এই ঘরের ভিতরেই খুন হন শবনম । —নিজস্ব চিত্র।
দুপুরবেলা সাহাপুর ফাঁড়িতে বসে ছিলেন পুলিশকর্মীরা। হঠাৎ সেখানে হাজির এক যুবক। শান্ত, নির্বিকার গলায় জানাল, নিজের স্ত্রীকে একটু আগেই খুন করেছে সে। নিজের বাড়ির ঠিকানাও পুলিশকে জানায় ওই যুবক। এর পরেই তড়িঘড়ি যুবকের বাড়িতে ছোটেন পুলিশকর্মীরা। গিয়ে দেখেন, ঘরের মধ্যে রক্তমাখা একটি হাঁসুয়া পড়ে রয়েছে। পড়শিরা অবশ্য তত ক্ষণে ওই যুবকের স্ত্রীকে নিয়ে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ছুটেছেন।
পুলিশ জানায়, ওই যুবকের নাম শেখ সফিক ওরফে সোনু। স্ত্রী শবনমকে খুনের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শবনমের দেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্ত যুবককে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হোক, এই দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা এ দিন দুপুরে আধ ঘণ্টা টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড অবরোধ করেন। পরে নিউ আলিপুর ও বেহালা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংসারে আর্থিক অনটনের জেরেই এই খুন বলে পুলিশের সন্দেহ।
শবনম
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বছর দশেক আগে সোনুর সঙ্গে শবনমের বিয়ে হয়েছিল। ওই দম্পতির একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। শবনমের বাবা দশরথ রায় পুলিশকে জানান, বিয়ের পরেও সোনু রোজগার করত না। সংসার চলত মা আলা বিবির রোজগারেই। সোনু রোজগার না করায় শবনম প্রায়ই বাপের বাড়ি চলে যেতেন। দশরথও জামাইকে টাকাপয়সা দিয়ে সাহায্য করতেন।
পুলিশ জানিয়েছে, রোজগার নিয়ে গোলমালের জেরেই শবনম তাঁর ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান। দিন চারেক আগে সোনু শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের নিজের বাড়িতে নিয়ে আসে। তার পরেই এ দিনের ঘটনা। খুনের ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরে সোনুর পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। তাঁদের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ দিন সোনুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার পরিবারের কেউ নেই। ঘর ভর্তি চাপ চাপ রক্ত। মেঝের রক্ত গড়িয়ে চলে এসেছে বাইরেও। তবে সোনুর প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, খুনের সময়ে তাঁরা কিছুই টের পাননি। শবনমের ছেলেমেয়েও সে সময়ে স্কুলে ছিল। ঘটনার পরেই সোনুর বাড়িতে যান ফরেন্সিক-বিশেষজ্ঞেরা। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy