Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

খালের হাল ফেরেনি, তবু সাজছে দুই পাড়

কুচকুচে কালো জল। দুর্গন্ধে ধারেকাছে যাওয়া যায় না। দু’পাড়ে স্তূপাকৃতি আবর্জনা। গজিয়ে ওঠা ঝুপড়ির বর্জ্য জমে প্রায় বুজে গিয়েছে খাল। জলের প্রবাহ নেই বললেই চলে।

বৈপরীত্য: খালের এমন হাল। তবু সেজে উঠছে দুই পাড়। ছবি: শৌভিক দে

বৈপরীত্য: খালের এমন হাল। তবু সেজে উঠছে দুই পাড়। ছবি: শৌভিক দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৯
Share: Save:

কুচকুচে কালো জল। দুর্গন্ধে ধারেকাছে যাওয়া যায় না। দু’পাড়ে স্তূপাকৃতি আবর্জনা। গজিয়ে ওঠা ঝুপড়ির বর্জ্য জমে প্রায় বুজে গিয়েছে খাল। জলের প্রবাহ নেই বললেই চলে। অথচ কোটি কোটি টাকা খরচ করে সেই খালেরই দুই ধারে বসেছে বাহারি আলো, ফোয়ারা। তৈরি হয়েছে হাঁটার সুদৃশ্য পথ।

উপরের ছবিটা সল্টলেকের ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের। যা ঘিরে রয়েছে ওই উপনগরীর ২, ৩, ৪ এবং ৫ নম্বর সেক্টরকে। স্বভাবতই সেখানকার বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, মূল খালের সংস্কার না করে দুই পাড় সাজিয়ে আখেরে লাভ কী? তাঁদের অভিযোগ, এর ফলে সৌন্দর্যায়নের মূল উদ্দেশ্যই নষ্ট হবে।

এর আগে কেষ্টপুর, বাগজোলা-সহ বিভিন্ন খাল নিয়েও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। প্রশাসনের একটি অংশের দাবি, গঙ্গা থেকে জল ছেড়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। ওই জল ছাড়ার ফলে কেষ্টপুর খালে জলের প্রবাহ বেড়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বদলায়নি ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের ছবিটা।

চিৎপুরের গজনবি কাট থেকে এক দিকে চলে গিয়েছে কেষ্টপুর খাল, অন্য দিকে বেলেঘাটা খাল। সেই বেলেঘাটা খালই ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল নাম নিয়ে সল্টলেকের মধ্য দিয়ে গিয়ে মিশেছে কেষ্টপুর খালে। ওই জায়গাটি ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে খালের দু’ধারে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন গাছ। কিন্তু, সেই সাজানোর পাশাপাশি দু’দিকেই গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য ঝুপড়ি ও অস্থায়ী দোকান।

মূল সমস্যার সমাধান না করে ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার মতো খালধার সাজানোর ভাবনা কেন?

প্রশাসনের একটি অংশের মতে, এই সমস্যার দু’টি দিক— কারিগরি এবং সামাজিক। কারিগরি সমস্যা মেটাতে যত টাকা দরকার, তা রাজ্য সরকারের পক্ষে বহন করা দুষ্কর। তাঁদের মতে, গঙ্গার সংস্কার না করে শুধু খাল সংস্কার করলে গঙ্গার জল খালে ঢোকার বদলে উল্টে ব্যাক-ফ্লো করবে। তাই আগে গঙ্গার আশু সংস্কার প্রয়োজন। অন্য দিকে, খালপাড়ে যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা ঝুপড়ি সরানোর আপাতত কোনও সম্ভাবনাই নেই। কারণ রাজ্য সরকারই জানিয়েছিল, পুনর্বাসন না করে ওই বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা হবে না।

ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সৌন্দর্যায়নের প্রয়োজন কোথায়?

ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল দেখভালের দায়িত্ব পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘কেন ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের এই অবস্থা, তা খতিয়ে দেখতে ইঞ্জিনিয়ারদের বলা হয়েছে। প্রয়োজনে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’ যদিও খালপাড় থেকে দখলদারদের সরানোর ক্ষেত্রে প্রশাসন কী করবে, তা নিয়ে নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Drainage System Gutter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE