হাহাকার: যমজ সন্তানকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে মৃত গৌতম পালের স্ত্রী ও বাবা। শুক্রবার, কালীঘাটে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
কথা ছিল যমজ সন্তানের অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানে আনন্দ করার, পরিবর্তে তাঁকে স্বামীর পারলৌকিক কাজের আয়োজন করতে হচ্ছে। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে মিতা পাল জানান, যাঁদের গাফিলতিতে তিনি স্বামীকে হারালেন তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন।
মঙ্গলবার রাতে উ়ডল্যাণ্ডস হাসপাতালে মৃত্যু হয় হাওড়ার সালকিয়ার বাসিন্দা গৌতম পালের। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন মৃতের পরিজনেরা। বুধবার আলিপুর থানায় তাঁরা অভিযোগও দায়ের করেন। এ দিন একরত্তি বাচ্চাদের কোলে নিয়ে মিতাদেবী হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী বা়ড়িতে। গাড়ি থেকে নেমে কোনওরকমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘অনেক লড়াই রয়েছে। দিদিকে পাশে চাই!’’
১৫ জানুয়ারি সোমবার পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন গৌতমবাবু। তাঁকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে পরিবার সিদ্ধান্ত নেয়, আলিপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার। মৃতের পরিজনেরা জানান, সোমবার দুপুরেই তাঁকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৫০ হাজার টাকা জমা দেয় গৌতমবাবুর পরিবার। এর পরে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। মঙ্গলবার বিকেলে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ফের সন্ধ্যায় তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে বলে পরিবারকে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ জানানো হয়, ওই যুবক মারা গিয়েছেন।
এ দিন সকাল সওয়া ন’টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান মিতাদেবী ও তাঁর পরিজনেরা। তাঁরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন। সব অভিযোগ লিখিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে জমাও দিয়েছেন মিতাদেবী। গৌতমবাবুর পরিবার জানায়, মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পরামর্শ দিয়েছেন, স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ দায়ের করার। সেই মতোই সাড়ে এগারোটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে মিতাদেবী ও তাঁর পরিজনেরা স্বাস্থ্য কমিশনে গিয়ে চেয়ারম্যান অসীমকুমার রায়ের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
এ দিনও গৌতমবাবুর পরিবার হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। গৌতমবাবুর বন্ধু অবিনাশকুমার সিংহ জানান, হাসপাতাল মৃত্যুর কারণ জানাতে চাইছিল না। বারবার চিকিৎসার নথি চাইলেও হাসপাতাল দিতে চায়নি। দীর্ঘ অপেক্ষা করার পরে নথি পেয়েছে পরিবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ দিনও অভিযোগ অস্বীকার করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy