মণ্ডপের কাজ প্রায় শেষ। একসঙ্গে কাজ করছেন প্রায় ৫০ জন শ্রমিক। শেষ করতে হবে আর দিন দুয়েকের মধ্যে। ভ্যাপসা গরম তো ছিলই। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে মশা আর মাছি।
এত মশা-মাছি এল কোথা থেকে? মণ্ডপের বাইরে দেখা গেল ডাঁই করে পড়ে রয়েছে থার্মোকলের থালা, গ্লাস, বাটি, বাড়ির নিত্যদিনের জঞ্জাল, প্লাস্টিকের বোতল। দুর্গন্ধে সেখানে টেকা দায়। ভনভন করছে মাছি।
তেলেঙ্গাবাগানের এক বাসিন্দার অভিযোগ, পুরসভাকে বার বার এ কথা জানালেও আবর্জনা যেখানে ছিল সেখানেই রয়ে গিয়েছে। উল্টে দিন দিন তার পরিমাণ বাড়ছে। পাশের বহুতলের এক আবাসিকের অনুযোগ, ‘‘মণ্ডপে থেকেই কাজ করছিলেন এমন এক শ্রমিকের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। আমরা সবাই আতঙ্কে রয়েছি।’’
শুধু তেলেঙ্গাবাগানই নয়, কলেজ স্ট্রিটে বর্ণপরিচয়ের শেষ দিকে একটি জুতোর দোকানের উল্টো দিকেও বাড়ছে জঞ্জালের স্তূপ। পথ চলতি মানুষের কথায়, পুজোর মুখেও কিছু সাফাই হয়নি। বাঘা যতীন কবরস্থানের কাছে জমা জঞ্জাল নিয়েও অভিযোগ জানিয়েছেন নবান্নের উপরতলায় কর্মরত এক কর্তা। পুরসভার স্থানীয় অফিসে বার বার বলেও কাজ হচ্ছে না বলে জঞ্জাল দফতরে জানান তিনি।
শহরের বিভিন্ন পাড়ায় জঞ্জাল জমছে সারা দিন ধরে। কোথাও পুরসভা রাতে তা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আবার কোথাও পুরসভার জঞ্জাল সাফাই কর্মীদের দেখা মিলছে না এক নাগাড়ে তিন-চার দিন। সেখানে কার্যত নরককুণ্ডের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। রবিবার রাতে বৃষ্টির পরে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে কোথাও কোথাও দুর্গন্ধে মানুষ বাড়িতে পর্যন্ত টিকতে পারছেন না। তেলেঙ্গাবাগানে প্রায় পাঁচ দিনের জমা জঞ্জালের স্তূপের পাশ দিয়ে নাকে রুমাল চেপে যাতায়াত করেছেন মানুষ। সোমবার রাতে অবশ্য জানানো হয় আজ, মঙ্গলবার জঞ্জাল তুলে নেওয়া হবে।
মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার জানান, বাঘা যতীন, তেলেঙ্গাবাগান, কলেজ স্ট্রিট থেকে অভিযোগ এসেছে। তবে শহর জুড়ে দু’-তিনটে শিফটে জঞ্জাল সরানো হয়। তা হলে কেন জমে থাকছে জঞ্জাল? মেয়র পারিষদের ব্যাখ্যা, পুজোর আগে শহর জুড়ে গাছ কাটা চলছে। মেরামতির কাজও চলছে সমানতালে। কোথাও কাটা গাছের ডাল, কোথাও নির্মাণ সামগ্রীর উপরে জঞ্জাল পড়ছে। তাতে পরিমাণ বেশি দেখাচ্ছে। জঞ্জালের সঙ্গে সে সবও সরিয়ে ফেলতে হচ্ছে পুরকর্মীদের।
তেলেঙ্গাবাগান, বাঘা যতীন, কলেজ স্ট্রিটের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সেখানে নির্মাণ সামগ্রী বা গাছের ডাল নয়, বাড়ির জঞ্জালই পড়ে রয়েছে। পুরসভার এক কর্তা কাউন্সিলরদের আরও সক্রিয় হতে আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, স্থানীয় ভাবে সমস্যার সমাধান হলে পুরভবনে অভিযোগ পৌঁছত না। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, পুজো কমিটিগুলিকেও সজাগ থাকতে হবে। মণ্ডপের বাতিল সামগ্রী জমেও অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। পুরসভায় জঞ্জাল নিয়ে অভিযোগ জানাতে এসে রাজ্যের প্রাক্তন এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক পুজো কর্তার মন্তব্য, ‘‘ক্লাবগুলি তো সরকারের কাছ থেকে টাকা পায়। তাই তাদেরও মানুষের স্বার্থে এলাকা জঞ্জালমুক্ত রাখার দায়িত্ব নিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy