Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রেসিডেন্সির বন্দিদের জন্য জেলেই নতুন দোকান

জেলের ভিতরে খাবারের দোকান হয়েছে বেশ কিছু কাল আগে। এ বার নতুন দোকান। পেন থেকে জামাকাপড়— সবই মিলবে সেখানে। বন্দিদের জন্য এই ব্যবস্থা করে দিতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ‘মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি’ নামে বহুজাতিক সংস্থা।

অত্রি মিত্র
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৫ ১৫:২২
Share: Save:

জেলের ভিতরে খাবারের দোকান হয়েছে বেশ কিছু কাল আগে। এ বার নতুন দোকান। পেন থেকে জামাকাপড়— সবই মিলবে সেখানে। বন্দিদের জন্য এই ব্যবস্থা করে দিতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ‘মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি’ নামে বহুজাতিক সংস্থা।

দেবীপক্ষের সূচনায়, মহালয়ার দিন ওই দোকান চালু হবে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। নাম ‘আনন্দম’।

দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে প্রথম তৈরি হয়েছিল বন্দিদের জন্য খাবারের দোকান। এর পরে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি থাকার সময়ে প্রভুশঙ্কর অগ্রবাল তৈরি করেছিলেন ভুজিয়া ও খাবারের দোকান। প্রভু জেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন অনেক দিন আগেই। কিন্তু দোকান চলছে রমরমিয়ে। বন্দিরাই স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করে ওই দোকান চালাচ্ছেন। একই ভাবে প্রেসিডেন্সি জেলেও ‘অনুরাগ’ নামে খাবারের ক্যান্টিন চালান বন্দিরা।

কিন্তু দিনের পর দিন জেলের মধ্যে কাটাতে জামাকাপড়, টুথপেস্ট, ব্রাশ থেকে শুরু করে তেল-সাবানের মতো হরেক জিনিসের প্রয়োজন হয় বন্দিদের। সে সব পৌঁছে দিতে বন্দিদের বাড়ির লোকেরা প্রায় প্রতি দিনই জেলের বাইরে লাইন দেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে জেল কর্তৃপক্ষের হাতে তাঁরা তুলে দিয়ে যান মুড়ি, চিড়ে, চানাচুরের মতো শুকনো খাবার কিংবা জামাকাপড়, তেল বা সাবান।

কারা দফতরের কর্তাদের দাবি, নতুন দোকান তৈরি হলে বন্দির বাড়ির লোকেদের আর লাইনে দাঁড়াতে হবে না জেলের বাইরে। তাঁরা বন্দিদের জন্য টাকা জমা দিয়ে যাবেন জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। তা দিয়ে জেলের ভিতরের দোকান থেকেই পছন্দমতো জিনিস কিনতে পারবেন বন্দিরা। তবে দোকানে সেই সব জিনিসই পাওয়া যাবে— যা আইনত বন্দিরা পেতে পারেন।

ওই দোকান চালু হলে জেলের নিরাপত্তাও বাড়বে বলে মনে করছেন কারা দফতরের কর্তাদের একাংশ। কারণ, বন্দিদের জিনিসপত্রের মধ্যেই লুকিয়ে অনেক সময়ে জেলে ভিতরে চলে আসে নানা ধরনের মাদক, সিমকার্ডের মতো নিষিদ্ধ জিনিসপত্র। বাড়ির লোকেরা জিনিসপত্র দেওয়া বন্ধ করলে চোরাপথে জেলের মধ্যে বেআইনি মালপত্র ঢোকাও কমবে বলে ধারণা ওই কর্তাদের।

রাজ্য কারা দফতরের এডিজি অধীর শর্মা বলেন, ‘‘এক-একটি সংশোধনাগারে দুই থেকে আড়াই হাজার বন্দি থাকে। বন্দিদের চাহিদা পূরণে একটি দোকান থাকা প্রয়োজন।’’ তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে প্রথম উদ্যোগী হয়েছিলেন নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়। তিনিই ‘মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি’র সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই সংস্থা জিনিসপত্র সরবরাহ করলে বন্দিরা অনেক কম দামে তা পাবেন।’’ জেল সূত্রের খবর, দোকান চালানোর জন্য মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি বন্দিদের ছ’মাস প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। যদিও বন্দিদের এই প্রকল্প নিয়ে মেট্রোর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, জেলের মধ্যে ওই দোকান তৈরির কাজ প্রায় শেষ। তিনি জানান, দোকানটি চালাবেনও বন্দিরাই। ছ’জনের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে। তাঁরাই চালাবে ওই দোকান। বিক্রির লাভের অংশ জমা হবে বন্দিদের অ্যাকাউন্টে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE