Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মুম্বই গিয়ে ধরা হল প্রতারককে

পুলিশ সূত্রের খবর, ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়ার নামে তিন পুলিশ আধিকারিককে ঠকায় সপ্তম। একটি প্রতারণার পরিমাণ ৩৩ লক্ষ টাকা। অন্য আধিকারিক ২২ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। আরও এক জনের গিয়েছে দু’লক্ষ।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৯
Share: Save:

একেবারে সিনেমার মতো!

ঠিকা শ্রমিক সেজে মুম্বইয়ের বস্তিতে এক রাত, দু’দিন কাটিয়ে প্রতারককে ধরল বাগুইআটি থানার পুলিশ। ধৃত সপ্তম সরকার পুলিশকর্তাদেরও কয়েক লক্ষ টাকা ‘হজম’ করেছিল বলে অভিযোগ।

গত জানুয়ারি থেকে পরপর তিনটি অভিযোগ পেয়ে সপ্তমের খোঁজে নামে পুলিশ। প্রথমে অভিযোগ করেন মনোজ সিংহ নামে এক ব্যক্তি। ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়ার নামে মনোজের কাছ থেকে ৩৪ লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ ওঠে ধৃতের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় অভিযোগকারী প্রমোদ কুমারের কাছ থেকে পেট্রোল পাম্পের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে সপ্তম ২৮ লক্ষ টাকা নেয় বলে অভিযোগ। কৈখালির বাসিন্দা তপন মজুমদারের অভিযোগ, হিডকো-র জমি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সপ্তম তাঁর থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছিল।

পুলিশ সূত্রের খবর, ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়ার নামে তিন পুলিশ আধিকারিককে ঠকায় সপ্তম। একটি প্রতারণার পরিমাণ ৩৩ লক্ষ টাকা। অন্য আধিকারিক ২২ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। আরও এক জনের গিয়েছে দু’লক্ষ। পুলিশের ধারণা, সব মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকার প্রতারণা করেছে সপ্তম। পুলিশ জানায়, আদবকায়দায় নিজেকে ‘প্রভাবশালী’ হিসেবে জাহির করত সপ্তম। গাড়িতে নীল বাতি লাগিয়ে ঘুরত। আদতে বর্ধমানের উখড়ার বাসিন্দা সপ্তম বাগুইআটিতে ঘনঘন ঠিকানা বদলাত। নিজের নামে মোবাইলের সিমও নিত না সে। তার শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসা করে একটি ফোন নম্বর পায় পুলিশ। মোবাইলের টাওয়ার চিহ্নিত করে পুলিশ জানতে পারেন, ধৃত মুম্বইয়ের আম্বোলি অঞ্চলে রয়েছে। সেই মতো চন্দ্রনাথ বটব্যালের নেতৃত্বে পুলিশের পাঁচ সদস্যের একটি দল মুম্বই যায়।

মুম্বই পৌঁছে ঠিকা শ্রমিকের ছদ্মবেশ নেন তদন্তকারীরা। পশ্চিমবঙ্গ থেকে কাজের সন্ধানে এসেছেন, বাঙালি মনিব হলে ভাল হয়— আম্বোলির শ্যামনগর কলোনিতে এটাই প্রচার করেন তাঁরা। হোটেল-মালিক সচিত্র পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে অভিযানের স্বার্থে তা গোপন রাখতে হয়। শেষে মুর্শিদাবাদের এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তদন্তকারীদের। ঘটনাচক্রে তিনি আবার সপ্তমের ঘরে জল সরবরাহ করতেন। ওই যুবকের ঘরেই আশ্রয় নেন তদন্তকারীরা। তাঁর কাছে সপ্তমের আরও তিনটি নম্বর মেলে। এর পরে মোবাইল টাওয়ারের সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার সপ্তমকে ধরা হয়।

ট্রানজিট রিমান্ডে শুক্রবার সপ্তমকে নিয়ে কলকাতা পৌঁছন তদন্তকারীরা। শনিবার তাকে বারাসত আদালত ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ শহরে এক জন স্ত্রী ছাড়াও পঞ্জাবের এক মহিলাকে বিয়ে করেছিল সপ্তম। সেখানে তার বিলাসবহুল বাড়িও রয়েছে। নেপালেও সপ্তমের এক স্ত্রী রয়েছেন। তিনি আবার সপ্তমের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ করেছিলেন। যার জেরে জেল খেটেছিল সপ্তম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arrest forgery Mumbai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE