মনসুর ফকির। আর এ মাসের শেষেই জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে আলোক-ধ্বনি অনুষ্ঠান সাধারণ দর্শকের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে।

জন্মদিনে

পুরাতন আশ্রম ভুলে/ যেতে হলে মানুষেরই দিকে চলে যাও/ বন্দর ছেড়েও নৌকো মানুষেরই দিকে দেখি যায়/ অন্য উপকূলে’— কবিতা লেখেন অথচ কী অবলীলায় নিজের পুরনো কবিতাগুলি ভুলে যেতে চান নতুন কবিতার তাড়নায়। কলেজ জীবনে কবিতা লেখার হাওয়া যখন বইল মনের মধ্যে তখন এক জ্যেষ্ঠের উপদেশ খুব কাজে দিয়েছিল— যা লিখলে তা যথাশীঘ্র ভুলে যেও, না হলে পরের কবিতাটা আর লিখতে পারবে না। ফলে ‘নিজের কবিতার প্রেমে পড়ার বিপদ থেকে মুক্ত ছিলাম।’ নিয়ত কবিতা চর্চার কথা বলেন যখন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তাঁর কণ্ঠস্বরে এক আনন্দময় উত্তেজনার রেশ: ‘লিখছি, রীতিমতো লিখছিই বলতে পারো, গত এক মাসে গোটা এগারো কবিতা লিখে ফেলেছি... কবিতার মধ্যেই আছি এখন।’ তাঁর অলটার-ইগো অপু’ও তো সাহিত্যিকই হতে চেয়েছিল, যদিও বিষণ্ণ এক সূর্যাস্তে উড়িয়ে দিয়েছিল নিজের অসমাপ্ত উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি। সত্যজিতের ‘অপুর সংসার’-এর সেই স্মরণীয় মুহূর্ত আজও বাঙালির বুকের গভীরে ঘাই মেরে যায়। সে ছবিতে প্রথম অভিনয় করেই তিনি নায়ক। কবিতার সঙ্গে নাটকও লিখেছেন অবিরত, দিনান্ত বেলায় বুঁদ হয়েছেন ছবি আঁকায়। এখনও দারুণ ভালবাসেন আড্ডা দিতে। ‘তাঁকে ঘিরে আড্ডার আয়োজন তাঁর ৮৪তম জন্মদিনে।’ জানালেন কন্যা পৌলমী। থাকবেন অপর্ণা সেন, প্রসেনজিৎ, দেবশঙ্কর, সুমন, কৌশিক, ব্রাত্য। তাঁকে গান শোনাবেন শ্রীকান্ত, পারমিতা। সঞ্চালনায় মীর। ১৯ জানুয়ারি সন্ধে সাড়ে ৬টায় অ্যাকাডেমিতে। এ উদ্যোগ মুখোমুখি-র শ্রদ্ধার্ঘ্য, জানালেন কর্ণধার বিলু দত্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE