ভাঙচুর হওয়া পুলিশের গাড়ি। শনিবার, রাজাবাজারে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
মিডিয়ার প্রতিনিধি দেখেই ব্যস্ততা বেড়ে গেলে বেলেঘাটার বাণী বিদ্যামন্দির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রের ভিতরে ভিড় করে থাকা তৃণমূলের কর্মীদের। এক যুবক সঙ্গে সঙ্গে বুথের বাইরের বারন্দায় গিয়ে চার-পাঁচ জন ছেলেকে নির্দেশ দিলেন, ‘‘এখন চলে যা। মিডিয়া এসেছে। মিনিট পনেরো পরে আসিস।’’ ঠিক মিনিট দশ। তার পরেই উসখুশ করতে শুরু করলেন বুথের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল-কর্মীরা। এক জন তো কিছুক্ষণ পরে এসে বলেই ফেললেন, ‘‘আপনারা কখন যাবেন বলুন তো?’’ তার পরে খানিকটা ইতস্তত করে বলেন, ‘‘বুঝতেই তো পারছেন। এখন সবচেয়ে ভাইটাল সময়।’’
মিডিয়াকে সরানোর একই চিত্র বড়বাজারের মাঙ্গলিক কমিউনিটি হলে। বুথের ভিতরে তখন ভিড় জমেছে। বেশির ভাগ যুবকদের হাতে শুধু ভোটার স্লিপ। কোথায় সচিত্র পরিচয়পত্র? উত্তর এল, ‘‘পকেটে আছে। যাকে দেখানোর কথা, তাকে দেখানো হবে। আপনার জানার দরকার কী?’’ আবার এক যুবক বললেন, ‘‘কী এত বুথের ভিতরে ঘোরাঘুরি করছেন? দেখছেন তো শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে।’’
আবার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাজা রামমোহন রায় সরণির উপরে ‘ক্যালকাটা অ্যাকাডেমি’ স্কুলের গেট আগলে দাঁড়িয়ে ছিলেন শুধু কলকাতা পুলিশের পাঁচ-ছ’জন কর্মী। বুথের ভিতরে ঢুকতেই আপত্তি করলেন এক পুলিশকর্মী। বলেন, ‘‘রাস্তাতেই তো বললাম, এখানে ৩২ শতাংশ ভোট হয়েছে। তা-ও আবার ভিতরে কেন এলেন? প্লিজ অন্য জায়গায় যান।’’ যদিও তাঁকে পাশ কাটিয়ে বেশ কয়েক জন যুবককে বিনা বাধায় বুথের ভিতর ঢুকতে-বেরোতে দেখা গেল।
শনিবার উত্তর কলকাতার সিঁথি, বেলগাছিয়া, পাইকপাড়া, টালা, শিয়ালদহ, সূর্য সেন স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট, রাজাবাজার, মানিকতলা, গিরিশ পার্ক, মুচিপাড়া, আমহার্স্ট স্ট্রিট-সহ বিভিন্ন এলাকাতেই শাসকদলকে তেমন ভাবে প্রতিরোধ করতে দেখা যায়নি বিরোধীদের। উত্তর কলকাতা জুড়ে তেমন ভাবে সিপিএম, বিজেপি কিংবা কংগ্রেসের ক্যাম্প অফিসও চোখে পড়েনি।
তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। বড়বাজার, রাজাবাজারে শাসকদলের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই বুথ দখলের অভিযোগ তুলে রুখে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপিকে। যেমন সকাল থেকেই বড়বাজারে
একটি বুথে ঘাঁটি আগলে বসে
থাকতে দেখা গিয়েছে বিজেপি প্রার্থী মিনাদেবী পুরোহিতকে।
বেলেঘাটা, বড়বাজার, রাজাবাজারের মতো কয়েকটি এলাকায় বোমাবাজি, ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ছাড়া তেমন কোনও বড় ঘটনা ঘটেনি উত্তর কলকাতা জুড়ে। বরং কিছু জায়গায় বেশ খোশ মেজাজে থাকতে দেখা গেল শাসক দলের প্রার্থীদের। এমনকী, কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মধ্য কলকাতার পরিচিত নেতা প্রদীপ ঘোষও তেমন তৎপর নন। বললেন, ‘‘এক বার একটু বেরোব। এ দিক-ও দিক ঘুরে চলে আসব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy