Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আশঙ্কার বাদলা কেটে পুজোর আগে ফুল বাজারে হাসির রোদ

মহালয়ার তর্পণের দিন এগিয়ে আসছে। শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর কাউন্টডাউন। ব্যস্ততা বাড়ছে মল্লিকঘাট ফুলবাজারে। টানা বৃষ্টিতে মাথায় হাত পড়েছিল ফুল ব্যবসায়ী আর চাষিদের। ঝকঝকে রোদ্দুরে এখন ওঁরা আশার আলো দেখছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৫ ১৪:৪৮
Share: Save:

মহালয়ার তর্পণের দিন এগিয়ে আসছে। শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর কাউন্টডাউন। ব্যস্ততা বাড়ছে মল্লিকঘাট ফুলবাজারে। টানা বৃষ্টিতে মাথায় হাত পড়েছিল ফুল ব্যবসায়ী আর চাষিদের। ঝকঝকে রোদ্দুরে এখন ওঁরা আশার আলো দেখছেন। পুজো মানেই ফুল। আর ফুল মানে, এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই ফুলবাজার। এখান থেকেই ফুল ছড়িয়ে পড়ে পাড়ায় পাড়ায়, হেথা নয়, হোথা নয়, অন্য কোথা, অন্য কোনখানে।

কোলাঘাট থেকে মল্লিকঘাটে প্রতিদিন ফুলের পসরা নিয়ে আসেন বছর আটত্রিশের অজয় প্রতিহারি। ওঁর বাগান কোলাঘাট থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে মাগুরিয়া গ্রামে। মল্লিকঘাট বাজারে ফুল নিয়ে আসছেন টানা বাইশ বছর ধরে। বললেন, ‘‘এবার বাগানের অনেকটা অংশ জলে ডুবে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে অনেক ফুল। ঠিক হতে সময় লাগবে।’’ হাওড়ার ঘোরাঘাটা থেকে চার কিলোমিটার দূরের গ্রাম থেকে বাগানের ফুল নিয়ে আসেন শম্ভু সামন্ত। তাঁরও বক্তব্য, এবারের দীর্ঘ বর্ষণে ফুলচাষিদের বেজায় ক্ষতি হয়েছে।

দেউলটির নাচগ্রামে প্রায় আড়াই বিঘা জমির উপর শাসমলদের বাগান। সেখানে জবা, টগর, অপরাজিতা— হরেক ফুলের কয়েকশো গাছ। আলো না ফুটতেই স্ত্রী অর্চনা আর কয়েক জন সহকারীকে নিয়ে বাগান থেকে ফুল তুলতে শুরু করেন অসীম শাসমল। বই ফেলে কখনও কখনও হাত লাগায় দুই মেয়ে। পোঁটলা বেঁধে অসীমবাবু প্রতিদিন সেই ফুল নিয়ে আসেন মল্লিকঘাটে। সন্ধ্যায় ফের দেউলটি।

মল্লিকঘাটের এ রকম দৈনিক আগন্তুকদের মধ্যে আছেন খন্যানের খোকন চট্টোপাধ্যায়, রাজারাম প্রসাদ, শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়রা। এঁদের কেউ কেউ আবার মাধ্যম, মানে চাষিদের কাছ থেকে ফুল কিনে বেচেন মল্লিকঘাটের ব্যাপারিদের কাছে। সকলেই বাজার কেমন হবে, দাম কেমন উঠবে, তা নিয়ে ভাবিত। কারণ, বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই পুজোর মরশুমটাই তো বেশি ফুল বিক্রির সময়।

পাইকারি বাজারে রজনী-র দাম কেজি পিছু ৩৫০, দোপাটি ৬৫, গাঁদার কেজি ৫৫। এক হাজার জবা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা দরে। কোলাঘাট-দেউলটি-হাউর-পাঁশকুড়া থেকে আনা পদ্ম প্রতি একশো বিকোচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। অসীম শাসমল জানালেন, ‘‘পদ্মচাষে মাস তিন সময় লাগে। এবার এমন বৃষ্টি হল, চাষিরা খুব ফাঁপড়ে পড়েছে। এই সব পদ্ম দোকানিরা কোল্ড স্টোরেজে রাখবে পুজোর সময়ে বিক্রির জন্য।’’

এই দোলাচলের মধ্যেই মল্লিকঘাটের ফুল সরবরাহকারী থেকে দোকানি, খদ্দের— সকলেরই শঙ্কা বৃষ্টি নিয়ে। জলে-কাদায় সেক্ষেত্রে একাকার হয়ে যায় গোটা চত্বর। সেক্ষেত্রে কেনা-বেচার দফারফা। এবার তাই আকাশের হাল হকিকৎ খুঁজোর চেষ্টাতেও রত মল্লিকঘাট ফুলবাজার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE