রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা। ভেঙে পড়েছে প্রসন্নকুমার ঘাটের একাংশ। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গঙ্গাপাড়ের সৌন্দর্যায়নের পরে অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে বাবুঘাট ও তার আশপাশের এলাকা। তবে নিমতলা ঘাটের কাছে ধরা পড়ল বিপরীত চিত্রটাও। মাসখানেক ধরে ভাঙাচোরা এবং বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে প্রসন্নকুমার ঘাট ও তার সংলগ্ন পার্ক। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গঙ্গার ভাঙনে শুধু ওই ঘাটই নয়, তার লাগোয়া অংশ ও পার্কের পাঁচিল এমন বিপজ্জনক ভাবে ভেঙে পড়েছে যে, ঘাটে স্নান করতে আসা কারও গায়ে তা ভেঙে পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, পুজোর কিছুদিন আগে জোয়ারের জলে ওই পার্কের অংশ ভেঙে পড়লেও এখনও তা সারানোর কোনও উদ্যোগই নেয়নি কলকাতা পুরসভা।
শুধু ওই ঘাট ও লাগোয়া পার্কই নয়, সেখান থেকে নিমতলা ঘাটের দিকে তাকালে গঙ্গার পাড় ধরে চোখে পড়ে ভাঙাচোরা ছবিটাই। গঙ্গার ভাঙনে ছোট ছোট ঘাটগুলির বেহাল দশা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, প্রসন্নকুমার ঘাট লাগোয়া ওই পার্কের ধারে বসার জায়গা ছিল। পাশেই ছিল একটি কুস্তির আখড়া। জোয়ারের জলে ওই বসার জায়গার নীচের মাটি ক্রমশই ভাঙতে থাকে। কয়েক মাস আগেই ফাটল দেখা যায় পার্কের পাঁচিলে। তখনই বাসিন্দারা তা পুরসভাকে জানান। এক বাসিন্দার অভিযোগ, “তখনই মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হলে এ ভাবে পার্কের পাঁচিল ভেঙে পড়ত না।”
পাঁচিল ভেঙে পড়লেও ওই পার্কে লোকজনের আনাগোনা চলছেই। অনেকেই ঘাটে স্নান করে ওই পার্কে গিয়ে ভাঙাচোরা জায়গাতেই বসছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, চলতি বছরই মহালয়ার দিন কয়েক হাজার মানুষ এই ঘাটে ভিড় করেছিলেন। পার্কের পাঁচিল এতটাই বিপজ্জনক ভাবে ভেঙে গিয়েছে যে, যে কোনও সময়ে তা পুরোটা ভেঙে পড়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ফাটল দেখা গিয়েছে ওই ঘাটের সিঁড়ির ধাপেও। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “বড় ঘাটগুলিতে বেশি লোক সমাগম হয় বলে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। কিন্তু ছোট ছোট ঘাটগুলির বেশিরভাগের অবস্থাই বেহাল। অথচ এই ঘাটগুলিতেও সারাদিনে কম ভিড় হয় না। এগুলিরও সৌর্ন্দযায়নের আগে রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন।”
এলাকার কাউন্সিলর সিপিএম-এর অজয় সাহা বলেন, “এ বার পুজোয় প্রচুর লোকের সমাগম হয়ছিল এই ঘাটে। বিশেষ করে মহালয়ার দিন। তখন যে কোনও বিপদ হয়নি এটাই বাঁচোয়া। তবে যে ভাবে পার্ক ও ঘাটটা ভাঙছে কিছু দিন পরে হয়তো কুস্তির আখড়াটাও ভেঙে যাবে। শুধু মুখে নয়, পুরো পরিস্থিতি জানিয়ে পুরসভার মেয়র পারিষদকে চিঠি দিয়েছি পুজোর আগেই। কিন্তু মেরামতির কোনও উদ্যোগই নেয়নি পুরসভা। পরের বৈঠকে বিষয়টি আবার তুলব।” যদিও মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেছেন, “প্রসন্নকুমার ঘাট ও সংলগ্ন পার্কের বেহাল অবস্থার কথা জানি। শীঘ্রই মেরামতি শুরু হবে। মেরামতির পরে পার্কের সৌর্ন্দযায়নও করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy