Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
State news

অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু রোগীর! মার চিকিৎসককে

পুরুষদের ওয়ার্ডে ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালালো রোগীর পরিবার। রোগীদের শয্যা উল্টে দেওয়া হল। ভেঙে ফেলা হল জীবনদায়ী যন্ত্রপাতিও।

চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে ভাঙচুর চালানো হয়েছে এই হাসপাতালে। —ফাইল চিত্র।

চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে ভাঙচুর চালানো হয়েছে এই হাসপাতালে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ২০:২০
Share: Save:

হাসপাতালে পৌঁছনোর পর নিয়ম মেনে ভর্তি করাতে ৩০ মিনিট সময় লেগেছিল। নিয়ম পর্ব সেরে রোগীকে যখন ভর্তি করানো হল, তার কিছু ক্ষণ পরেই তিনি মারা যান।

এর পর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো হল। পুরুষদের ওয়ার্ডে ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালালো রোগীর পরিবার। রোগীদের শয্যা উল্টে দেওয়া হল। ভেঙে ফেলা হল জীবনদায়ী যন্ত্রপাতিও। তাণ্ডবে জখম হলেন কর্মরত এক চিকিৎসকও। সোমবার দুপুরে ভবানীপুরের চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়ার পরই রোগীকে অক্সিজেন দিতে দেরি করে হাসপাতাল। সে কারণেই মৃত্যু হয় গোপাল কয়ালের (৩৩)।

ঠিক কী ঘটেছিল?

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন দুপুর সওয়া দুটো নাগাদ গোপালবাবু নামে এক রোগীকে আনা হয়। টালিগঞ্জের বাসিন্দা গোপাল টালিগঞ্জ-হাজরা রুটের অটো চালাতেন। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত। এই হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তিন মাস আগে মুখে অস্ত্রোপচারও হয়।

আরও পড়ুন: বিজেপির র‌্যালিতে ফের হামলা, অভিযুক্ত তৃণমূল

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মুখের ক্যানসার তাঁর গলায় ছড়িয়ে পড়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর তাই একটি কৃত্রিম শ্বাসনালী লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু, পরিবার তাতে রাজি হয়নি। ফলে, ওই ব্যক্তির শারীরিক পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে। এ দিন যখন তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়, তখন যে চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসা করতেন, তিনি ছিলেন না। পাশাপাশি, সব নিয়ম মেনে ভর্তি করাতেও প্রায় আধ ঘণ্টা সময় লাগে। এর পরেই বিকেল তিনটে নাগাদ তিনি মারা যান। ফলে ওই কৃত্রিম শ্বাসনালী লাগানোরও সময় পাওয়া যায়নি। এর পরেই রোগীর পরিবার চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে ভাঙচুর চালাতে শুরু করেন।

আহত চিকিৎসক

পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতালের ৫ তলায় পুরুষ ওয়ার্ডে জোর জবরদস্তি ঢুকে যান অনেকে। ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে তখন রোগী দেখছিলেন চিকিৎসক পথিক শিট। তাঁকেও মারধর করা হয়। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে ওই হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। ইউএসজি করা হয়েছে।

মৃত ব্যক্তির ভাই সুভাষ কয়ালের অভিযোগ, ইমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়ার পরই যদি রোগীর জন্য অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হত তা হলে এই পরিণতি হত না। হাসপাতাল তা করেনি বলেই তাঁর অভিযোগ।

বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতালের ডিরেক্টর তাপস মাজি। তবে প্রাথমিক খোঁজখবর নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির শারীরিক পরিস্থিতি খুবই খারাপ ছিল। তবে, চিকিৎসার গাফিলতি কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE