Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
ধৃত দুই

প্রোমোটিং ‘মারবে’ কারখানাকে, ভয়ে ছিলেন ব্যবসায়ী

কারখানার চারদিকে প্রোমোটিং হচ্ছে। তার ‘থাবা’ এড়িয়ে আর কত দিন ব্যবসা করতে পারবেন, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। রবিবার রাতে নাগেরবাজারের সাতগাছিতে রবারের জিনিসের কারখানা থেকে হাত-পা বাঁধা দগ্ধ অবস্থায় মিলল সেই ব্যবসায়ী সজল সরকারের দেহ।

সজল সরকার

সজল সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৫ ০২:২০
Share: Save:

কারখানার চারদিকে প্রোমোটিং হচ্ছে। তার ‘থাবা’ এড়িয়ে আর কত দিন ব্যবসা করতে পারবেন, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। রবিবার রাতে নাগেরবাজারের সাতগাছিতে রবারের জিনিসের কারখানা থেকে হাত-পা বাঁধা দগ্ধ অবস্থায় মিলল সেই ব্যবসায়ী সজল সরকারের দেহ। এই ঘটনায় গ্রেফতার হলেন সজলবাবুর দীর্ঘ দিনের বন্ধু বরুণ দত্ত ও স্থানীয় প্রোমোটার সুভাষ চক্রবর্তী। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ওই প্রোমোটার বহু দিন ধরেই সজলবাবুকে হুমকি দিচ্ছিলেন। পুলিশের অনুমান, এর পিছনে প্রোমোটারদের ব়়ড় চক্র রয়েছে।

সজলবাবুর ছেলে অনুপম রবিবার রাতে দমদম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তবে নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল না তাঁদের। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ সোমবার ঘটনাস্থলে এসে বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, এটি খুন। ঘটনাস্থল থেকে ঠান্ডা পানীয়ের তিনটি বাক্স মিলেছে। হয়তো ওই পানীয়তে মাদক মেশানো ছিল।’’ যে ঘরে সজলবাবুর দেহ মিলেছে, সেখানকার বেশ কিছু আইনি নথিও পুড়ে গিয়েছে। মৃতের স্ত্রী জোনাকিদেবী জানান, জুন মাসে কারখানার অফিসঘরের বাইরে একটি গর্ত দিয়ে সিরিঞ্জের মাধ্যমে ঘরে কেরোসিন স্প্রে করে আগুন লাগানো হয়েছিল। তিন বছর আগেও এক বার আগুন লেগেছিল ওই কারখানায়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, কারখানার ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছিল। এক ব্যক্তি আগুন দেখে কারখানার জানলা ভেঙে ভিতরে মানুষের গোঙানি শুনতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে কারখানার গেট ও ওই ঘরের দরজা ভেঙে দড়ি দিয়ে শক্ত করে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সজলবাবুর দেহ উদ্ধার করে। জোনাকিদেবী জানান, বন্ধু বরুণ দত্তের ফোন পেয়েই রবিবার সন্ধ্যায় বেরোন তাঁর স্বামী। তাঁর মোবাইল বন্ধ থাকায় বাড়ির ল্যান্ডলাইনে ফোন এসেছিল। জোনাকিদেবী বলেন, ‘‘ফোনের কথা শুনে মনে হয়েছিল, কয়েক জনের আসার কথা ছিল। তবে আমার স্বামী জানিয়েছিলেন, ক্লাবে যাচ্ছেন।’’

পুলিশ জানায়, সজলবাবুর সাব-টেন্যান্সির চুক্তি খতিয়ে দেখা হবে। দমদমের এমএন ঘোষ রোডের যে ব্যক্তির থেকে সাব-লিজে কারখানা নিয়েছিলেন সজলবাবু, তাঁকেও জেরা করতে চাইছে পুলিশ। তিনি বর্তমানে উত্তরবঙ্গে। কলেজ স্ট্রিটের বাসিন্দা জমির আসল মালিকের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ।

এ দিকে, সোমবার দুপুরে সজলবাবুর বাড়িতে যান বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য ও বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। বিকেলে যান সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। আজ, মঙ্গলবার দমদম থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানান উত্তর ২৪ পরগনার কংগ্রেস সভাপতি তাপস মজুমদার। শমীকবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যে দুষ্কৃতী-রাজ কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে! রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিলেত গিয়েছেন বড় শিল্প আনার জন্য। এ দিকে, ছোট শিল্পের মালিকেরা এ রকম নির্মম ভাবে খুন হয়ে যাচ্ছেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE