যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ছড়ানো হচ্ছে মশা মারার ধোঁয়া। ছবি:সুদীপ্ত ভৌমিক
মশা মারতে আরও কড়া করতে হবে পুরসভার আইন। এমনটাই মনে করেন খোদ পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। তাঁর মতে, বর্তমানে যে পুর আইন রয়েছে, তা কড়া শাস্তি গ্রহণের পক্ষে অনেকটাই দুর্বল। তাই এর পরিবর্তন দরকার। অতীনবাবু আরও মনে করেন, শহরের যত্রতত্র খালি জমি বেশি দিন পড়ে থাকা বন্ধ করাও দরকার। তা না হলে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সমস্যা থেকেই যাবে। শহরবাসীর স্বাস্থ্য-সুরক্ষায় বিভিন্ন স্থানে পড়ে থাকা জমি নিয়ে সরকার কড়া পদক্ষেপ করুক, এমনটাই মত মেয়র পারিষদের। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট প্রস্তাব রাজ্য সরকারের পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
এ বার শহর জুড়ে ডেঙ্গি নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কলকাতা পুরসভার ১০, ১১ এবং ১২ নম্বর বরো এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বলে পুরসভা সূত্রেরই খবর। যদিও মেয়র পারিষদ অতীনবাবু জানান, এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ৫৬০ জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তা সত্ত্বেও ওই তিনটি বরো এলাকায় ডেঙ্গি নিয়ে চিন্তিত পুর প্রশাসনও। এ বিষয়ে অতীনবাবুর ব্যাখ্যা, ওই সব এলাকায় বহু জমি দীর্ঘ দিন ধরে খালি পড়ে আছে। সেখানে জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। কোথাও নির্মীয়মান বাড়িতে, কোথাও পড়ে থাকা জমিতে জল জমে মশা বংশ বিস্তার করছে। মেয়র পারিষদ জানান, কলকাতা পুর আইনের ৪৯৬ (২) ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি বাড়ি, জমি বা নির্মাণস্থলে মশা জন্মানোর অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে রাখেন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে পুর আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কী সেই ব্যবস্থা?
আইনের ওই ধারা উদ্ধৃত করে অতীনবাবু জানান, কমপক্ষে ৫০ টাকা থেকে সর্বাধিক ৫ হাজার পর্যন্ত জরিমানা করার অধিকার দেওয়া হয়েছে মিউনিসিপ্যাল কোর্টকে। যা অত্যন্ত কম। ফলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পথ বন্ধ। জরিমানার পরিমাণ আরও বাড়ালে সুফল মিলবে বলেই মেয়র পারিষদের বিশ্বাস। এ ব্যাপারে পুরসভার আইন দফতরে নির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠাচ্ছে পুর স্বাস্থ্য দফতর। অতীনবাবু জানান, মেয়র পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি তোলা হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এত দিন শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পতিত জমিতে, নির্মীয়মান বাড়ির জমা জলে মশার লার্ভা নিধনে কাজ করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। এ বার থেকে ঠিক হয়েচে, কোথায় জল জমা থাকছে, বাড়ি বা জমির মালিক তা পরিষ্কারে সহায়তা করছেন কি না— সবই জানানো হবে স্থানীয় কাউন্সিলরকে। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, অনেক কাউন্সিলর তাঁদের ওয়ার্ডের হাল না জেনেই অভিযোগ করে থাকেন, ডেঙ্গির উপদ্রব বাড়ছে। তাঁদেরকেও ডেঙ্গির জীবাণু নিধন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতেই এই ব্যবস্থা। যাতে তাঁরা দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ না পান। এরই পাশাপাশি পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীদের হাজিরা রিপোর্ট প্রতি দিন পুর ভবনে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গি নিয়ে শহর জুড়ে আতঙ্ক কমাতেই এই ব্যবস্থা বলে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy