এলাকায় মশার দাপট এবং জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা— দুটোই যে তুলনায় বেড়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছে প্রশাসন। তবে তাদের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু, সল্টলেকে ফের জ্বরে এক জনের মৃত্যুর ঘটনায় বাসিন্দাদের অনেকেই এই ‘নিয়ন্ত্রণে’র দাবি মানতে পারছেন না। যা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে পুর প্রশাসনের। মৃতের নাম মিলন বন্দ্যোপাধ্যায় (৩৬)। হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন মিলনবাবু। তবে তাঁর জ্বরও হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জ্বর নিয়েই ভর্তি হন মিলন। এলাকায় অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত। এ পর্যন্ত বিধাননগরে জ্বরে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে এক বেসরকারি হাসপাতালে সল্টলেকের ইই ব্লকের বাসিন্দা মিলনবাবুর মৃত্যু হয়। ওই এলাকাতেই গত কয়েক বছরে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। বিশেষত, ডেঙ্গির। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বারবার করে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তাতে ঝোপজঙ্গল কিছু সাফ হয়েছে ঠিকই, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। কিন্তু কেন বারবার একই এলাকায় এমন পরিস্থিতি হচ্ছে, তার সদুত্তর নেই। এ বারেও ওই এলাকায় কয়েক জন জ্বরে আক্রান্ত।
পুর প্রশাসনের দাবি, জুলাই-অগস্ট পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশ কম ছিল। কিন্তু তার পরে পরপর ভারী বর্ষণের জেরে মশার দাপট আচমকা বেড়ে যায়। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালাচ্ছেন। মশার তেল ও ধোঁয়া ছড়ানোর পাশাপাশি ঝোপজঙ্গল, আবর্জনা সাফাইয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া, বাড়ি বাড়ি সচেতনতার প্রসারেও বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। ইই আবাসন এলাকা জুড়ে কেন মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুরসভা এমন দাবি করলেও ওই এলাকায় ফাঁকা জমিতে ঝোপজঙ্গল, ফেলে দেওয়া আবর্জনায় জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে।
পেশায় ব্যবসায়ী মিলনবাবুর মৃত্যুর পরে পরিবারের লোকজন কথা বলতে চাননি। তবে হাসপাতালসূত্রে খবর, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেই তাঁর রক্তে এনএস১ পরীক্ষার রিপোর্টে ডেঙ্গি পজিটিভ এসেছিল। জ্বরের পাশাপাশি অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতে সমস্যা ছিল মিলনবাবুর। তার জেরে শক-এ চলে গিয়েছিলেন তিনি।
ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল ও কেষ্টপুর খাল বরাবর বিভিন্ন ব্লক থেকেও জ্বরের খবর আসছে। মহিষবাথান ও রাজারহাট-গোপালপুরেও মশাবাহিত রোগ বেড়েছে। যদিও পুরসভা ইতিমধ্যেই সল্টলেক ও রাজারহাটের জন্য পৃথক কন্ট্রোল রুম তৈরি করেছে। কিন্তু বাসিন্দাদের কথায়, সব জায়গায় কাজের গতি এক রকম নয়। অনেক ক্ষেত্রে শিথিলতা রয়েছে।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় জানান, ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে হেতু তাঁর জ্বর হয়েছিল, তাই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ওই এলাকাতেই কেন বারবার এমন ঘটছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা খুব বেশি না হলেও জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দুই শতাধিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy