Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নিজের বিয়ে রুখে দিল নাবালিকা

পুলিশ ও কলকাতা চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরী যে এলাকার বাসিন্দা, সেখানে কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়াটা নতুন কিছু নয়। ওই কিশোরীর মা-বাবাও সেই পথে হেঁটে এলাকার এক যুবকের সঙ্গে ২৫ জানুয়ারি বিয়ে ঠিক করেছিলেন মেয়ের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি। শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৬
Share: Save:

ট্যাংরার রানি রাসমণি গার্ডেন লেন। মেয়েদের ১৩-১৪ বছর বয়স হলে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এখানে আগেও উঠেছে। সেই এলাকারই বছর চোদ্দোর এক কিশোরী রুখে দাঁড়িয়ে আটকে দিল নিজের বিয়ে। তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এক যুবক এবং স্থানীয় থানার পুলিশ।

পুলিশ ও কলকাতা চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরী যে এলাকার বাসিন্দা, সেখানে কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়াটা নতুন কিছু নয়। ওই কিশোরীর মা-বাবাও সেই পথে হেঁটে এলাকার এক যুবকের সঙ্গে ২৫ জানুয়ারি বিয়ে ঠিক করেছিলেন মেয়ের। কিন্তু কিশোরী সেই বিয়েতে রাজি হয়নি। কী করে বিয়ে বন্ধ করা যায়, সে প্রশ্নই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল তার। কোনও উপায় না পেয়ে শেষমেশ সে দ্বারস্থ হয় ওই এলাকারই বাসিন্দা জয়দেব দাসের। জয়দেববাবু এক মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী।

জয়দেববাবু জানান, এই এলাকায় নাবালিকাদের বিয়ে বন্ধ করা খুব সহজ নয়। তার প্রমাণও রয়েছে ভূরি ভূরি। কলকাতা চাইল্ড লাইনের তরফে প্রায়ই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে নাবালিকাদের বিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে সচেতনতা শিবির আয়োজন করা হয়। কম বয়সে বিয়ে হলে মেয়েদের কী কী অসুবিধা হতে পারে, তা-ও বোঝানো হয়। কিন্তু সেই সচেতনতা পৌঁছয় না সমাজের সর্ব স্তরে। ফলে কম বয়সে লুকিয়ে বিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে আকছার।

কিন্তু ওই কিশোরীর বিয়ের খবর লুকোতে পারেনি পরিবার। জয়দেব জানতে পেরেই মঙ্গলবার সকালে হাজির হন ট্যাংরা থানায়। পুলিশকে সব জানান। এর পরে থানা থেকে ডেকে পাঠানো হয় ওই কিশোরী ও তার পরিবারকে। দুপুর থেকে শুরু হয় পরিবারের লোকজনকে বোঝানো। কিশোরী তার বাবা-মায়ের সামনেই জানায়, সে পড়াশোনা করতে চায়। কিন্তু বাবা-মা শুনছেন না।

কিশোরীর এ কথা শুনে পুলিশও বোঝাতে শুরু করে তার পরিবারকে। পরে পুলিশ ও কলকাতা চাইল্ড লাইন জানায়, ওই নাবালিকার বিয়ে আটকানো সম্ভব হয়েছে। তার বাবা-মা বিষয়টি বুঝেছেন এবং কথা দিয়েছেন, এখন বিয়ে দেবেন না। জয়দেববাবু বলেন, ‘‘বিয়েটা আমি একা আটকাতে পারতাম না। তাই পুলিশের কাছে গিয়েছিলাম। ওঁরা খুব সাহায্য করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE