Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: উনিশ শতকের স্বদেশি ছবি

কলকাতার বুকে শোভাবাজার-চিৎপুর এলাকায় এক দিন সত্যি সত্যিই ছিল এক বিশাল বটগাছ। শানবাঁধানো এই বটতলাকে কেন্দ্র করেই জমে উঠেছিল বটতলার বইয়ের বেসাতি।

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৫৪
Share: Save:

পৃথিবীর সব বড় শহরেই উচ্চকোটির কুলীন সংস্কৃতির পাশাপাশি বহমান ছিল আমজনতার স্বতন্ত্র লৌকিক সংস্কৃতির স্বতঃস্ফূর্ত ধারা। বলতে গেলে সমান্তরাল এবং সমান বেগবান।’’— লিখছেন শ্রীপান্থ তাঁর বটতলা (আনন্দ) বইয়ে। কলকাতার বুকে শোভাবাজার-চিৎপুর এলাকায় এক দিন সত্যি সত্যিই ছিল এক বিশাল বটগাছ। শানবাঁধানো এই বটতলাকে কেন্দ্র করেই জমে উঠেছিল বটতলার বইয়ের বেসাতি। ছড়িয়ে পড়েছিল বাঙালিটোলার প্রায় সর্বত্র, এমনকী শ্রীপান্থের ভাষায় ‘মনে হয় বটতলা-রসে বুঝি সমগ্র বাংলা মুলুক প্লাবিত।’ দুশো বছর আগে বটতলায় ছাপাছাপি শুরু। বইয়ের সঙ্গে কাঠখোদাই ছবি ছাপা শুরু হতেও দেরি হয়নি, ১৮১৮-য় ছাপা সঙ্গীততরঙ্গ বইয়েই ছবি রয়েছে। আবার শুধু বইয়ে নয়, আলাদা করেও ছাপা হত বড় আকারের কাঠখোদাই ছবি, ফ্রেমে বাঁধিয়ে টাঙানো হত ঘরের দেওয়ালে। বটতলার কাঠখোদাই শিল্পীদের মধ্যে খোদাই কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত স্বর্ণকার বা কর্মকারের মতো সম্প্রদায়ের মানুষ ছাড়াও ছিলেন প্রায় সব সম্প্রদায়ের মানুষজন। বইয়ের জন্য ছবি আঁকা বা খোদাই করা ছাড়াও তাঁরা হ্যান্ডবিল পোস্টারের জন্য বড় বড় কাঠের হরফ কাটা, কাঠখোদাই করে ব্লক তৈরি, বিজ্ঞাপনের নকশা, পণ্যের লেবেল, বাহারি অলঙ্করণ সবই কাটতেন। অন্য দিকে কালীঘাটের পট ছিল বাংলার পটুয়াদের নিজস্ব সৃষ্টি। শ্রীপান্থের মতে, বটতলার কাঠখোদাই কালীঘাটেরই রকমফের মাত্র। উনিশ শতকের মাঝামাঝি চাহিদা মেটাতে কালীঘাটের শিল্পীরা যখন লিথোগ্রাফের দিকে ঝুঁকছেন, সেই জনপ্রিয়তা দেখেই হয়তো বটতলার প্রকাশকরা বড় আকারের কাঠখোদাই ছবি ছেপে বাজার ধরার চেষ্টা করেছিলেন। তবে ১৮৮০-৯০ পর্বেই এর দিন শেষ হয়ে আসে, যদিও পঞ্জিকা আর বইয়ের ছবিতে কাঠখোদাই টিকে ছিল আরও কয়েক দশক। শিল্পী অসিত পাল দীর্ঘ দিন কাজ করছেন এই কাঠখোদাই ছবি নিয়ে, তাঁর উডকাট প্রিন্টস অব নাইনটিন্থ সেঞ্চুরি ক্যালকাটা (সিগাল) বা উনিশ শতকের কাঠখোদাই শিল্পী প্রিয়গোপাল দাস (সিগনেট) এই বিষয়ে প্রামাণিক বই। তাঁরই সংগ্রহ নিয়ে তাঁর পরিকল্পনায় এ বার প্রদর্শনী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে, সহযোগিতায় আকার প্রকার— ‘নাইনটিন্থ সেঞ্চুরি স্বদেশি আর্ট ইন বেঙ্গল’। থাকছে কাঠখোদাই ছবি, কাঠের ব্লক ও লিথোগ্রাফ। ১৩ এপ্রিল সাড়ে ৫টায় উদ্বোধন করবেন রবীন মণ্ডল, থাকবেন শুভাপ্রসন্ন। প্রদর্শনী চলবে ১৩ মে পর্যন্ত। সঙ্গে তারই একটি ছবি।

স্মরণ মননে

‘বর্ত্তমান যুগে মানবের মন কোন বিশ্ববিদ্যালয়, ধর্ম্মমন্দির বা বিধিবদ্ধ সমিতির দ্বারা চালু নয়— আদর্শ জীবনকে আদর্শ নাটকই প্রত্যক্ষভাবে উদাহরণ দ্বারা লোকের চোখে আঙ্গুল দিয়া দেখাইয়া দেয়— সেই নাটক ও নাট্যালয়ের নেতা স্রষ্টা ও গুরু গিরিশচন্দ্র!’ মণিলাল বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকায়, বৈশাখ ১৩৫০। তাঁর এই রচনাটি ‘গিরিশ-প্রসঙ্গ’ গ্রন্থাকারে প্রকাশ করবে সূত্রধর। সঙ্গে আরও তিনটি গ্রন্থ, হেমেন্দ্রকুমার রায়ের ‘গিরিশচন্দ্র ও অমৃতলাল’, হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষের ‘গিরিশচন্দ্রের নাট্য-কীর্তি’, স্বয়ং গিরিশচন্দ্র রচিত ‘বঙ্গীয় নাট্যশালায় নট-চূড়ামণি স্বর্গীয় অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফী’। গিরিশচন্দ্রের ১৭৫ জন্মবর্ষ উপলক্ষে এই গ্রন্থাদির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ১২ এপ্রিল গোলপার্কে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার-এ। মিশন ও সূত্রধর-এর সম্মিলিত উদ্যোগে সে দিন দুপুর ৩টে থেকে ৭টা দুই পর্বে আলোচনা সভা: ‘স্মরণ-মননে গিরিশচন্দ্র’, বক্তা: স্বামী শাস্ত্রজ্ঞানন্দ, পবিত্র সরকার, প্রদীপকুমার ঘোষ ও সর্বানন্দ চৌধুরী। স্বাগত ভাষণে সম্পাদক স্বামী সুপর্ণানন্দ।

বাংলার গান

‘আমি বাংলায় গান গাই...’ প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের এই গান আজ সারা পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে বাঙালি জাতিসত্তার প্রতীক। এ বার পয়লা বৈশাখ এই গানেরই পঁচিশ বছর। ১৪০০ বঙ্গাব্দের পয়লা বৈশাখ (১৯৯৩-এর ১৪ এপ্রিল) ইন্ডিয়ান কফি হাউস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে, নতুন শতককে বরণ করবার জন্য, কফি হাউসের মধ্যে প্রতুলের গাইবার আমন্ত্রণ ছিল। সে দিনই ছুটির সকালে বাড়িতে বসে অফিসের রিপোর্ট লেখার ফাঁকে গায়ক লিখে ফেলেন একটি গান। তখনও সুরটা বসেনি। তাই কফি হাউসের মূল অনুষ্ঠানে নতুন গানখানি তাঁর গাওয়া হয়ে ওঠেনি। অনুষ্ঠান শেষে আড্ডায় বন্ধুদের শোনালেন নতুন গানটি। ১৯৯৪ সালের মার্চে গাথানি রেকর্ড লেবেল থেকে ‘যেতে হবে’ অ্যালবামে প্রথম রেকর্ড হয়ে বার হল গানটি। সেই বছর চৈত্র সংক্রান্তিতে দূরদর্শনের এক অনুষ্ঠানে প্রথম বার সম্প্রচারিত হল। এর পর পৃথিবী জুড়ে, ধীরে ধীরে কোটি কোটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকল এই গান। দেশ কালের বিভাজন টপকে, গত পঁচিশ বছর ধরে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বাঙালির জাতি পরিচিতির উদার এক অনুভব ঘুরতে থাকল মানুষের কণ্ঠে।

শিশুর অধিকার

প্রতিটি শিশুর সংবিধান সম্মত কিছু অধিকার রয়েছে। বাঁচার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার, বিকাশের অধিকার। অথচ চার পাশে এমন অসংখ্য শিশু আমরা রোজ দেখি যারা বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত। মুক্তি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার এই অতি প্রাসঙ্গিক বিষয়টি নিয়েই একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ১০ এপ্রিল ৫টায় আমেরিকান সেন্টারের লিংকন সভাঘরে। থাকবেন শশী পাঁজা, নন্দনা সেন, অনন্যা চক্রবর্তী, অনিরুদ্ধ দেব, রত্নাবলী রায়, রুচিরা গোস্বামী। আলোচনা পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন রত্নাবলী রায়। শেষে ‘মুক্তি’র আবাসিক ছেলেরা পরিবেশন করবে আলোচ্য বিষয়টির উপরে একটি মূক আলেখ্য।

মগজাস্ত্র

বাজারচলতি যে কোনও সাধারণ জ্ঞানের বই ছোটবেলা থেকে আমাদের শেখায় রোম সাম্রাজ্য যখন পুড়ছে তখন সম্রাট নিরো বেহালা বাজাচ্ছিলেন; আমেরিকা দেশটার নামকরণে লুকিয়ে আছে আমেরিগো ভেসপুচির প্রতি শ্রদ্ধা কিংবা ইলেকট্রিক বাল্‌বের আবিষ্কর্তা টমাস আলভা এডিসন। বর্ষে বর্ষে দলে দলে এই ‘ভুল তথ্য’গুলোই বিশ্বাস করে এসেছে শিক্ষার্থী সমাজ। তা হলে ‘ঠিক তথ্য’ কী? আর সেটা কেনই বা মেনে নেব? এই সব চমকে দেওয়া তথ্য আর তার সপ্রমাণ নেপথ্য কাহিনি নিয়ে আস্ত একটা বই লিখে ফেলেছেন বিজ্ঞানী কৌশিক মজুমদার। পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যায় তাঁর মগজাস্ত্র (বুকফার্ম) উদ্বোধন করবেন কার্টুনশিল্পী অমল চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের আকর্ষণ শিল্পী দেবাশীষ দেব। ‘আনন্দমেলা’র পাতায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস আর দেবাশীষের ছবি একে অন্যের পরিপূরক। ছবি নিয়ে গবেষণাও করেছেন প্রচুর— চল্লিশ বছরের এই অভিজ্ঞতার কথা সচিত্র শোনাবেন তিনি, সেই সঙ্গে অহর্নিশ পত্রিকা শিল্পীর হাতে তুলে দেবে ‘অহর্নিশ সম্মাননা ২০১৮’। মোহিত মৈত্র মঞ্চের এই সভাতেই কমিক্স শিল্পী সুমিত রায় পাবেন নারায়ণ দেবনাথ পুরস্কার, ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায়।

পুনশ্চ

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে শোনা ‘তুমি রবে নীরবে’ গানটির সূত্রে শঙ্খ ঘোষ রবীন্দ্রগানের শব্দবদল বা কোনটি ঠিক পাঠ— তা নিয়ে এক অনতিদীর্ঘ গদ্যে মন্তব্য করেছেন, কবির গানে ও কবিতায় স্বপ্ন ‘দেখা দেয় এক অপূর্ণতার বেদনাবোধ নিয়ে।’ নতুন এই নিবন্ধটি প্রকাশ পেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তনী সংসদের বার্ষিক সংকলন ‘পুনশ্চ বাংলা পত্রিকা’র প্রথম সংখ্যায় (পরি: দে’জ)। সম্পাদক পিনাকেশ সরকার লিখেছেন নিজের শিক্ষকজীবনের স্মৃতি ও শঙ্খ ঘোষ সম্পর্কে: ‘এই মানুষটির মধ্য দিয়েই আবিষ্কার করেছি শুধু রবীন্দ্রসৃষ্টিকে নয়, তাঁর জীবনদর্শনকেও।’ আর পবিত্র সরকারের আত্মস্মৃতি আশৈশবের সঙ্গী ‘জ্বর’ নিয়ে। প্রাক্তন শিক্ষকদের সঙ্গে লিখেছেন বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরাও, যাঁদের অনেকেই আজ শিক্ষকতায় মগ্ন। কবিতা-গল্প-প্রবন্ধ-স্মৃতিকথায় ভরপুর এ পত্রের উন্মোচন করলেন শঙ্খবাবু, শেষ বসন্তের এক বিকেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে বুদ্ধদেব বসু প্রেক্ষাগৃহে। এর পর সুভাষ মুখোপাধ্যায় ও শম্ভু মিত্রের শতবর্ষ উপলক্ষে তাঁদের নিয়ে বললেন পিনাকেশবাবু ও পবিত্রবাবু।

তাসের দেশ

প্রহসন ‘তাসের দেশ’ প্রকাশিত হয় ১৩৪০ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে। ওই মাসেরই শেষের দিকে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিতে ‘তাসের দেশ’ প্রথম মঞ্চায়িত হয় ম্যাডান থিয়েটারে। তিন দিনে তিনটে শো হয়েছিল। ১৩৪৫ বঙ্গাব্দে ‘তাসের দেশ’-এর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। সেটি উৎসর্গীকৃত হয়েছিল সুভাষচন্দ্র বসুর উদ্দেশে। এতে প্রথম দৃশ্যটি পরিবর্ধিত এবং সংযোজিত হল তৃতীয় দৃশ্য। এটাই পরিবেশিত হয়েছে বা হচ্ছে বহু বার। এ বার এই নাটকই প্রয়াত প্রসাদ সেন প্রতিষ্ঠিত ‘সোহিনী’-র প্রযোজনায় সিএলটি অবন মহলে ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় অগ্নিমিত্র ঘোষের নির্দেশনায় দেখা যাবে। পূর্ণিমা ঘোষের নৃত্যভাবনাকে রূপ দেবেন শর্মিলা রায় এবং সঙ্গীতে সত্যকাম সেন।

অভিনব

অদূরে গঙ্গা। খোলা চত্বর। চার দিকে গাছগাছালি, পুরনো মন্দির, থিকথিক করছে দর্শক-শ্রোতা। এর মাঝখানেই চলছে ‘এ-পাড়া ও-পাড়া থিয়েটার’ শীর্ষক নাট্যোৎসব! এই অভিনব ব্যাপারটাই ‘বেলঘরিয়া হাতেখড়ি’ নাট্যদলের উদ্যোগে এ বার ঘটতে চলেছে খড়দহ আর সোদপুরের মাঝখানে কাঠিয়া বাবার আশ্রম সংলগ্ন পাইনদের ঠাকুরবাড়িতে (সঙ্গের ছবি)। কিন্তু হঠাৎ এ রকম ‘স্পেস ওরিয়েন্টেড’ থিয়েটারের আয়োজন কেন? উদ্যোক্তা দেবাশিস ঘোষ জানালেন, ‘খরচ কমিয়ে স্মার্ট থিয়েটার করার চেষ্টা থেকেই এই ভাবনা।’ ১৩, ১৪ ও ১৫ এপ্রিল— তিন দিনের এই নাট্যোৎসবে কুড়িটি দল যোগ দিচ্ছে। এর মধ্যে যেমন দেখা যাবে এএলটি, সংসৃতি, নান্দীকার, অশোকনগর নাট্যমুখের প্রযোজনা, তেমনই দেখা যাবে, পুষ্পক, জোনাকি, খড়দহ থিয়েটার জোন, ডাকঘরের মতো নাট্যদলের প্রযোজনাও।

মঙ্গল শোভাযাত্রা

শুরুটা হয়েছিল ঢাকায়। বিশ শতকের আশির দশকের শেষ দিকে। রাষ্ট্রপতি এরশাদ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করায় আহত হয়েছিলেন মুক্তবুদ্ধির মানুষেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ছাত্র-শিক্ষক-প্রাক্তনীরা ঠিক করলেন বাংলার লোকজীবনের শিল্পকর্মের উপস্থাপনার মাধ্যমে তাঁরা বাংলার সমন্বয়ী রূপ তুলে ধরবেন। সামনে উদাহরণ ছিল যশোর চারুপীঠের ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। শুরু হল ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’, পয়লা বৈশাখের অন্যতম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে বৃহত্তম সাংস্কৃতিক গণ-উৎসবের চেহারা নিয়েছে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’, পেয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদাও। কলকাতার যাদবপুরে গত বছর থেকে যে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র সূচনা হয়েছে, এ বার তার দ্বিতীয় বর্ষ। বহরমপুর, শ্রীরামপুর, পাথরপ্রতিমাতেও এ বার ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ হবে। কলকাতায় গাঙ্গুলিবাগান থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শোভাযাত্রা হবে ১৫ এপ্রিল সকাল ৮টায়। সুকান্ত সেতু থেকে আর একটি শোভাযাত্রা এর সঙ্গে যোগ দেবে। তার আগে সারা রাত রাস্তা জুড়ে আলপনা দেওয়া হবে। থাকবে বাংলার লোকশিল্পের নানা উপকরণ। আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন পরিষদ, উদ্যোগে সামিল আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।

কত্থক থেকেই

কত্থক নাচ আর থিয়েটার নিয়েই তিনি কাজ করেন। কত্থক থেকেই দরজা খোলে নাট্যজগতের। দেবেশ মজুমদার, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকের সঙ্গে কাজ সমৃদ্ধ করেছে তাঁকে। মালবিকা মিত্রের শিষ্যা কত্থক নৃত্যশিল্পী আলোকপর্ণা গুহ দেশবিদেশে একক নৃত্যের অনুষ্ঠান ও নিজের দল ‘পুষ্পক’ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন গত তেইশ বছর ধরে। এ বার তাঁর আয়োজনেই সম্প্রতি রবীন্দ্র সদনে হয়ে গেল ‘কত্থক কথা— এহি কেশব’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। যা মন্দির প্রাঙ্গণের শিকড় থেকে ওয়াজিদ আলি শাহ হয়ে কত্থকের বর্তমান সময়কে ছোঁয়ার এক চেষ্টা। নাট্যভাষার পরিধির মধ্যে কত্থকের স্বতঃস্ফূর্ত বিচরণই আলোকপর্ণার এ বারের নতুন কাজটির মূল ভাবনা।

অভিনেতা

অন্য নাট্যগোষ্ঠীর প্রযোজনায় স্মৃতিধার্য অভিনয় করেছেন আগেও— ‘কন্যাদান’, তবে তাতে নির্দেশক ছিলেন নিজে। আর নিজ-নাট্যগোষ্ঠীতে কিছু কাল আগে ‘সিনেমার মতো’। এ ভাবেই তাঁর বহুবিধ অভিনয় প্রতি মুহূর্তে জীবন্ত করে রাখে ‘অভিনেতা’ ব্রাত্য বসুকে। তাঁর আরও তিনটি পরিচিতি: নাটককার, নির্দেশক, সংগঠক। ‘এই চারটে বিষয় একদম মিলেমিশে রয়েছে এবং মূল তাড়নাটা হচ্ছে থিয়েটার করা।’ কথাগুলি উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় ও শম্পা ভট্টাচার্যকে বলেছেন ব্রাত্য এক সাক্ষাৎকারে, সেটি প্রকাশিত হয়েছে ‘অসময়ের নাট্যভাবনা’ পত্রিকায় (সম্পা: রঙ্গন দত্তগুপ্ত), তাতে এ বারের বিষয়: ‘মঞ্চের মুখ ব্রাত্য’। বহু কাল পরে দেবাশিস দত্ত ও দেবাশিস রায়ের নির্দেশনায় দুটি নাটকে অভিনয় করছেন ব্রাত্য, ‘১৭ জুলাই’ (থিয়েলাভার্স) ও ‘মূল্য’ (বালিগঞ্জ ব্রাত্যজন), গত সেপ্টেম্বর থেকে। সিনেমায় অবশ্য তা বেশ কিছু কাল ধরেই করে আসছেন, কিন্তু থিয়েটারে কমবয়সিদের পরিচালনায় শুধু অভিনয় করা শুরু করেছেন হালে। ‘এতে মন খুলে অভিনয়টা করা যাচ্ছে। নাটকে অন্য যেগুলি আমি করি সেগুলির কোনও কিছু নিয়েই ভাবতে হচ্ছে না তো, ফলে সেটা একটা আলাদা ফুর্তি দিচ্ছে আমায়, মদত জোগাচ্ছে আমার অভিনয়ে।’ ব্রাত্য মনে করেন, এমন এক নিস্পৃহতায় পৌঁছনো যায় যে ‘দূরে দাঁড়িয়ে নিজেও যেন নিজের অভিনয়টা দেখতে পাচ্ছি, অ্যাক্টর-সেল্ফটা বড় হয়ে ওঠে।’ ১৬ এপ্রিল রবীন্দ্রসদনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ‘১৭ জুলাই’-এর অভিনয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha Swadeshi Art Bratya Basu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE