ভোগান্তি: মেট্রো-বিভ্রাটের পরে উপচে পড়েছে যাত্রীদের ভিড়। মঙ্গলবার, ময়দান মেট্রো স্টেশনের বাইরে। ছবি: সুমন বল্লভ।
ইতিহাস গড়ে ফেলল কলকাতা মেট্রো। ছোট-বড় যান্ত্রিক ত্রুটি থেকে সিগন্যালের সমস্যা, এক-এক সময়ে এক-এক রকম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে শহরের এই ‘লাইফলাইন’। তবে মঙ্গলবার যা ঘটল, তা আগে কখনও ঘটেনি। একেবারে লাইনচ্যুত হয়ে গেল মেট্রোর একটি কামরা। এ দিন সন্ধ্যা ন’টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে ময়দান স্টেশনে। তবে মেট্রো সূত্রে জানানো হয়েছে, ট্রেনটি তখন পুরো ফাঁকা ছিল। তাই বড় ধরনের অঘটন এড়ানো গিয়েছে। কিন্তু দিনের ব্যস্ত সময়ে ভিড়ে ঠাসা ট্রেন ঠিক ওই ভাবে লাইনচ্যুত হলে কী ঘটে যেতে পারত, তা ভেবেই শিউরে উঠছেন সাধারণ যাত্রী থেকে মেট্রো কর্মীদের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, মেট্রোর নিরাপত্তা নিয়েই ফের বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল এ দিনের এই ঘটনা।
তবে এ দিন যাত্রীদের ভোগান্তি অবশ্য শুরু হয়েছিল ট্রেন বেলাইন হওয়ারও কয়েক ঘণ্টা আগে। ওই সময়ে শ্যামবাজার স্টেশনে কবি সুভাষমুখী একটি ট্রেন ঢুকতেই তার সামনে ‘ঝাঁপ’ দেন এক যুবক। তাঁকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম উৎপল ভট্টাচার্য (২২)। ট্রেনের নীচে তাঁর মাথা থেঁতলে যায়। আঘাত লাগে শরীরের বিভিন্ন অংশে। এই ঘটনার পরে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য মেট্রো চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নাকাল হতে হয় যাত্রীদের। তবে ছুটির দিন থাকায় বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে যাত্রীদের ভি়ড় তুলনায় কিছু কম ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের বাড়ি কাশীপুরে। তিনি দিনমজুরি করতেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আর্থিক অনটনের জেরে মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন উৎপল।
মেট্রো সূত্রের খবর, এর কয়েক ঘণ্টা পরে ময়দান স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ফাঁকা ট্রেনকে ওয়াই সাইডিং দিয়ে ঘুরিয়ে উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই সেটির একটি বগি বেলাইন হয়ে যায়। মেট্রোর কর্তাদের দাবি, ওয়াই সাইডিং-এর পয়েন্টে ত্রুটি থাকার কারণেই ওই বিপত্তি ঘটে। মেট্রোর কর্তৃপক্ষ বেশি রাতে জানান, লাইনচ্যুত হওয়া ওই বগি সরিয়ে ট্রেন যাওয়ার পথ খালি করতে সারা রাত লেগে যাবে।
আরও পড়ুন: মড়া সেজেই হাতির মুখে প্রাণরক্ষা
মেট্রো সূত্রের খবর, এই দুই ঘটনার মাঝে সন্ধ্যা ৭টা ৫০ নাগাদ সেন্ট্রাল স্টেশনের ওয়াই সাইডিংয়েও একই ধরনের সমস্যা হয়। সেখানেও পয়েন্টে ত্রুটির জন্য ব্যাঘাত ঘটে ট্রেন চলাচলে। মেট্রোর কর্তারা রাতে জানান, কী কারণে, কার গাফিলতিতে ট্রেনের বগি বেলাইন হল, তা জানতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
এ দিন রাতে মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, বুধবার সকালের মধ্যে মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এ দিন বগি বেলাইন হলেও সেন্ট্রাল থেকে দমদম এবং মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত ট্রেন চলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy