Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দণ্ডিতদের আইনি দিশা দেখাচ্ছে আদালত

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্যের কোনও নিম্ন আদালত কাউকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দিলে সেই রায়ের প্রতিলিপি সংশ্লিষ্ট ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি বা ডিএলএসএ-র কাছে পাঠিয়ে দিতে হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শমীক ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৪০
Share: Save:

অপরাধী সাব্যস্ত হলেই সব শেষ নয়। আপিল বা পুনর্বিচারের সুযোগ আছে। তার জন্য উচ্চতর আদালত আছে। এমনকী সেই পথে এগোনোর জন্য আছে সাহায্য করার বন্দোবস্তও।

অথচ অনেক অভিযুক্তেরই তা জানা নেই। এই অসচেতনতা থেকে এবং তার দরুন পুনর্বিচারের সুযোগ হারানোর দুর্ভাগ্য থেকে বাঁচাতে অগ্রণী হল উচ্চতর আদালতই।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্যের কোনও নিম্ন আদালত কাউকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দিলে সেই রায়ের প্রতিলিপি সংশ্লিষ্ট ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি বা ডিএলএসএ-র কাছে পাঠিয়ে দিতে হবে। বিচারককে সেই সঙ্গে এটাও লিখে দিতে হবে যে, দোষী ব্যক্তি আইনি সাহায্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার লিগ্যাল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁকে আইনি সাহায্য দিতে হবে নিখরচায়। বিচারপতি বাগচীর নির্দেশ রাজ্যের সব নিম্ন আদালতের বিচারকদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হাইকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, বিচারপতি বাগচীর পর্যবেক্ষণ, দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিদের অনেকেই জানেন না যে, নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল মামলা দায়ের করা যায়। এমনকী মামলা
চালানোর টাকা না-থাকলে সেই সাহায্যও মেলে লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি থেকে। এটা যে তাঁদের অধিকার, বেশির ভাগ বন্দিরই তা জানা নেই। সেই জন্যই নিম্ন আদালতের বিচারকদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কেউ নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি জেল-কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে উচ্চ আদালতে (হাইকোর্টে) আপিল করতে পারেন ঠিকই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানি শুরুর আগেই দোষী ব্যক্তি শাস্তির পুরো মেয়াদ বা বেশ খানিকটা সময় জেলে কাটিয়ে ফেলেছেন! এতে আপিল মামলার গুরুত্ব হারিয়ে যায়। সাত বছর অথবা তার কম মেয়াদের শাস্তিপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে বলে জানাচ্ছেন শাশ্বতগোপালবাবু।

পিপি জানান, বেশ কয়েক বছরের পুরনো বেশ কিছু আপিল মামলা শুনানির জন্য সম্প্রতি বিচারপতি বাগচীর আদালতে উঠেছিল। সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দোষীরা শাস্তির পুরো মেয়াদ বা তিন-চতুর্থাংশ সময় জেলে কাটিয়ে ফেলেছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে আপিল মামলা অর্থহীন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় নিম্ন আদালতে শাস্তির যাবতীয় রায়ের প্রতিলিপি জেলা লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ এক দিকে আপিল
মামলার অর্থহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা ঠেকাবে। সর্বোপরি অসচেতন এবং আর্থিক দিক থেকে অসমর্থ দণ্ডিতকে পুনর্বিচার এবং তার জন্য আইনি সহযোগিতা পেতে সাহায্য করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Law Crime High Court Law and Order আইন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE