জনগণের শিল্পী কাকে বলে তা নিয়ে বিস্তর তর্ক হয়েছে। বেলেঘাটার ঘরে, কফি হাউসে, মাঠে-ময়দানে, দেবুদাকে যাঁরা দেখেছেন তাঁদের কাছে এসব তর্ক অর্থহীন। তিনি ছিলেন জনগণের শিল্পীর মূর্ত রূপ। সুকান্তের কবিতার বইয়ের প্রচ্ছদগুলি তাঁকে সাধারণ বাঙালির ঘরে-ঘরে পৌঁছে দিয়েছিল। জীবনের সুখস্বাচ্ছন্দ্য, ঘরের আরাম, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, সব তুচ্ছ করেছিলেন তিনি মানুষের সংগ্রামের জন্য। অথচ, শিল্পীর সংবেদনশীলতাকে কোথাও সংকুচিত করেননি এতটুকু। দেশজ নানা আঙ্গিকের সঙ্গে আন্তর্জাতিক শৈলী মিলিয়ে গড়ে নিয়েছিলেন একান্ত ‘দৈব’ এক চিত্রভাষা। চল্লিশের দশকে মার্কসবাদী ঘরানার যে-একঝাঁক শিল্পী উঠে এসেছিলেন, দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, সবার ‘দেবুদা’ (১৯১৮-১৯৯১) ছিলেন তাঁদের অগ্রগণ্য। ছেচল্লিশের দাঙ্গায় জীবন হাতে করে রাস্তায় নেমেছিলেন। তুলি আর বন্দুক একই সঙ্গে ব্যবহার করার কথাও ভেবেছেন। চিন্তামণি কর এক বার বলেছিলেন, দেবু বড় বিপজ্জনক জীবন যাপন করে। সেই আগুন-তুলির চালকের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বই-চিত্র কালচারাল সোসাইটি একটি প্রদর্শনী-তথা-আলোচনাসভার আয়োজন করেছে কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের তিন তলায় বই-চিত্র সভাঘরে। ৩ এপ্রিল বিকেল পাঁচটায় অনুষ্ঠানের সূচনায় মনসিজ মজুমদার ও মৃণাল ঘোষ নিবেদন করবেন শ্রদ্ধার্ঘ্য। হাজির থাকবেন হিরণ মিত্র। ৩-১৩ এপ্রিল প্রতিদিন ৩-৮টা খোলা থাকবে দেবুদার আঁকা ছবির প্রদর্শনী, যেখানে দেখা যাবে তাঁর আঁকা মূল ছবিও। প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রকাশিত হবে তাঁর একদা-বিখ্যাত অ্যালবাম ‘ব্যালাড অব দ্য টিলার’, যাতে রয়েছে পঁচিশটি অমূল্য ছবি, যার ভূমিকা লিখেছেন মৃণাল ঘোষ। দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে বাঙালির ঋণ শোধ হওয়ার নয়; কেবল ঋণের স্বীকৃতিটুকু দেওয়ার জন্য এই আয়োজন।
শহরের ঐতিহ্য
একে সংস্কারের অভাবে জীর্ণ, সংস্কারে আর্থিক অক্ষমতা, আবার কোথাও লোকবলের অভাব, তার উপর প্রোমোটারের জোরালো থাবায় শহর থেকে ক্রমাগত মুছে যাচ্ছে ঐতিহ্যের ইমারত। ঐতিহ্য সচেতনতা বাড়াতেই গড়ে উঠল ‘ক্যালকাটা হেরিটেজ কালেকটিভ’, উদ্দেশ্য ঐতিহ্যকে সম্মান সংস্কার উদ্ধার করায় ব্রতীর ভূমিকা পালন। প্রথম ধাপে ছিল ‘ইমামি ফাউন্ডেশন’-এর নেওয়া ৪৮বি মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটের মল্লিক বাড়িতে গ্যারাজমুক্ত পরিবেশে কৌন্তেয় সিংহের প্রায় হাজার দিনের পরিশ্রমে তোলা কলকাতাসহ বিশ্বের পঞ্চান্নটি আলোকচিত্র নিয়ে তিন দিনের প্রদর্শনীর আয়োজন। সদস্যরা সমবেত হলেন আংশিক সংস্কৃত বাড়ির অন্দরে। সংস্থার তরফে পারমিতা সাহা জানালেন, শহরের ঐতিহ্য রক্ষায় যে কোনও সহযোগিতার হাত বাড়ালেই তা হবে সার্থক পদক্ষেপ। সঙ্গে প্রদর্শনীর একটি ছবি।
ছবির নেশা
কলকাতার বদলে যাওয়া মুখ ছুঁয়ে যায় তাঁকে। ছেলেবেলা থেকেই বাউন্ডুলের মতো কলকাতার অলিগলিতে ঘুরে বেড়ানো তাঁর নেশা। সেই নেশা বেলাগাম হয় সরকারি আর্ট কলেজে পড়ার দিনগুলোতে। এতটাই, যে থিতু হওয়ার বদলে মুম্বইয়ের চাকরি ছেড়ে ফিরে এসেছেন। তার পর গঙ্গার পুবের এই শহরের পরিবর্তন নানা রূপে ধরা দেয় তাঁর ক্যামেরায়। পুরনো ডাকবাক্স থেকে হাওড়া সেতু, চিৎপুরের ব্যান্ড থেকে ভিস্তিওয়ালা। পুরনো বাড়ি ভেঙে বহুতলের মাথা তোলা। বি়জয় চৌধুরীর ক্যামেরার চোখে অন্য রূপে আমাদের শহর। ভারতের সঙ্গেই বিদেশের নানা প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন। আদতে কোন্নগরের বাসিন্দা। পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা পুরস্কার। এ বার ক্যামেরার সঙ্গে কলম তাঁর সঙ্গী। শহরের চিনেপাড়ার রোজ সকালের বিখ্যাত ‘ব্রেকফাস্ট মার্কেট’ নিয়ে তৈরি করেছেন এক চমৎকার বর্ষপঞ্জি, বারো মাসের সাদাকালো বারোটি ছবিতে, লিখেছেন একটি ছোট্ট ভূমিকাও। সঙ্গে তাঁরই তোলা কলকাতার একটি দৃশ্য।
পুতুল দিবস
২১ মার্চ পাপেট মঞ্চ এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নৃত্য নাটক সংগীত ও দৃশ্যকলা আকাদেমি-র উদ্যোগে প্রথমবার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে উদ্যাপিত হল বিশ্ব পুতুল দিবস। কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের পুতুল নাট্যকর্মীরা মিলে তৈরি করেছেন পাপেট মঞ্চ। ঠাকুরবাড়ির দ্বারকানাথ মঞ্চে পুতুল নাটক মঞ্চস্থ করল মেদিনীপুর, নদিয়া, সুন্দরবন, ডায়মন্ড হারবার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকে আসা পুতুল নাট্যের দলগুলি। বেণি পুতুল, ডাং-এর পুতুল, তারের পুতুল, ছায়াপুতুল, দস্তানা পুতুল ইত্যাদি প্রথাগত পুতুল নাট্যের পাশাপাশি ছিল সমসাময়িক পুতুল নাট্য দল, ছিল ভেনট্রিলোকুইস্ট। হাস্যরস, সম্পর্কের গল্প, সমাজ, জিমনাস্টিক, বিজ্ঞান— উঠে আসে পুতুল নাটকের মধ্য দিয়ে। প্রদীপ জ্বালিয়ে সূচনা করেন উপস্থিত পুতুলশিল্পীদের মধ্যে প্রবীণতম শিল্পী জগবন্ধু সিংহ, আকাদেমির সচিব হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। পুতুল নাট্য শুধু মাত্র বিনোদন বা শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য নয়, পুতুল নাট্য একটা দৃশ্যমান ভাষা, একটা উপযুক্ত মাধ্যম— যা সমাজের ছবিটাকেই তুলে ধরে। এটাই ছিল বিশ্ব পুতুল দিবসে উদ্যোক্তাদের বক্তব্য।
জীবনের মোহনায়
বোদল্যের বলেছিলেন, সাহিত্যের অন্যতম প্রধান শত্রু বিশ্ববিদ্যালয়। কয়েক বছর ধরেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ পঠনপাঠনের যান্ত্রিক ফাঁস খুলে, এবং অকারণ ঔপনিবেশিক ঔদ্ধত্যের দিকটিকে অতিক্রম করে ‘জীবনের প্রশস্ত মোহনায়’ পৌঁছতে চেয়েছে। বিভাগে এসেছেন নোবেলজয়ী ঔপন্যাসিক ল্য ক্লেজিও, আঁদ্রে বেতেই, মৃণাল সেন, অম্লান দত্ত, শঙ্খ ঘোষ, শিবনারায়ণ রায়, নাসিরুদ্দিন শাহ্, তপন রায়চৌধুরী, দীপেশ চক্রবর্তী প্রমুখ। এসেছে অগ্রগণ্য ফরাসি সাহিত্যিকদের প্রতিনিধিদল। এসেছেন হাইতির কবি ও ঔপন্যাসিক জেমস নোয়েল, মাকেনজি অরসেল। ছাত্রদের রচনা থেকে সম্প্রতি মুদ্রিত হয়েছে কানেক্টিং টেক্সট্স: লিটারেচার, থিয়েটার অ্যান্ড সিনেমা-র মতো গ্রন্থ। বিভাগীয় ‘ডিপার্টমেন্টাল রিসার্চ সাপোর্ট’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে স্টেজ অ্যান্ড স্ক্রিন: রেপ্রেজেন্টেশন্স অ্যান্ড সেলফ-ডিসকভারিজ। সম্প্রতি ১৪-১৬ মার্চ এই ‘ডিআরএস’ কর্মসূচির শেষ সম্মেলনে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হল চিত্রগ্রাহক নিমাই ঘোষকে। ছাত্রদের ভাবনাচিন্তার উপস্থাপন তো ছিলই। ছিলেন বিশিষ্ট জন। দুটি কথোপকথন ছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও মমতা শংকরের সঙ্গে।
দুই নদী
মাঝে সহস্র যোজন দূরত্ব, কিন্তু হলে কী হবে! দুই নদীতে কথোপকথন চলে নিভৃতে, অন্তরালে। আর সেই কথার ফাঁকেই উঠে আসে দীর্ঘশ্বাস, দূষণ-অবহেলার কথা। বাংলার গঙ্গা আর স্কটল্যান্ডের টে নদীর এই অন্তরঙ্গ আলাপের কাহিনি লিখেছেন প্রবাসী অধ্যাপক বাসবী ফ্রেজার, ওঁর দীর্ঘ কবিতার বই ফ্রম দ্য গঙ্গা টু দ্য টে-তে। এর উপর ভিত্তি করেই অমলেশ চৌধুরীর সহায়তায় রিদমোজেইক নির্মাণ করেছে একটি নৃত্যালেখ্য। এর মধ্যে দুই নদীকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস, পরম্পরা ইত্যাদি প্রকাশিত হয়েছে। দ্য বেঙ্গল-এর আয়োজনে, ব্রিটিশ কাউন্সিলের উদ্যোগে আইসিসিআর-এ ৩১ মার্চ সন্ধ্যা ছ’টায় মঞ্চস্থ হবে এই নৃত্যনাট্যটি। ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কের সত্তর বছর উদ্যাপনের অঙ্গ হিসাবে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হচ্ছে।
গোপালের দুর্গতি
হাটখোলার প্রদীপ কর্মকার দেড় বছরের ছেলে প্রিয়াঙ্ককে নিয়ে সাইকেলে বাগবাজার-কুমোরটুলি-বেনিয়াটোলা-নিমতলা ঘাট যেখানেই গিয়েছেন, ছেলের আবদারে থামতে হয়েছে পুজো শেষে গঙ্গাপাড়ে অবহেলায় পড়ে থাকা গোপালসহ অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তির কাছে। প্রিয়াঙ্ক গোপালের হাতে হাত, আর হাতের আঙুল ধরে টানছিল। তা হলে কি বাড়ি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোর! ফি বছর দোলপূর্ণিমার দিন কুমোরটুলিসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসী আদরে আহ্লাদে পুজো করেন মাটির সুদর্শন গোপালকে। কুমোরটুলির শিল্পীদের বানানো দশ ইঞ্চি থেকে এগারো ফুটের প্রায় শ’খানেক গোপাল পরদিন থেকেই স্থান পায় গঙ্গাতীরে। উন্মুক্ত জায়গায় পাখির বিষ্ঠা ও সারমেয় বর্জ্যসহ রোদ জল ঝড়ে মাটির মূর্তি কদর্য রূপ নেয়। এমন দৃশ্যদূষণ এড়ানো কি সত্যিই খুবই কঠিন!
কুরঙ্গনয়নী
তৎকালীন বর্মার সৈন্য যখন মণিপুর আক্রমণ করে, তখন অসমের রাজা স্বর্গদেউ রাজেশ্বর সিংহ মণিপুরের রাজা জয় সিংহকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন— একসঙ্গে ‘লাকাটা রণ’-এর যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। বর্মিদের হটিয়ে রাজা জয় সিংহ মণিপুরের রাজসিংহাসনে ফিরে আসেন। কৃতজ্ঞতাবশত রাজা জয় সিংহ তাঁর কন্যার সঙ্গে অসমের রাজার বিয়ে দেন— এ ভাবেই এগিয়েছে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে একটি সম্পর্কের গল্পে গাঁথা ‘মণিপুর ডান্স অ্যাকাডেমি’র (ইম্ফল) নতুন নৃত্যনাট্য ‘কুরঙ্গনয়নী’। এই নৃত্যনাট্যই এ বার দেবযানী চলিহার প্রতিষ্ঠান ‘মৈতৈ জগোই’-এর উদ্যোগে দেখা যাবে ২৮ মার্চ, সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় আইসিসিআর-এ। কোরিয়োগ্রাফি করেছেন ‘কেইবুল লামজাউ’, ‘লেই লাংবা’,‘অভিসারিকা’ খ্যাত সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত টি এইচ চাওতম্বি সিংহ, আর স্ক্রিপ্ট মণিপুরী নৃত্যগুরু দেবযানী চলিহার।
স্বতন্ত্র মনন
‘রামমোহন, বঙ্কিম, বিদ্যাসাগর এঁরা সকলেই ইংরেজী ও সংস্কৃত ভাষা যেমন জানতেন তেমনই প্রাচীন ভারতীয় ভাবধারা ও নব্য পাশ্চাত্য ভাবধারার সঙ্গে সুপরিচিত ছিলেন। এঁদের রচিত গ্রন্থাদিতে যে ধারার প্রবর্তন দেখি তাকে সংস্কারপন্থী তথা আধুনিকীকরণের ধারা বলে অভিহিত করা যায়।’— মনস্বী অধ্যাপক প্রদ্যোতকুমার মুখোপাধ্যায়ের এই স্বতন্ত্র মননের মুখোমুখি হবেন কলকাতাবাসী আজ ২৬ মার্চ সন্ধ্যা ছ’টায় গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশনের শিবানন্দ হল-এ। ‘ঊনবিংশ-বিংশ শতকের ভারতীয় আধুনিকতা’ বিষয়ে বলবেন তিনি, গোপীনাথ-প্রবাসজীবন স্মারক বক্তৃতা-য়, উদ্যোক্তা রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের ভূতপূর্ব অধ্যাপক প্রদ্যোতকুমার মুখোপাধ্যায় ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাঁর পাণ্ডিত্য, শিক্ষকতা ও দর্শনচিন্তার জন্যে বন্দিত। আলোচনার সঙ্গে তাঁর ভাবনা গ্রন্থাকারে প্রকাশ পাবে আজ অনুষ্ঠান মঞ্চে: বিংশ শতকে বাঙালির দর্শনচর্চা। এ-বইটির সঙ্গে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সূত্রধর প্রকাশ করবে প্রবাসজীবন চৌধুরীর বই কাব্যের ঔৎকর্ষ।
শিক্ষার সঙ্কট
শিক্ষার সঙ্কট বাংলা বা ইংরেজি মাধ্যমের উপর নির্ভর করে না, সে ভাবে দেখলে বরং ব্যাপারটাই সরলীকৃত হয়ে পড়ে, এই সঙ্কট কেবল পশ্চিমবঙ্গের নয়, সারা ভারতের।— রুশতী সেনের ‘উপেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারক বক্তৃতা-৪’ থেকে এ ধারণাই স্পষ্ট হয়ে আসছিল সে দিন, ১৮ মার্চ সন্ধ্যা ছ’টায় জগদ্বন্ধু ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে ‘শিক্ষার সঙ্কট— কী ভাবে মোকাবিলা করবে বাংলা মাধ্যম?’ এই বিষয়ক স্মারক বক্তৃতাটির আয়োজন করেছিল জগদ্বন্ধু ইনস্টিটিউশন অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন ও উপেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারক উপসমিতি। আসলে শুধু ভাষাই নয়, বিজ্ঞান বা সমাজবিজ্ঞানের যে কোনও বিষয়েই একই সঙ্কট, কারণ প্রতিটি ভাষা বা বিষয়ের যে সংস্কৃতি কিংবা ব্যুৎপত্তি, তা শিখছে না ছাত্রছাত্রীরা... মনে করেন রুশতী, ‘এ জন্যে দায়ী আমরাই। আমাদের উচিত ছিল একজন শিক্ষার্থীর একটি যথার্থ সমাজ-মন তৈরি করে দেওয়া।’
নাটককার
নাটককার-জীবনের পঞ্চাশ বছর পার করেছেন, তাঁর রচিত মৌলিক ও রূপান্তরিত নাটকের সংখ্যাও একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। ৭৪-পেরনো চন্দন সেনের সৃজনক্ষমতাকে বয়স খর্ব করতে তো পারেইনি, বরং তাঁর যৌবনের কলমটি যেন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এই সময়ে। ১৯৬৭-তে দুই বাংলায় জনপ্রিয় একাঙ্ক ‘নিহত সংলাপ’ দিয়ে তাঁর নাটককার-জীবনের সূচনা, সে জনপ্রিয়তা আজও অব্যাহত। মৌলিক নাটকের পাশাপাশি লোরকা, সার্ত্র, ব্রেখট, বেকেট প্রমুখের নাট্য-রূপান্তরেও তিনি সফল এবং সিদ্ধহস্ত। সম্প্রতি নোবেলজয়ী আমেরিকান নাট্যকার ইউজিন ও’নিল-এর পুলিৎজার-প্রাপ্ত আত্মজৈবনিক নাটক ‘লং ডেজ জার্নি ইনটু নাইট’-এর রূপান্তর করলেন তিনি— ‘দীর্ঘ দিন দগ্ধ রাত’। ‘বিষয়ভাবনা-য় ও’নিলের নাটক এখনও দারুণ ভাবে সমকালীন’, মনে করেন চন্দনবাবু। অশোক মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় থিয়েটার ওয়ার্কশপ নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ করবে বিশ্বনাট্য দিবসে, ২৭ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় অ্যাকাডেমিতে। এরই পাশাপাশি অমর মিত্রের উপন্যাস ‘পুনরুত্থান’-এরও নাট্যরূপ দিয়েছেন তিনি। সে নাটকটি মেঘনাদ ভট্টাচার্যের নির্দেশনায় সায়ক নাট্যগোষ্ঠী প্রথম অভিনয় করবে ২৮ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় অ্যাকাডেমিতে। ‘কয়লাখনি অঞ্চলের বেআইনি খাদানকে ঘিরে শ্রমিক-মৃত্যুর যে নারকীয় ঘটনা দশকের পর দশক ধরে আজও অব্যাহত, তার সাহসী আখ্যান অমর মিত্রের প্রতিবেদনে পেয়েছি বলেই একাত্ম হতে পেরেছি’, জানালেন নাটককার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy