Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: প্রাণ পেল নীরস তরুবর

সম্প্রতি সংযোজন হল শান্তিনিকেতন কাচঘরের আদলে যাত্রী প্রতীক্ষালয়, আর ট্রাম ডিপো সংলগ্ন উত্তরের এলাকায় মৃত শিরীষ গাছে শিল্পী দীপ সাহার দারু-ভাস্কর্য।

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৮ ০০:০১
Share: Save:

কত দিনের শিরীষ গাছ তা কে জানে। শুকনো নিষ্পত্র হয়েই পড়েছিল কত কাল। নিজের জায়গাতেই রেখে শিল্পী তাকে নতুন জীবন দিলেন। পূর্বতন দ্য ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানি বর্তমানে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন গত বছরেই সিদ্ধান্ত নেয় কুড়িটি টার্মিনাসের সৌন্দর্যায়ন করা হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্মতলা কন্ট্রোল রুম সংলগ্ন এলাকায় ‘স্মরণিকা’ নামক ট্রাম মিউজিয়াম হয়েছিল আগেই। এখন আশপাশের এলাকা সুকুমার রায়ের বই থেকে খুড়োর কল, কুমড়োপটাশ, বকচ্ছপ, হুঁকোমুখো হ্যাংলাসহ নানা চরিত্র, এ-ছাড়া রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণসহ পাঁচ মনীষীর আবক্ষ মূর্তি দিয়ে সাজানো হয়েছে। সম্প্রতি সংযোজন হল শান্তিনিকেতন কাচঘরের আদলে যাত্রী প্রতীক্ষালয়, আর ট্রাম ডিপো সংলগ্ন উত্তরের এলাকায় মৃত শিরীষ গাছে শিল্পী দীপ সাহার দারু-ভাস্কর্য। তৈরি হল ছোট বড় আট জনের দল, প্রাণের স্পন্দন পেল মৃত শিরীষ কাঠামো। প্রায় তিন মাস ধরে এ-কাজে শিল্পীকে সহায়তা করেছেন দশ জন। রোদ জল ঝড় বৃষ্টি সামলে কত শত জনের প্রয়োজনে লাগা গাছটিকে উপড়ে না ফেলে তাকেই শিল্পের স্পর্শে সৌন্দর্যায়নে কাজে লাগালেন শিল্পী। তিলে-তিলে গাছের গুঁড়ি খোদাই হয়ে জন্ম নিল কাঠমানবেরা। এর আগে কৃত্রিম ঘাসের মোড়কে তৈরি পশু পাখি ফুল ফল শহরের সৌন্দর্যায়নে ব্যবহার করেছেন শিল্পী। তবে নন্দন চত্বরের পর শহরে এটি তাঁর দ্বিতীয় শুকনো গাছ কেটে দারু-ভাস্কর্যের নিদর্শন, যার নাম শিল্পী দিয়েছেন ‘ওয়েটিং’। প্রকৃতিবান্ধব যান ট্রামের সঙ্গে এ-যেন নতুন করে সম্পর্ক স্থাপিত হল ‘অপেক্ষমাণ’ পান্থজনের।

অন্য যাপন

অন্তরালে ছিলেন বটে, কিন্তু মননে আদৌ অন্তরালবর্তিনী ছিলেন না লীলা মজুমদার। সমকালের ইতিহাস হয়তো বা আমাদের মনে করিয়েছে, লীলা হলেন নকশালপন্থী নেতা চারু মজুমদারের স্ত্রী। কিন্তু, পাশাপাশি এটাও তো সত্য যে বিপ্লব যতটা বহির্মুখী, ততটা অন্তরালে প্রোথিতও বটে। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন লীলা। প্রয়াত হয়েছেন ১৯৯৫ সালে। তাঁর মৃত্যুর প্রায় তেইশ বছর পরে প্রকাশিত হতে চলেছে লীলাদি: এক অন্য রাজনৈতিক যাপন (সম্পা: মৌসুমী ভৌমিক, ঋত)। লীলাকে একেবারে অন্য ভাবে বিশ্লেষণ ও স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর কাছের মানুষেরা। বইটিতে এই নারীর ভিন্ন পরিচয় ছাড়াও ধরা পড়েছে সে-সময়ের ইতিহাস। আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ৮ মার্চ ত্রিগুণা সেন মেমোরিয়াল হলে। থাকবেন বিনায়ক সেন, শুভেন্দু দাশগুপ্ত, লীলার পুত্র অভিজিৎ মজুমদার প্রমুখ।

আখরের লোকগান

ফাগুনের শেষ বিকালে মাঠে ধামসা মাদলের সঙ্গে নাচের তালে মেতে উঠেছে সাঁওতালি তরুণীদল। সেই ছন্দের দোলা দুলিয়ে দিচ্ছে দর্শক আসনে বসা নাগরিক ললনাদেরও। কোমর বেঁধে তাঁরাও নাচছেন জয়দেব টুডু ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে। একটু আগেই শেষ হয়েছে আলপনা কর্মশালা। ‘আখর’-এর আখড়া এ-ভাবেই জমে উঠেছিল সোনারপুর পি জি গার্ডেনে। সন্ধ্যা নামতেই আসর জমালেন বিহারীলাল মাহাতো তাঁর অনবদ্য ঝুমুর গান দিয়ে। এর পর শ্রীখোল নিয়ে উমারানি দাসী মাতিয়ে দিলেন বাউল গানে। গোলাম ফকির (ছোট) তাঁর ফকিরি গানে কথায় গভীর নির্জনে সাধনার কথাটিই তুলে ধরলেন। শেষে ছিল ‘আখর’-এর নিজস্ব পরিবেশনা বিভিন্ন আঙ্গিকের লোকগান। আখর দলবেঁধে লোকগান করে। জল আনতে, ধান ভানতে, চা-পাতা তুলতে, ছাদ পেটাতে, ঘুম পাড়াতে, কনে সাজাতে মুখে-মুখে চলে আসা মেয়েলি গানগুলোই আখরের গান। সঙ্গের ছবি: মালিনী চক্রবর্তী

বহুমুখী পাঠ

পদ্মিনী বা পদ্মাবত অনেকে। লিখলে, বললে বা ছবি আঁকলেই হল। মালিক মহম্মদ জায়সি থেকে হেমরতনের ‘গোরা বাদল চৌপাই’ হয়ে হাল আমলের সঞ্জয় লীলা ভন্সালী— কত জায়গায় কত ভাবেই যে দেখা দিয়েছেন সেই সুন্দরী! প্রায় চারশো বছর আগে জায়সি তাঁর কবিতায় সেই নারীকে প্রথম তুলে ধরেন। চিতোরের যুদ্ধ বা জহরের আগুন ছাপিয়ে তাঁর সেই কবিতা, তুলসীদাসের ‘রামচরিতমানস’-এর মতো উত্তরপ্রদেশের ঘরে-ঘরে পড়া হত। হিন্দু-মুসলমান, নারী-পুরুষ, দলিত-রাজপুত নির্বিশেষে সেই কাব্য কখনও টুকরো আখ্যানে, কখনও বা কথাপ্রবচন রূপে ব্যবহৃত হয়েছে। টডকে অতিক্রম করে অবনীন্দ্রনাথ ও অনেকেই এই আখ্যানকে নানা পাঠ ও পাঠান্তরে পড়েছেন। সেই বহুমুখী পাঠের রূপান্তর নিয়েই এ-বারের সুলেখা দাশগুপ্ত স্মারক বক্তৃতা। বলবেন গৌতম ভদ্র। আজ বিকেল ৩টেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকানন্দ হলে।

ত্রিপুরা সন্ধ্যা

‘তোমার ওখানে, আগরতলায় আমার ছাত্র শ্রীযুত ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ দেব বর্মন ও শৈলেশ দেব বর্মন থাকেন— তাদের সঙ্গে দেখা করবে এবং মাঝে-মাঝে ছবি আঁকার বিষয়ে তাঁদের instruction নিয়ে আসবে’— শান্তিনিকেতন থেকে নন্দলাল বসু চিঠিতে লিখেছিলেন কিশোর চিদানন্দ গোস্বামীকে। এই অপ্রকাশিত পত্র দিয়েই শুরু হয়েছে ‘ত্রিপুরার জন্য অহর্নিশ’ (সম্পা: শুভাশিস চক্রবর্তী) চতুর্থ সংখ্যাটি। আছে সাক্ষাৎকার, প্রবন্ধ, গল্প, কবিতার আন্তরিক উপস্থাপনে ত্রিপুরার বাংলা সাহিত্যকে পরিচিত করানোর চেষ্টা। চতুর্থ বর্ষের ‘ত্রিপুরা সাহিত্য সন্ধ্যা’য় এই সংখ্যাটি প্রকাশ করবেন দেবেশ রায়। ১০ মার্চ অবনীন্দ্র সভাঘরে, বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। ‘অহর্নিশ সম্মাননা’ দেওয়া হবে অশীতিপর লেখক ও শিল্পী চিদানন্দ গোস্বামীকে, কবিতা ও গল্প পাঠে ত্রিপুরার লেখকেরা। সদ্য প্রয়াত গবেষক রবীন সেনগুপ্তের স্মরণে বক্তৃতার বিষয় ‘পুরাতনী ত্রিপুরা’। বক্তা অমিতাভ দাশশর্মা। বিশেষ অতিথি হিরণ মিত্র ও রামেশ্বর ভট্টাচার্য।

গৌরী স্মরণে

দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদের তিনি ছিলেন কট্টর সমালোচক। লড়াই করেছেন মেয়েদের অধিকারের জন্য, সরব হয়েছেন জাতপাতের বৈষম্য নিয়ে। শেষে প্রাণ দিলেন অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের হাতে। সাংবাদিক-সমাজকর্মী গৌরী লঙ্কেশ স্মরণে ফ্রেন্ডস অব ডেমোক্র্যাসি এবং সেতু প্রকাশনী মার্চ বিকাল চারটেয় রামমোহন লাইব্রেরি হলে আয়োজন করেছে আলোচনা সভা ‘ধর্ম রাষ্ট্রের আস্ফালন’, বক্তা রানা আইয়ুব এবং সুজাত ভদ্র। সভামুখ্য অশোকেন্দু সেনগুপ্ত। রানা আইয়ুব গুজরাত ফাইলস/ অ্যানাটমি অব আ কভার আপ বইটির লেখক, যে বই ইতিমধ্যেই ১৫টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এর সঙ্গে থাকছে সেতু প্রকাশনীর বই প্রকাশ আমি সন্ত্রাসবাদী নই।

সংস্কৃতির সেতু

শেক্সপিয়রের প্রেমের ট্র্যাজেডিতে বাংলার পালাগান মিশলে কী হয়? ইংরেজির সঙ্গে বাংলা, কথকতার সুরে নাচের ছন্দ মিললে? মঞ্চে বহু সংস্কৃতির সেতুবন্ধ তৈরি করেছেন মুকুল আহমেদ ও তাঁর দল ‘মুকুল অ্যান্ড ঘেটো টাইগার্স’— ওদের ‘রোমিয়ো অ্যান্ড জুলিয়েট’ নাটকে। লন্ডনে থিতু মুকুলের দলটির বয়স অল্প, কিন্তু গত সাত বছরে ওঁরা দাপিয়ে করেছেন ফাউস্ট, দেবদাস, জুলিয়াস সিজারসহ খান বারো নাটক। ওদের ওয়েবসাইটে জ্বলজ্বলে তিনটি শব্দ: ‘প্রোটেক্ট, প্রোটেস্ট, প্রোভোক’। গণতন্ত্রের পরিসরে বহুত্বের, প্রতিবাদের স্বর খুঁজতে মঞ্চে নামেন ওঁরা, তুলে ধরেন স্থানীয়, আন্তর্জাতিক, স্বল্প-পরিচিত শিল্পীদের। ৮ মার্চ দিল্লিতে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা আয়োজিত থিয়েটার অলিম্পিকসে আছে ‘রোমিয়ো অ্যান্ড জুলিয়েট’, ১০ মার্চ কলকাতায় শিশির মঞ্চেও।

দর্শকের দরবার

এ এক অন্য নাট্যমেলা। এখানে তথাকথিত কোনও বিশিষ্ট উদ্বোধক নেই। ওদের পৃষ্ঠপোষণায় তেমন কোনও বাণিজ্যিক সংস্থাও নেই। তবু সুখচর পঞ্চমের ‘দর্শকের দরবার’ নানা বাধা কাটিয়ে তেইশ বছরে। এ-বারও ১১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে অনুষ্ঠান, চলবে ২৫ মার্চ পর্যন্ত। ষোলোটি মঞ্চনাটক, দুটি মুক্তনাট্য, দুটি সংগীতসন্ধ্যা নিয়ে উজ্জ্বল মেলা। চলছে প্রদর্শনী (এবং বাদল সরকার), বক্তৃতা, ছোটদের জন্য দেশবিদেশের নাটকের গল্প, ব্যতিক্রমীদের পঞ্চম সম্মান এবং বাংলাদেশের রামেন্দু মজুমদারকে নাট্যজীবন সম্মান। সোদপুর লোকসংস্কৃতি ভবন ও জলসাঘর আর্ট গ্যালারিতে।

দুই কৃষ্ণ

অধ্যাত্মচেতনা তাঁর সৃজনের উৎসভূমি। এই শিল্পচেতনা ও অধ্যাত্মচেতনা শিল্পী সিদ্ধার্থ সেনগুপ্তের মধ্যে জারিত হয়েছে সেই শিশু বয়স থেকেই। এই দুইয়ের আদি উৎস তাঁর মা। সূচিশিল্পের মধ্য দিয়ে নকশিকাঁথায় তিনি ফুটিয়ে তুলতেন বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি। বালক সিদ্ধার্থকে তা মুগ্ধ করত। সিদ্ধার্থকে তাঁর নির্মাণ-কল্প নিয়ে যায় আদি পুরাণকালের দিকে, সে-জন্যই আমরা তাঁর সৃজনে পাই শ্রীকৃষ্ণের বিভিন্ন রূপ। আমরা তাঁর কাছ থেকে ধ্রুপদী ও লৌকিক— এই দুই আবহের কৃষ্ণকেই পেয়েছি। এ-বার তিনি প্রায় ত্রিশটি ছবি নিয়ে ৬ মার্চ থেকে ‘কৃষ্ণায়ন’ শীর্ষক প্রদর্শনী সাজাবেন বিড়লা অ্যাকাডেমিতে। চলবে ১১ মার্চ পর্যন্ত (৩-৮টা)। সঙ্গে তারই একটি ছবি।

সার্ধশতবর্ষ

উত্তর কলকাতার চোরবাগান অঞ্চলে নিজের বাড়িতে ১৮৬৮ সালে প্যারীচরণ সরকার প্রতিষ্ঠা করেন ‘চোরবাগান বালিকা বিদ্যালয়’। পাঠ্যবিষয়: সাহিত্য, ইতিহাস, ভূগোল, হোম সায়েন্স, হিতোপদেশ ইত্যাদি। নিয়মমত পরীক্ষা। যারা পারিবারিক শাসনে স্কুলে আসতে পারত না, মহিলা পরীক্ষক তাদের বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা নিতেন। খেলনা পুতুল এমনকী সোনার অলংকারও থাকত পুরস্কারের তালিকায়। সমাজকর্মী, শিক্ষাবিদ প্যারীচরণের (১৮২৩-১৮৭৫) মৃত্যুর পর স্কুল পরিচালনার ভার নেন তাঁর ভাইপো ভুবনমোহন। এই সময়ই স্কুলের নামকরণ হয় ‘প্যারীচরণ বালিকা বিদ্যালয়’। এ-বার এই শিক্ষায়তনটির সার্ধশতবর্ষ। সম্প্রতি এই উপলক্ষে স্কুল প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠাতার এক আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন হল। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই উৎসব চলবে বছরভর।

মুদ্রা-সংগ্রহ

দেশভাগের আগেই বাংলাদেশ থেকে কোচবিহারে জ্যাঠামশায়ের কাছে চলে এসেছিলেন পাঁচ বছরের মদনমোহন সাহা। পরিণত বয়সে তাঁরই সংগ্রহে প্রাচীন কাল থেকে দু’হাজার সাল পর্যন্ত হরেক মুদ্রা। থাকতেন ভিআইপি জোড়ামন্দিরের কাছে রাজারহাট রোডের সপ্তপর্ণী অ্যাপার্টমেন্টে। ব্যবসায় সাফল্যের পাশাপাশি দেশভ্রমণের সুবাদে সংগ্রহ গড়ে ওঠে। তিরাশি বছর বয়সে তাঁর মৃত্যুর তিন বছর পর ছেলেমেয়েদের উদ্যোগে ‘অ্যাকাডেমি অব ইন্ডিয়ান কয়েন অ্যান্ড হিস্টরি’-র আয়োজনে শহরে প্রথম ব্যক্তিগত মুদ্রার গ্যালারি ‘মদনমোহন সাহা মেমোরিয়াল নিউমিসম্যাটিক গ্যালারি’ হল, যা ফি রবিবার খোলা থাকবে। আও নাগাদের ধাতুমুদ্রা থেকে সুলতানি, মুঘল, ব্রিটিশ সরকার থেকে স্বাধীন ভারতের মুদ্রা দেখা যাবে গ্যালারিতে। উদ্বোধনে ছিলেন প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামলকুমার সেন, গৌতম সেনগুপ্ত, শঙ্কর কুমার বসু প্রমুখ।

বিরল সুযোগ

সর্বনাশ সমুৎপন্ন হলে পণ্ডিতেরা নাকি অর্ধেক ত্যাগ করেন। সুমন ঘোষ বাদ দিতে রাজি হয়েছেন একটি শব্দ, ‘গুজরাত’। নইলে গোটা ছবিটাই জলে যেতে বসেছিল। অমর্ত্য সেনের উপর তৈরি সুমনের তথ্যচিত্র ‘দি আর্গুমেন্টেটিভ ইন্ডিয়ান’ কলকাতা অবশ্য এক বার দেখেছে, তবে নন্দনের সেই শো ছিল আমন্ত্রণমূলক। প্রশ্নোত্তর পর্বে ছিলেন স্বয়ং অমর্ত্য। তখন কেউ ঠাহর করেননি, আটখানা আপত্তিকর শব্দ রয়েছে তাতে। সেন্সর বোর্ডের কর্তারা সেগুলো ধরলেন। বিস্তর কথা চালাচালির পর সাতটি শব্দ রেহাই পেয়েছে। দর্শকরা বাজি রেখে সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করতে পারেন। ‘গুজরাত’ শব্দটি বাদ যাওয়ায় সে-রাজ্যের লোকেরা কতটা স্বস্তি পেলেন, কে জানে। তবে নোবেলজয়ীর কথায় কাঁচি চালানোয় গোটা দেশ অস্বস্তিতে।

তারই মধ্যে আশা জাগাচ্ছে ৯ মার্চ মাল্টিপ্লেক্সে এই তথ্যচিত্রের মুক্তি। বিদেশে বড় প্রেক্ষাগৃহে তথ্যচিত্র দেখানো হয়। এ দেশে সিনে ক্লাবের শো আর ফিল্ম ফেস্টিভাল অধিকাংশ তথ্যচিত্রের গতি, বাণিজ্যিক মুক্তি হাতে গোনা। অমর্ত্য সেন আর কৌশিক বসু, দুই তারকা এই ছবিতে রয়েছেন বলেই হয়তো সুমনের তথ্যচিত্রটি এই বিরল সুযোগ পেল। একান্ত আলাপে অমর্ত্যের কথা শোনার সুযোগ ক’জনেরই বা ভাগ্যে হয়েছে। এ ছবিটি সাধারণের কাছে তারই জানালা খুলে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha Wood Sculpture Tram Depot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE