Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

লাগাম ধরতে রাস্তায় সিপি, বৈঠকে মেয়র

গড়িয়াহাটমুখী ট্রামলাইনের রাস্তা এবড়োখেবড়ো। মেয়রের বৈঠকে ট্রাম সংস্থার অফিসারকে কাছে পেয়ে অভিযোগ শুনিয়ে দিলেন আট নম্বর বরোর চেয়ারম্যান বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। বাতিস্তম্ভে যে ভাবে তার ঝোলে, তাতে প্রতিমা নিয়ে যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটে বলে অভিযোগ তুললেন তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউত।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:৫০
Share: Save:

এক জনের লক্ষ্য, পুর পরিষেবা, খানাখন্দহীন রাস্তা। অন্য জনের লক্ষ্য, নিরাপত্তা এবং যানজটমুক্ত পুজোর শহর।

দ্বিতীয় জন লক্ষ্যপূরণে নিজে নামলেন পথে। গাড়িতে ঘুরলেন। সওয়ার হলেন মেট্রোয়। অন্য জন পুর ভবনে মেয়র পারিষদ ও পুর কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করলেন। সরকারি পরিবহণ দফতরের কর্তারা ও সিইএসসি-র অফিসারেরাও ছিলেন সেখানে।

প্রথম জন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। দ্বিতীয় জন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার।

গড়িয়াহাটমুখী ট্রামলাইনের রাস্তা এবড়োখেবড়ো। মেয়রের বৈঠকে ট্রাম সংস্থার অফিসারকে কাছে পেয়ে অভিযোগ শুনিয়ে দিলেন আট নম্বর বরোর চেয়ারম্যান বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। বাতিস্তম্ভে যে ভাবে তার ঝোলে, তাতে প্রতিমা নিয়ে যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটে বলে অভিযোগ তুললেন তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউত। সিইএসসি-র কেব্‌ল ফল্ট সারাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির ফলে কেন দর্শনার্থীদের বিপদে পড়তে হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অনিন্দ্য।

পুজোর সময়ে রাস্তা খারাপ থাকলে যাঁদের নাকের জলে-চোখের জলে অবস্থা হয়, সেই পুলিশই শহরের রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলেছে শুক্রবারের বৈঠকে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমার জানান, ই এম বাইপাসের উপরে কালিকাপুর, সিংহবাড়ি এবং মুকুন্দপুর মোড়ে রাস্তার হাল খুবই খারাপ। বুধবারের মধ্যে তা সারানোর প্রতিশ্রুতি দেন ওই রাস্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেএমডিএ-র এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার।

পুরসভার পক্ষে মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বৈঠকের পরে বলেন, শহর সচল রাখতে পুরসভা ছাড়াও একাধিক সংস্থা রয়েছে। সকলকে নিয়েই সমন্বয় বৈঠক করা হয়েছে। কোথাও কোনও গলদ থাকলে ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব কিছু ঠিক করে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিন বাজেকদমতলা ঘাটের প্রসঙ্গও ওঠে বৈঠকে। এ বছর গণেশপুজোর বিসর্জনের সময়ে চক্ররেলের ওভারহেড তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যুর জেরে রেল কর্তৃপক্ষ লাইনের আগে গর্ত খুঁড়ে ঘাটে যাওয়ার পথ আটকে দেন। অতীনবাবু জানান, ওই গর্ত বুজিয়ে রাস্তা করে দেওয়া হবে। কালীপুজোর পরে আবার ওই রাস্তা বন্ধ করে দেবেন রেল কর্তৃপক্ষ।

পুজোয় শহর সচল রাখতে কী কী করা দরকার, বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাতে পথে নেমে পুলিশকর্মীদের সেই নির্দেশ দিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। তাঁর নির্দেশ, যাঁরা ট্র্যাফিকের নিয়ম ভাঙবেন, তাঁদের বুঝিয়ে বলে ভুলটা ধরিয়ে দিতে হবে। সঙ্গে থাকা পুলিশ অফিসারদের সিপি-র পরামর্শ, কোন পুজো কোথায়, কোন মেট্রো স্টেশন কিংবা বাসস্টপ কোন দিকে, তা দর্শনার্থীদের জানাতে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় সাইন বোর্ড লাগাবে পুলিশ।

গত দু’বছর ধরে দেশপ্রিয় পার্কের ভিড়ের চাপে পুজোর দিনগুলিতে বন্ধ করে দিতে হচ্ছে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের যান চলাচল। বৃহস্পতিবার রাতে দেশপ্রিয় পার্কে গিয়ে সেখানকার ট্র্যাফিক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন সিপি। আজ, শনিবার শহরের বিভিন্ন পুজোমণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে যাবেন তিনি।

লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন, যে সমস্ত জায়গায় অতিরিক্ত ভিড় হয়, সেখানে চতুর্থী থেকেই অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হবে। অতিরিক্ত ৩৪৪টি পুলিশ পিকেট করা হচ্ছে শহরে। থাকছে ৪৬টি ওয়াচ টাওয়ার। ৭৪টি জায়গা থেকে চলবে সিসিটিভি-র নজরদারি। শহরের ২৪৯৯টি পুজোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ৩২টি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। ওই সব অঞ্চলের দায়িত্বে থাকছেন ডিসি এবং এসি-রা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Security Sovan Chatterjee Rajeev Kumar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE