—ফাইল চিত্র।
লন্ডনের হিথরো, নিউ ইয়র্কের জেএফকে— বিশ্বের দুই ব্যস্ততম বিমানবন্দরে আগের বিমান যখন রানওয়ের মাটি ছোঁয়, পিছনের বিমান তখন থাকে ৫ কিলোমিটার দূরে।
মুম্বই বিমানবন্দরে এই দূরত্বটা প্রায় ৭ কিলোমিটার। দিল্লিতে ৯ কিলোমিটার। অফিসারদের কথায়, এই দুই বিমানের মাঝের দূরত্ব যত কমিয়ে আনা যাবে, ততই সেই বিমানবন্দরে বেশি বিমান নামা-ওঠা করতে পারবে। কলকাতা বিমানবন্দরে এখন এই দূরত্বটা ১২ কিলোমিটার।
যে সময়ে কোনও বিমানবন্দরে সবচেয়ে বেশি বিমান ওঠানামা করে, তাকে ‘পিক আওয়ার’ বলে। কলকাতার ক্ষেত্রে সকাল ও বিকেলে এক-দেড় ঘণ্টা করে প্রায় তিনটি পিক আওয়ার আছে। সেই সময়েই আরও বিমান নামতে চায় এবং আরও বিমান কলকাতা ছাড়তে চায়। কলকাতা থেকে এই পিক আওয়ারে নতুন উড়ান বা অতিরিক্ত উড়ান চালাতে চেয়ে দিল্লিতে দরবার করে রেখেছে বহু বিমান সংস্থা। কিন্তু ওই সময়ে তাদের ‘স্লট’ দেওয়া যাচ্ছে না।
ওই পিক আওয়ারে শহরের প্রধান রানওয়েতে উড়ান ওঠানামার সংখ্যা বাড়াতে সম্প্রতি দিল্লির বিমানমন্ত্রক থেকে নির্দেশ এসেছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এয়ার ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট (এটিএম)-এর জেনারেল ম্যানেজার বরুণকুমার সরকার জানান, কলকাতায় নামার সময়ে দুই বিমানের মাঝের দূরত্ব কমিয়ে ১০ কিলোমিটার করা যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে। বরুণবাবু বলেন, ‘‘পিক আওয়ারে প্রধান রানওয়েতে এখন ঘণ্টায় ৩০টি বিমান ওঠানামা করে। দুই বিমানের মাঝের দূরত্ব কমে গেলে ৩৫টি বিমান ওঠানামা করতে পারবে।’’ সোমবার এ নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) এবং বিভিন্ন বিমানসংস্থার প্রতিনিধিকে ডাকা হচ্ছে। বরুণবাবুর কথায়, এ ক্ষেত্রে সব থেকে জরুরি পাইলটদের মতামত নেওয়া।
নিয়মিত কলকাতা থেকে বিমান নিয়ে উড়ে বেড়ান ক্যাপ্টেন জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘এতে সময় বাঁচবে। তার চেয়েও বড় কথা, জ্বালানি বাঁচবে। অর্থাৎ, দূষণ কমবে। ফলে অনেক দিক দিয়েই লাভবান হওয়া যাবে।’’
আর এক বেসরকারি বিমান সংস্থার সিনিয়র পাইলটের কথায়, ‘‘শহরে যে দ্বিতীয় রানওয়ে রয়েছে, সেটিও ঠিকমতো ব্যবহার হওয়া উচিত। আমরা অনেক আগেই প্রস্তাব দিয়েছিলাম, একটি রানওয়ে থেকে বিমান টেক-অফ করবে, অন্যটিতে ল্যান্ডিং। তাতে অনেক বেশি বিমান ওঠানামা করতে পারবে। তা এখনও হল না।’’
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এই উদ্যোগের ফলে দ্বিতীয় রানওয়ের ক্ষেত্রে কোনও লাভ হবে না। সেখানে ঘণ্টায় ১৫টির বেশি বিমান ওঠানামা করতে পারবে না। এই সুবিধা দ্বিতীয় রানওয়েতে পেতে গেলে নতুন একটি ট্যাক্সিওয়ে করতে হবে বলে জানান বরুণবাবু। তা না হওয়া পর্যন্ত পিক আওয়ারে শুধু প্রধান রানওয়েই যাতে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy